রাজকীয় আয়োজনে ওসমানীনগর থানায় ওসি যোগদানের বর্ষপুতি পালন
রাজকীয় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ওসি এসএম আল মামুনের ওসমানীনগর থানায় যোগদানের বর্ষপূর্তি পালন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে ওসমানীনগর থানা পুলিশের উদ্যোগে এই কর্মসূচী পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ওসি এসএম আল মামুনসহ বিভিন্ন পুলিশ কর্মকর্তাগণের পরিবার ও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ শতাধিক লোক উপস্থিত ছিলেন বলে জানা যায়। থানা কম্পাউন্ডের ভিতরে সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে গভীর রাত পর্যন্ত চলে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের শুরুতে শেরওয়ানি পরে বরের বেশে এসে কেক কাটেন ওসি আল মামুন। অনুষ্ঠানে নামি দামী শিল্পীরা পারফরমেন্স করেন। নৈশভোজে মাছ, মাংসসহ অনেক ধরণের খাবার পরিবেশন করা হয়। কারো চাকুরীতে যোগদানের বর্ষপুর্তীতে ওসমানীনগর থানায় এর আগে কখনো এ ধরণের অনুষ্ঠান হতে দেখা যায়নি। ফেসবুকে এই অনুষ্ঠানের লাইভ ভিডিওসহ স্থির চিত্র ছড়িয়ে পড়ার পর এলাকা জুড়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। অনেকে ফেসবুকে বিরূপ মন্তব্যও করেছেন।
উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি Igbal Ahmed তার ফেসবুক আইডিতে অনুষ্ঠানের ছবি সম্বলিত একটি লেখা পোস্ট করেন। তার পোস্টে ওসির শেরোওয়ানী পরিহিত ছবি দেখে suzzal fx নামের আইডি থেকে মন্তব্য করা হয়, ‘আমি মনে করছি ওসি সাহেবের বিবাহ বার্ষিকী’। Kawsar Ahmed নামের একজন লিখেন, ‘এ কেমন কাজ এই বিনোদন ইনি প্রথম আবিস্কার করলেন??? আগের জন গানের মধ্যে হাবো ডুবু খাইতু ইনি শুরু করলেন আরও কিচু দেখার অপেক্ষায় রইলাম, আর এদের মুখে এসব কেনো এদেরকে ভালো করে সবাই চিনে, থানা কি এসব করার স্থান, Rumman Ahmed লিখেন, ‘ওসি সাহেবের বিয়ে নাকি প্রতম ভাবলাম দামান দেড় মতন লাগের ওসি সাহেব কে। তার পর সব বুঝতে পারলাম’। Shamsul Islam নামের একজন লিখেছেন, ‘মনে হয় বেচারার আয় ইনকাম ভালা, তাই থানা কমপ্লেক্সে এর ভিতরে শখানেক মানুষকে আপ্যায়ন করে ঝমকালো অনুষ্টান করেছেন।’ Shah Abdur Rob তার আইডি পোস্ট দেন ‘কামাও টাকা করো ফুর্তি থানায় করো বর্ষপুর্তি খেয়েদেয়ে করো মাস্তি উপড়ের কেউ দিবে না শাস্তি উপড় নিচে আছে তো দোস্তি’।
ওসমানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান চৌধুরী নাজলু বলেন, ওসি সাহেবের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক দাওয়াত পেয়ে সেখানে গিয়েছিলাম। দাওয়াত খেয়ে চলে এসেছি। ওসির বর্ষপূর্তিতে এরকম অনুষ্ঠান আগে কখনো দেখিনি।
ওসমানীনগর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আনা মিয়া বলেন, দাওয়াত পেয়ে অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখি ওসির বর্ষপূর্তী উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য আয়োজন করা হয়েছে। আমি দাওয়াত খেয়ে চলে এসেছি।
এ ব্যাপারে ওসমানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদাল মিয়া বলেন, খাবার দাওয়াত পেয়ে থানায় গিয়ে দেখি এ আয়োজন।
জেলা পরিষদ সদস্য আশিক মিয়া বলেন, থানায় এ ধরণের অনুষ্ঠান আমি প্রথম শোনলাম। গান বাজনার আয়োজন না করে গরিবদের খাওয়ালে ভালো লাগতো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার বলেন, কর্মস্থলে যোগদানের বর্ষপুর্তিতে এ ধরণের অনুষ্ঠান আয়োজনের কোন নিয়ম নেই। এ বিষয়ে আমি জ্ঞাত নই। আমাকে কেউ কিছু বলেনি।
সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি কামরুল হাসান বিপিএম (বার) বলেন, সিলেট রেঞ্জে যোগদানের আমারওতো প্রায় তিন বছর হয়ে গেলো। কই, কখনো তো এ ধরণের অনুষ্ঠান করতে দেইনি। ওসি যোগদানের একবছর পুর্তীতে ওসমানীনগর থানায় এ ধরণের আয়োজনের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখবো।