ত্রাণ আত্মসাৎকারীর বিচার হবে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে
করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন ও দরিদ্রদের জন্য সরকারের বরাদ্দ ত্রাণ সম্প্রতি লুট করেছেন বেশ কিছু জনপ্রতিনিধি। এতে কিছুটা হলেও বিব্রত সরকার। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে কঠোর হুঁশিয়ারিসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সরকারের একাধিক মন্ত্রী। পাশাপাশি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কয়েকজন জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে। এছাড়াও ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে ফৌজাদারি মামলাসহ মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিচারের ঘোষণা করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বরগুনা, বগুড়া, নাটোর, জয়পুরহাট, যশোর, ঝিকরগাছা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, সিলেট, নওগাঁ, শেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, নেত্রকোনা, সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহসহ বেশকিছু জেলায় ত্রাণ চুরির অভিযোগ উঠেছে।
ত্রাণ চুরির ঘটনায় জড়িতদের বিষয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ত্রাণ লুণ্ঠনকারীদের বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কঠোর অবস্থান আগে থেকেই আছে। মন্ত্রীর নির্দেশ অভিযুক্ত জনপ্রতিনিধি যেই হোক না কেন, কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। ত্রাণ লুণ্ঠনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে। প্রয়োজনে বরখাস্ত ও ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হবে। প্রমাণ পাওয়ায় তিনজন জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ত্রাণ চুরি কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না, স্পষ্টভাবে একটা কথা বলতে চাই, ত্রাণ বিতরণে কোনোরূপ অনিয়ম সহ্য করা হবে না। ত্রাণ নিয়ে যারাই ছিনিমিনি খেলবে, তারা যেই হোক, তাদের কঠোর হাতে দমন করা হবে।
ত্রাণ নিয়ে অনিয়মকারীদের সরকার দ্রুতবিচারের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ত্রাণের অনিয়মের বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। মন্ত্রণালয় এরইমধ্যে একজন চেয়ারম্যান, দুজন মেম্বারকে বরখাস্ত করেছে।
তিনি বলেন, ইউনিয়ন, উপজেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন ও জেলা পরিষদে ২০ জন করে সদস্য থাকে। এভাবে যদি আমরা হিসাব করি দেশে ৭২ হাজারের বেশি স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি আছেন। সেই ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত ৪৫টি মামলা হয়েছে অর্থাৎ প্রায় ২ হাজারের মধ্যে প্রায় একটি ঘটনা। তবে একটি ঘটনাও কাম্য নয়। যারা এই ধরনের অপরাধে যুক্ত হবে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিচার হবে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ত্রাণ কার্যক্রমে অনিয়ম ও দুর্নীতি করলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বরখাস্তসহ ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হবে। জনপ্রতিনিধিদের কেউ ত্রাণ কার্যক্রমে দুর্নীতি করলে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকরা অনিয়ম বা দুর্নীতির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণসহ প্রতিবেদন তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে ইউনিয়ন পরিষদের এক চেয়ারম্যান ও দুই মেম্বারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। জেলা থেকে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণসহ প্রতিবেদন আসা মাত্র সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এশিয়াবিডি/ডেস্ক/সাইফ