‘গণহত্যার চরম ঝুঁকি’তে রাখাইনে থেকে যাওয়া রোহিঙ্গারা: জাতিসংঘ

মিয়ানমারে এখনও রোহিঙ্গাদের জন্য পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন। তাদের আশঙ্কা রোহিঙ্গাদের ওপর আবারও গণহত্যার চরম ঝুঁকি রয়েছে। পরিস্থিতির উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানায় তারা।

 

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় সাত লাখের মতো মানুষ। সহিংসতা কবলিত রাখাইনের পরিস্থিতি অনুসন্ধানে ওই বছরের মার্চে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন গঠন করে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল। গত বছর ওই মিশনের প্রতিবেদনে ২০১৭ সালেরআগস্ট পরবর্তী সময়ে রাখাইনে মিয়ানমারের সেনা অভিযানকে গণহত্যা আখ্যা দেওয়া হয়।

 

ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা দায়ীদের বিচারে ও মিয়ানমারে মানবাধিকার নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়। দেশটিতে নিযুক্ত বিশেষ প্রতিনিধে ইয়াংঘি লি বলেন, সেনা প্রতিষ্ঠান ও কর্মকর্তাদের ওপর অবশ্যই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।

 

বুধবার বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, যারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরোধিতা করছেন সেসব আন্দোলনকারী, অ্যাক্টিভিস্ট ও সাংবাদিকদের  বিচার করছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।  আর এতে গণতন্ত্র বিনষ্ট হচ্ছে।

 

গত মাসে বিশেষ প্রতিনিধি জানিয়েছিলেন। রাখাইন ত্যাগ করার কারণে ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে মামলা করা হয়েছে। লি বলেন, অন্তত আটজন শিশুকে আটককেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে যার মধ্যে একজনের বয়স মাত্র পাঁচ বছর।

 

ইয়াংঘি লি বলেন, এই পরিস্থিতির অবসান প্রয়োজন। তাদের ওপর নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে। ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন পুরো পরিস্থিতি বিবেচনা করে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তোলার আহ্বান জানিয়েছে।

 

মঙ্গলবার মিশনের প্রধান মারজুকি দারুসম্যান বলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার শক্ত আলামাত পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, জেনোসাইড কনভেনশনের আওতায় পড়ে যাচ্ছে মিয়ানমার। সে অনুযায়ী গণহত্যার ব্যাপারে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

 

জাতিসংঘের মিশন জানায়, রাখাইনে ৬০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত রয়েছে। ইয়াংঘি লি বলেন, আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীরা রাখাইনে নিরাপদভাবে ফিরে আসতে পারবে না। এখনও সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

আরও সংবাদ