করোনায় আক্রান্ত চাঁদপুরের তিন চিকিৎসককে ঢাকায় স্থানান্তর
চাঁদপুরে করোনাভাইরাসের চিকিৎসা দিতে গিয়ে এবার সংক্রমিত হয়েছেন চিকিৎসক। এমন পরিস্থিতিতে ওই চিকিৎসকসহ তিনজনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
রোববার (১২ এপ্রিল) দুপুরে জেলার মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার এবং একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরো দুজন রোগীকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
চাঁদপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. সাখাওয়াত উল্লাহ জানান, মতলব উত্তরে চিকিৎসাধীন দু’জন পাশের জেলা নারায়ণগঞ্জ থেকে সর্দি, জ্বর ও কাশি নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরেন। তাদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার নিজেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। আইইডিসিআর থেকে এই তিনজনের করোনা পজিটিভ আসায় উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত তাদের ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে, চাঁদপুর সদরের লক্ষ্মীপুর গ্রামে নতুন করে আরেক করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মেলেছে। ৪০ বছর বয়সী এই রোগী নারায়ণগঞ্জে ল্যাবএইড নামে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কর্মরত ছিলেন। সেখান থেকে আক্রান্ত হয়ে বাড়ি ফিরেন তিনি।
চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কানিজ ফাতেমা জানান, আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়ি অবরুদ্ধ রাখা হয়েছে। ওই বাড়ির চারপাশে লাল পতাকা টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সাজেদা বেগম পলিন বলেন, করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির স্ত্রী মাঠ পর্যায়ের একজন স্বাস্থ্যকর্মী। তাই সংক্রমণ যেনো ছড়াতে না পারে, এর জন্য এই পরিবারের সবাইকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে, নৌ-পথে নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের জেলার মানুষজনদের চাঁদপুরে প্রবেশে বাধা দিচ্ছে নৌ-পুলিশ। একাধিক নৌযান নিয়ে নৌ-পুলিশকে মেঘনা নদীতে টহল দিতে দেখা গেছে। এসময় ঝুঁকিপূর্ণ অন্য জেলা থেকে চাঁদপুরে অনেকের আসার চেষ্টাকে প্রতিহত করে নৌপুলিশের সদস্যরা।
নৌপুলিশের চাঁদপুর অঞ্চলের প্রধান পুলিশ সুপার জামশের আলী জানান, রাজধানী ঢাকা এবং পাশের জেলা থেকে কেউ যেনো চাঁদপুরে প্রবেশ করতে না পারে এর জন্য নদীতে টহল জোরদার করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নৌ-পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতের আধারে এখনো অনেকেই নারায়ণগঞ্জসহ অন্যান্য জেলা থেকে চাঁদপুরে ঢুকে যাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে এসব জেলা থেকে চাঁদপুরে আসা প্রায় ৯০০ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণরোধে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে গোটা চাঁদপুর জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এরমধ্যে গত শনিবার নারায়ণগঞ্জ থেকে চাঁদপুর সদরে শ্বশুরবাড়িতে আসা করোনা আক্রান্ত একজন মারা যান। ওই দিন রাতেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম মেনে আক্রান্ত ব্যক্তির মরদেহ দাফন করা হয়। এই ঘটনার পর তার বাড়িটি অবরুদ্ধ ঘোষণা করে উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ।
এশিয়াবিডি/ ডেস্ক/ মুবিন