সত্য বলায় মেননকে ধন্যবাদ : ড. কামাল
‘গত নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি’ বলে মন্তব্য করায় ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘ আমি বারবার বলে আসছি, এ পর্যন্ত একজনও পাইনি যে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোট দিয়েছিল। দেরিতে হলেও মেনন বলেছেন। আমি তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
রবিবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
উল্লেখ্য, শনিবার (১৯ অক্টোবর) বরিশালে এক অনুষ্ঠানে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর কোনও নির্বাচন হয়নি। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, ওই নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। এমনকি পরবর্তীতে উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ভোট দিতে পারেনি দেশের মানুষ।’
দেশে গণতন্ত্র থাকলে মিটিং-জনসভা করার অধিকার থাকতো উল্লেখ করে কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি এখনও পাইনি। দাবি জানাচ্ছি, অনুমতি দ্রুত দেওয়া হোক। কেননা, এটা কোনও দয়ার ব্যাপার না; সাংবিধানিক অধিকার। সংগঠন করার, ঘোরাফেরার, সমাবেশ করার ও সমাবেশে মুক্তভাবে বক্তব্য রাখার অধিকার সংবিধানে স্পষ্টভাবে লেখা আছে। রক্তের বিনিময়ে এই সংবিধান পেয়েছি।’
আগামী ২২ অক্টোবর জনসভার অনুমতি দ্রুত দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ড. কামাল বলেন, ‘২১ তারিখ রাতে অনুমতি দিলে ২২ তারিখে সমাবেশ করা কঠিন। ২০ তারিখ হয়ে গেছে, অনেক দেরি হয়ে গেছে। আমরা জনগণের কথা, ঐকমত্যের কথা তুলে ধরবো। এখানে কোনও সংঘাত-সংঘর্ষ বা বিরোধের ব্যাপার নেই।’
এ সময় দেশ ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে আছে মন্তব্য করে জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর বর বলেন, ‘সরকার শুধু সংবিধান নয়, কোনও বিধানই মানছে না। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কারাগারে। পুরো জাতি আজ উৎকণ্ঠিত। যেকোনও সময় একটা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তার একটি হাত অবশ হয়ে গেছে, খেতে পারেন না। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাবো; তাকে দেখতে যেতে চাই।’
আ স ম রব বলেন, ‘আমাদের নেতা (ড. কামাল) বলেছেন, পাকিস্তান, ব্রিটিশ আমলের আইনও এই সরকারের আমলে বলবৎ আছে। বিশেষ ক্ষমতা আইন বলবৎ আছে। নাগরিক অধিকার, ফান্ডামেন্টাল রাইট বলতে যেটা বোঝায়, এই সরকার দিচ্ছে না। এখন জনগণের সামনে একটাই পথ আছে, তাদের অধিকার যদি না দেওয়া হয়; আমাদের নেতার কথা অনুযায়ী আমরা তা আদায় করবো।’
জেএসডি সভাপতি বলেন, ‘যারা জুয়া-দুর্নীতির বিরুদ্ধে অপারেশন চালাচ্ছে, তারা তো চুনোপুঁটি ধরছে। রাঘব বোয়ালরা কোথায়? তাদের নাম প্রকাশ করেন। সম্রাট বলেছে, আমি একা কেন, বাকিরা কোথায়।’
ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যর আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, সুব্রত চৌধুরী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।