দুই দশকেও সংস্কার হয়নি দোয়ারা-বোগলা সড়ক, ভোগান্তিতে দুই লাখ মানুষ

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা:
দোয়ারাবাজার উপজেলার সীমান্তবর্তী চার ইউনিয়নের প্রায় দুই লাখ মানুষের যাতায়াত সড়কে খানাখন্দে ভরপুর থাকায় প্রায় দুই দশক ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ১৫ কিলোমিটার সড়কের বেশিরভাগ অংশই ভাঙাচোরা। সড়কটি যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কোনো-কোনো জায়গায় হয়েছে বড় বড় গর্ত। বৃষ্টির পানিতে গর্ত ভরাট থাকলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।

উপজেলার সুরমা, লক্ষীপুর, ভোগলা ও বাংলাবাজার ইউনিয়নের সংযোগ রক্ষাকারী সড়ক এটি। এই চার ইউনিয়নের দুই লাখ মানুষ এই সড়কেই উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন। বিকল্প সড়ক না থাকায় ভোগান্তি সহ্য করে এই সড়ক দিয়েই শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ সকল শ্রেণিপেশার মানুষ যাতায়াত করেন। এই সড়ক দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তবে সিএনজি, লেগুনা ও পিকআপ চলাচল করছে। সড়কের বেহাল দশার কারণে কোন যানবাহনই এ পথ দিয়ে যেতে চায় না। গেলে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হয়।

উপজেলা এলজিইডি’র একজন প্রকৌশলী জানান, দোয়ারা- বোগলা সড়কের কাজ হয় ২০০০ সালে। এই ১৯ বছরে সড়কের মহব্বতপুর থেকে কান্দাগাঁও পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার আরসিসি সড়ক সংস্কার করা হয়। এছাড়া সড়কে আর কোন কাজ হয়নি।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, বর্তমান সরকারের সময়কালে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিবর্তন হলেও দোয়ারাবাজার উপজেলার এই সড়কের বেহাল অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। সড়ক নির্মাণের পর দুই দশক পার হলেও এর কোন সংস্কার হয়নি। ভাঙা- চোড়া সড়ক ভাঙতে-ভাঙতে চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে ওঠেছে।

বিকল্প পথ না থাকায় জীবনের ঝুঁঁকি নিয়েই এই সড়ক দিয়ে চলাচল করছে চার ইউনিয়নের মানুষ। সড়ক ভাঙা থাকায় অতিরিক্ত ভাড়াও গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। অনেক সময় যাত্রীবাহি গাড়ি চলাচলও করে না। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত টাকায় ভাড়া গাড়ি নিয়ে গন্তব্যে ফিরতে হয় যাত্রীদের।

জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিনই সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিসহ রাজনৈতিক নেতারা যাওয়া-আসা করে থাকেন। কিন্তু সড়কের বেহাল দশার চিত্র কারোরই নজর কাড়ছে না। স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল ইসলাম নুরু বলেন, অসুস্থ বা বয়স্ক কারও এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করার উপায় নেই।

এই সড়কে চলাচলকারী পিকআপ চালক আরজ আলী জানান, এই সড়কে পিকআপ নিয়ে গেলে যতটাকা ভাড়া পাওয়া যায়, তার চেয়ে গাড়ি মেরামতে খরচ বেশি লাগে। সিএনজি চালক রওশন আলী, আব্দুর রহিম বলেন, এই সড়ক দিয়ে গাড়ি চালানো খুবই কষ্টকর। সড়কের বেহাল দশার কারণে যাত্রীরাও গাড়িতে ওঠেন না।

দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রকৌশলী হরজিৎ সরকার বলেন, ‘ দোয়ারা-বোগলা’র ১৫ কিলোমিটার সড়কের অধিকাংশ অংশেরই বেহাল দশা। আমরা এই সড়ক সংস্কার করার জন্য ৫ টি ভাগে প্রাক্কলন তৈরি করছি। স্থানীয় সংসদ সদস্য মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি বলেছেন শিঘ্রই এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলীর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলবেন।

স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুহিবুর রহমান মানিক বলেন, ‘বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে দোয়ারাবাজারের প্রতিটি সড়ক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়কের উন্নয়ন কাজের দরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। শুস্কমৌসুমে সড়কের কাজ হবে, এলাকাবাসীর দুর্ভোগেরও অবসান হবে।

আরও সংবাদ