মৌলভীবাজারে বিপ্লবী লীলা নাগের বাড়ি সংরক্ষণের জন্য দাবিতে সমাবেশ
স্বপন দেব,মৌলভীবাজার:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী, উপমহাদেশের নারী জাগরণের পথিকৃত ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেত্রী বিপ্লবী লীলা নাগের ১১৯তম জন্ম দিনে মৌলভীবাজারের রাজনগরের পাঁচগাঁও-এ লীলা নাগের পৈতৃক বাড়ি সংরক্ষণ করে তাঁর স্মৃতিরক্ষার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য মৌলভীবাজারে দাবী সমাবেশ করেছে প্রগতি লেখক সংঘ ও লীলা নাগ স্মৃতি পরিষদ।
বুধবার দুপুরে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত দাবী সমাবেশে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ গ্রহণ করেন। লীলা নাগ স্মৃতি পরিষদের সভাপতি কবি ইন্দ্রজিৎ দেবের সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আহমদ আফরোজের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সংস্কৃতজন ডা. এম এ আহাদ, সিপিবির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য জহর লাল দত্ত, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপার সমন্বয়ক আ.স.ম সালেহ সোহেল, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন মৌলভীবাজার জেলা সংসদের সভাপতি শুবিনয় শুভ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সভাপতি রেহনুমা রুবাইয়াত।
এসময় বক্তারা বলেন, রাজনগরের পাঁচগাঁও গ্রামে লীলা নাগের ঐতিহাসিক বাড়িটি বর্তমানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অন্যতম অভিযুক্ত প্রয়াত আলাউদ্দিন চৌধুরীর পরিবারের দখলে রয়েছে। বাড়িটি উদ্ধার ও সংরক্ষণ এবং এই বিপ্লবী মহিয়সীর অবদান আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে বাড়িটিকে জাদুঘর ও বিদ্যাপিঠ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এজন্য সরকার ও সচেতন মহলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে স্বারকলিপি প্রদান করেন প্রগতি লেখক সংঘ ও লীলা নাগ স্মৃতি পরিষদের প্রতিনিধিরা।
উল্লেখ্য ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেত্রী বিপ্লবী লীলা নাগ অখন্ড ভারতবর্ষে নারীজাগরণের আলোকবর্তিকা হাতে নিয়ে ১৯০০ সালের ২ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা গিরিশচন্দ্র নাগ উপনিবেশিক ভারতের আসামের গোয়ালপাড়া মহকুমার ডেপুটি কালেক্টর এবং স্বদেশী আন্দোলনের নেতা ছিলেন। লীলা নাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী এবং উপমহাদেশের প্রথম মহিলা সম্পাদক হিসেবে লীলা নাগ ‘জয়শ্রী’ নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করেন। এ পত্রিকার মাধ্যমে তিনি নারী জাগরণ ও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অনবদ্য ভূমিকা রাখেন। সমাজসংস্কারক, সাংবাদিক, বিপ্লবী লীলা নাগের পরিবারও ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামে অনবদ্য ভূমিকা রাখে। লীলা নাগের পাঁচগাও-এর জন্মভিটা থেকে অনেকে ব্রিটিিেশরাধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন। উপনিবেশিক বাংলায় বহু সামাজিক সংগঠন, মহিলা সমিতি এবং স্কুল প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি তিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় জড়িত ছিলেন এবং নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোসের সাথে তিনি কাজ করেছেন। ১৯৭০ সালের ১১ জুন তিনি কলকাতায় মারা যান।