সম্রাটের একটাই নেশা জুয়া খেলা : জানালেন স্ত্রী শারমিন
আজ রোববার ভোরে গ্রেপ্তারের পর সম্রাটকে নিয়ে অভিযান করছে র্যাব। কাকরাইলের ভুঁইয়া ট্রেড সেন্টারে অভিযান শুরু হয়। এরপর মহাখালীতে সম্রাটের বাসায়, শান্তিনগরে ভাইয়ের বাসায়ও অভিযান চালায় র্যাব।
মহাখালীর বাসায় থাকেন সম্রাটের স্ত্রী শারমিন সম্রাট চৌধুরী। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর শারমিনকে বিয়ে করেন সম্রাট। সেটাও ১৯ বছর আগের কথা।
ওই বাসায় অভিযানের সময় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন শারমিন। তিনি বলেন, তাঁর স্বামী ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট সব সময়ই সম্রাটের মতোই ছিলেন। তাঁর একমাত্র নেশা ছিল জুয়া খেলা। অন্য কোনো নেশা ছিল না। সিঙ্গাপুরে তিনি জুয়া বা ক্যাসিনো খেলতে যেতেন। বাংলাদেশে কীভাবে সম্রাট ক্যাসিনোর সঙ্গে যুক্ত হলেন তা তিনি (শারমিন) জানেন না।
স্ত্রী শারমিন বলেন, সম্রাটের বাড়ি-গাড়ির প্রতি কোনো নেশা ছিল না। মহাখালীর বাড়ি ছাড়া আর কোনো বাড়ি নেই। বাড্ডায় তার আগের স্ত্রী থাকেন। সম্রাট থাকেন কাকরাইলে। গত দুই বছর মহাখালীর বাসায় তিনি যেতেন না। কেননা সম্রাটের ওপেন হার্ট হয়েছিল। এ কারণে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে পারতেন না।
শারমিন বলেন, সম্রাট সবার সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করতেন। সংগঠনের ছেলেদের সঙ্গে থাকতে পছন্দ করছেন। মানুষকে সাহায্য–সহযোগিতা করতেন।
জানা গেছে ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) যুবলীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার কিছুদিন পর থেকে আর নিজের বাসায় যাননি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাট। কাকরাইলের ভূঁইয়া ম্যানশনের আট তলা দখলে নিয়ে সেখানেই থাকেন। মাসের শুরুতে স্ত্রী শারমিন চৌধুরী অফিসে গিয়ে মাস খরচার টাকাটা নিয়ে আসেন। তাঁকে উদ্ধৃত করে একটি সূত্র জানায়, সম্রাট নিয়মিত জুয়া খেলতে সিঙ্গাপুরে যান।
টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজির বাইরেও ভার্চুয়াল জগতে সম্রাটের ব্যক্তিগত বেশ কিছু ছবি নিয়ে আলোচনা আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে একটি জন্মদিনের অনুষ্ঠানে তোলা ছবি নিয়ে। ওই ছবিতে সম্রাটকে তাঁর বন্ধুবান্ধবসহ হাসিমুখে পোজ দিতে দেখা যাচ্ছে। সম্রাটের ঘনিষ্ঠ কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, ছবিটি ২০১৭ সালের, বান্ধবী সিন্ডলিংয়ের জন্মদিনে। অনুষ্ঠানস্থল, মালয়েশিয়ার যহুর বারুতে সিন্ডলিংয়ের বাসা। সেবারই বান্ধবীর জন্মদিন উদ্যাপনে সম্রাট দেড় কোটি টাকা দিয়ে একটি প্রমোদ তরি ভাড়া নিয়েছিলেন। সিন্ডলিংকে একটি বিলাসবহুল গাড়িও উপহার দিয়েছিলেন তিনি।
সম্রাট সম্প্রতি সিনেমা পরিচালনায় নেমেছেন। বছরখানেক আগে সম্রাট ‘দেশবাংলা মাল্টি মিডিয়া’ নামে সিনেমা বানানোর প্রতিষ্ঠান খোলেন। এই হাউস থেকে একটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। আরেকটি সিনেমার শুটিং চলছে। সিনেমার কাজ দেখাশোনা করেন তাঁর সহযোগী আরমান।
সম্রাটের বাড়ি ফেনীর পরশুরামে। বড় হয়েছেন ঢাকায়। বাবা ফয়েজ চৌধুরী রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে (রাজউক) চাকরি করতেন। আশির দশকের শেষ দিকে ছাত্রলীগে যোগ দেন। ছিলেন ৫৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।