রাজনগরে বিধবা নারীকে পালাক্রমে ধর্ষণ

মৌলভীবাজারের রাজনগরে দুই সন্তানের জননী এক বিধবা নারী (৫৫) গণ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিন ব্যক্তি মিলে ওই নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে তিনি দাবী করেছেন। ঘটনার পর ওই নারী মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তবে পুলিশ বলছে, ওই মহিলা লিখিত অভিযোগে শ্লীলতাহানীর কথা উল্লেখ করেছেন। উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের পূর্ব সুরীখাল গ্রামে গত বৃহস্পতিবার রাতে এঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (৪ জুন) রাতে উত্তরভাগ ইউনিয়নের পূর্ব সুরীখাল গ্রামের সনাতন ধর্মালম্বী এক বিধবা নারী (৫৫) প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের বাইরে যান। এসময় ওত পেতে থাকা একই গ্রামের প্রতিবেশি সুধীর বিশ্বাসের ছেলে বিজয় বিশ্বাস (২৫), মনসুর মিয়ার ছেলে সালমান শাহ (২০) সহ ৩ জন যুবক তার মুখ চেপে ধরে পাশের কচুবনে নিয়ে যায়। সেখানে ওই তিন যুবক পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে চলে যাওয়ার সময় তিনি তাদের চিনতে পেরে নাম বললে চিতকার করেন।
চিতকার করায় ধর্ষকেরা ওই নারীকে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় পাশের কুশিয়ারা নদীতে মাছ ধরতে যাওয়া কয়েকজন তার গোঙ্গানীর শব্দ শুনে চিৎকার করে এগিয়ে আসেন। জেলেদের এগিয়ে আসা বুঝতে পেরে ধর্ষকরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী অর্জুন বিশ্বাসের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে কাপড় পরিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানকে জানানো হলে তাদের পরামর্শে পরদিন মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে ভর্তি তাকে করা হয়। এ ঘটনায় ওই নারী রাজনগর থানায় শ্লীলতাহানীর অভিযোগ করেছেন। তবে ধর্ষণের শিকার ওই নারীর দাবী, তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে ওই ধর্ষকরা। তিনি দুজনকে চিনতে পরলেও একজনকে চিনতে পারেন নি।
স্থানীয়রা জানান, ধর্ষণের ঘটনায় যাদের নাম উঠে এসছে- এদের অত্যাচারে অতিষ্ট এলাকাবাসী। আগে থেকেই গ্রামের নারীদের উত্ত্যক্ত করে আসছিল তারা। এছাড়া এলাকায় চুরিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়ে এলাকাবাসীকে অতিষ্ট করে তুলেছে তারা। এর আগেও গ্রামের এক নারীর (৩০) ঘরে ঢুকলে তিনি চিৎকার করেন। পরে তারা তাদের ব্যবহৃত কিছু জিনিস ফেলে পালিয়ে গেলে স্থানীয় মুরব্বিদের জানানোর পরও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। একই গ্রামের রহিমা বেগম বলেন, আমার ঘরে ঢুকার পর এলাকার মুরব্বিদের প্রমাণসহ বলার পরও বিচার করেননি। আগে থেকে তাদের বিরোদ্ধে ব্যবস্থা নিলে এঘটনা ঘটতো না।
ধর্ষণের শিকার নারী জানান, তিনি ঘরের বাইরে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে ৩ যুবক তাকে জাপটে ধরে মুখ চেপে ধরে কচুবনে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। তিনি তাদের দুইজনকে চিনতে পেরে নাম ধরে এমন কাজের জন্য প্রতিবাদ করলে তারা তাকে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করতে চেষ্টা করে। পরে নদীতে থাকা ৩-৪ জন জেলে তাকে উদ্ধার করতে গেলে তারা পালিয়ে যায়। এদিকে লিখিত অভিযোগ পেয়ে রাজনগর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) বিনয় ভূষণ চক্রবর্তী বলেন, ওই নারী প্রথমে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ দিয়েছিলেন। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তারা এখন আবার নতুন করে অভিযোগ দিচ্ছে।
রাজনগর থানার ওসি মো. আবুল হাসিম বলেন, ওই মহিলা লিখিত অভিযোগে শ্লীলতাহানীর কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি ধর্ষণের কথা আগে বলেননি। এখন বলছেন তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে এমন অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।
এশিয়াবিডি/সারাবাংলা
