খাবারের জন্য ভিক্ষা করা বাবার সন্তান বার্সেলোনার বিস্ময় বালক ফাতি
স্পোর্টস ডেস্ক:
বয়স: ১৬ বছর ৩১৮দিন। এই বয়সেই সিনিয়র দলের হয়ে চোখ ধাঁধানো ফুটবল উপহার দিলেন আনসুমানে ফাতি।শনিবারের ওই ম্যাচে তিনি ঘরের মাঠে সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে ভেঙেছেন ২০০৯ সালে গড়া মার্ক মুনিয়াসার রেকর্ড। চোটের জন্য ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে মাঠে না নামা মেসি ক্যাম্প ন্যুর গ্যালারিতে বসে দেখেন উত্তরসূরির নাটকীয় উত্থান। আনসুর উত্থান অনেকটা মেসির মতোই নাটকীয়। তবে তাদের শৈশব এত সুখের ছিল না। অনেক সংগ্রাম করে আসতে হয়েছে এই জায়গায়। এখন তিনি বার্সেলোনার উদীয়মান তারকা।
পশ্চিম আফ্রিকার গিনেয়া বিসাওয়ে জন্ম হলেও ২০০৮ সালে স্পেনের সেভিয়ায় চলে গিয়েছিল ফাতির পরিবার। বয়স তখন মাত্র ৬। কিন্তু নতুন দেশে চাকরি কে দেবে আনসুর বাবা ফরি ফাতিকে? বাধ্য হয়ে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে সন্তানদের জন্য খাবার ভিক্ষা করতেন। এক পর্যায়ে শহরের মেয়র তাকে গাড়ি চালক হিসেবে নিয়োগ করেন। এতে পরিস্থিতি কিছুটা বদলায়। চরম আর্থিক সঙ্কটেও ছেলেদের ফুটবল খেলতে বাধা দেননি ফরি ফাতি। কারণ তিনি নিজেও যে ফুটবলার ছিলেন।
দুই ছেলে বারিমা ও মিগুয়েলকে ফরি ভর্তি করে দেন স্থানীয় ক্লাব এরেরা এফসিতে। আনসুর ফুটবল জীবনও শুরু একই ক্লাব থেকেই। সেখান থেকেই যোগ দেন লা মাসিয়ায়। মেসি লা মাসিয়ায় যোগ দিয়েছিলেন ১৩ বছর বয়সে। আনসু যোগ দেন ১০ বছর বয়সে। আর্জেন্টিনা অধিনায়কের মতোই দ্রুত ঢুকে পড়েন সিনিয়র দলে। ২০১৯-২০ মৌসুমে আনসুকে ৩ বছরের জন্য সিনিয়র দলে সাক্ষর করায় বার্সেলোনা। লা লিগায় রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে অভিষেক হয় তার। ক্যাম্প ন্যু-তে সে দিন বলে পা ছোঁয়ানোর আগেই রেকর্ড বুকে নাম উঠে গিয়েছিল বিস্ময় বালকের।
মেসি বিহীন বার্সা ঘরের মাঠে ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে কী করবে তা নিয়ে আশঙ্কা ছিল সমর্থকদের মধ্যে। কিন্তু ম্যাচের দুই মিনিটের মধ্যেই ছবিটা বদলে দেন আনসু। তার পায়ের প্রথম স্পর্শেই বল জালে জড়িয়ে যায়। গ্যালারিতে বসে থাকা মেসিও উচ্ছ্বাসে লাফিয়ে উঠেছিলেন। গত সপ্তাহেই আর্জেন্টিনা অধিনায়ক সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন, যাতে দেখা যায় আনসুকে বুকে জড়িয়ে ধরেছেন মেসি। বার্সেলোনার প্রশংসা করে মোরেনো বলেছেন, ‘এই সাফল্য বার্সেলোনার। ওরাই লা মাসিয়া থেকে আনসুকে তুলে এনেছে।’