অযোধ্যায় মসজিদ তৈরির জন্য বিকল্প জমি কোথায় দেওয়া হবে, চলছে জল্পনা
মসজিদ নির্মাণের জন্য সুপ্রিমকোর্ট নির্দেশিত ৫ একর জমি অযোধ্যায় ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ জমির ধারে-কাছে নাও দেওয়া হতে পারে। এর বদলে জমি দেওয়া হতে পারে সরযু নদীর অপর পাড়ের কোনো জায়গায়।
সুপ্রিমকোর্ট শনিবার মসজিদ নির্মাণের জন্য সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে ৫ একর জমি দান করতে নির্দেশ দিয়েছে। তবে অযোধ্যা শহর কর্তৃপক্ষ বলছে, অযোধ্যা ঘনবসতিপূর্ণ একটি শহর। এখানে এত বিশাল আকারের একটা খালি জমি পাওয়া কঠিন। ফলে তাদেরকে যে জমি বরাদ্দ দেওয়া হবে তা ওই বাবরি মসজিদের স্থান থেকে দৃষ্টিসীমার মধ্যে না-ও হতে পারে।
তবে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড জানিয়েছে, ওই জমি নেওয়া বা না নেওয়ার বিষয়ে আগামী ২৬ নভেম্বর সিদ্ধান্ত নেবেন তারা। সরযুর দক্ষিণ পাড়ে অযোধ্যা জেলা অবস্থিত। নদীর অপর পাড়ে নিরিয়া ও নবাবগঞ্জ জেলা।শীর্ষ আদালত রায়ে বলেছেন, অযোধ্যায় একটি অভিজাত বা সদর এলাকায় মুসলিমদের জন্য জমি দিতে। তবে আদালত সুনির্দিষ্ট কোনো স্থানের নাম উল্লেখ করেননি।একটি সূত্র বলছে, ফলে অযোধ্যা-ফয়জাবাদ রোডের পাশে কোনো স্থানে এই জমি বরাদ্দ করার সম্ভাবনা আছে। এমনটাও জানা যাচ্ছে, ওই মসজিদটি নির্মাণ করা হতে পারে শাহজানওয়া গ্রামে। এই গ্রামেই রয়েছে সম্রাট বাবরের কমান্ডার মীর বাকির সমাধি। ওই গ্রামটি ১৫ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের বৃত্তের মধ্যে।
আদালত আরও বলেছেন, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের সহযোগিতায় বিকল্প স্থানেও জমি দেখা যেতে পারে। কিন্তু অযোধ্যার ‘মন্দির ক্যাম্প’ নামে পরিচিত ধর্মীয় গোষ্ঠী বলে আসছে যে, রাম-জন্মভূমির ১১৫ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো মসজিদ নির্মাণ করা যাবে না।
বাবরি মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণে সুপ্রিমকোর্টের রায়ে ভারতের মুসলমানদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রায় মেনে নেয়ার কথা বললেও এ নিয়ে নিজেদের অসন্তোষ জানিয়েছেন তারা।
রায়ে এটি স্পষ্ট, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনায় মুসলমানদের জন্য আইনি সহায়তা খুবই সীমিত। স্বাভাবিকভাবেই সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করবে না তারা।
সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের সভাপতি জাফর ফারুকী বলেছেন, ওই জমির বিষয়ে নানা ধরনের মতামত পাচ্ছেন তিনি। আগামী ২৬ নভেম্বর বোর্ডের সাধারণ সভার বৈঠক হবে। সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ অনুসারে পাঁচ একর জমি নেয়া হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বৈঠকে। অযোধ্যা মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের কর্পোরেটর হাজী আসাদ আহমদ বলেন, বাবরি মসজিদের বিনিময়ে আমরা কোনো জমি চাই না। যদি আদালত বা সরকার মসজিদের জন্য জমি দিতে চায় তাহলে আমাদেরকে ৬৭ একর এলাকা অ্যাকুয়ার করতে দিতে হবে, অন্যথায় আমরা কোনো অনুদান চাই না।