চীনের ওষুধ কারখানার খপ্পরে বিশ্বে অর্ধেকে নেমে আসবে গাধার সংখ্যা

ছবি: গার্ডিয়ানের

পরবর্তী বছর পাঁচেকের মধ্যে বিশ্বের গাধার সংখ্যা অর্ধেকেনেমে আসবে। চীনের ঐতিহ্যবাহী ওষুধের চাহিদা মেটাতে প্রতিবছর লাখ লাখ গাধাকে হত্যা করা হচ্ছে।

ব্রিটেনের বিখ্যাত গার্ডিয়ান পত্রিকার খবরে এমন তথ্য জানা গেছে।

ডানকি স্যাংচুয়ারির নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই প্রাণীটির চামড়া দিয়ে এজিওয়াও কারখানার ওষুধবানানো হচ্ছে। যেটা দেশটির কয়েক হাজার বছরের ঐতিহ্য।

জেলাটিনভিত্তিক চীনের এই ওষুধকেবলা হয় এজিওয়া। আর প্রতিবছর এই ওষুধেরচাহিদা মেটাতে দরকার পড়ে আটচল্লিশ লাখ গাধার চামড়া।

বর্তমান দুনিয়ায় চার কোটি চল্লিশ লাখ গাধা রয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে যেটা অর্ধেকে নেমে আসতে পারে বলে খবরে বলা হয়েছে।

২০০৭ সাল থেকে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে ২৮ শতাংশ, বতসোয়ানায় ৩৭ শতাংশ ও কাজাগিস্তানে ৫৩ শতাংশ গাধা কমে গেছে।

কেনিয়া ও ঘানায়ও চামড়া ব্যবসায়ীরা ব্যাপকহারে গাধা হত্যা করায় প্রাণীটির সংখ্যা কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জীবিকার জন্য প্রাণীদের ওপর নির্ভরশীল সম্প্রাদায়ের কাছ থেকে এসব গাধা চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়। দীর্ঘ যাত্রাপথে তাদের কোনো খাবার কিংবা পানি দেয়া হয় না। এতে ২০ শতাংশ গাধা যাত্রাপথেই মারা যায়।

নিয়ে যাওয়ার সময় কিংবা গাড়ি থেকে কান কিংবা লেজ টেনে নিচে নামানো হয়। এতে প্রাণীটির পা ও খুর ভেঙে যেতে দেখা যায়।

ডানকি স্যাংচুয়ারির গবেষণা বিষয়ক পরিচালক ফেইথ বারডেন বলেন, যেখানে বাণিজ্যের যখন গাধাকে হত্যা করা হয়, সেখানে প্রাণী অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ভয়াবহ। আমরা আগে যেমনটা জানতাম, ঘটনা তার চেয়েও মারাত্মক।

তিনি দাবি করেন, বিশ্বব্যাপী গাধার চাহিদা এতই বেশি যে মাদি কিংবা শাবক গাধাও চামড়া ব্যবসায়ীদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। অসুস্থ আহত গাধাকেও জবাই করার জন্য কসাইখানায় জড়ো করা হয়।

প্রাণীটি অসুস্থ কিংবা আহত হলেও তাদের চামড়া সংগ্রহে তাতে কোনো প্রভাব পড়ে না। এতে গাধাকে নিয়ে যাওয়ার সময় দীর্ঘ পথে তাদের ওপর কোনো সদাচরণ করা হবে, এমন কোনো প্রয়োজনীয়তা বোধ করছেন না ব্যবসায়ীরা।

ইজিওয়ায়ের মূল উপকরণ হচ্ছে জেলাটিন। যেটা গাধার চামড়া দিয়ে বানানো হয়। গত কয়েক হাজার বছর ধরে চীনের ওষুধবানাতে এসব উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ওষুধমানুষের রক্তস্বল্পতা কমিয়ে আনে ও রক্তসঞ্চালনে সহায়তা করে।

১৯৯২ সাল থেকে চীনে গাধার সংখ্যা ৭৬ শতাংশ কমে গেছে। এতে নিজেদের অভাব পূরণে বিভিন্ন দেশ থেকে গাধা আমদানি করা হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শক্তিকে

আরও সংবাদ