আল্লামা প্রিন্সিপাল হুজুর : প্রেম-বিরহের দুই পংক্তি


আল্লামা আব্দুল কাইয়ূম সিদ্দিকী (প্রিন্সিপাল) হুজুর চলে গেছেন তার আপন মালিকের কাছে। আর বেদনার অপর প্রান্তে হাহাকার করে উঠছে কতোমুখ, কতো স্মৃতি। প্রেম-বিরহের যুগল যন্ত্রণা। হুজুর নেই- এক ধু ধু শূন্যতায় বুক বাজে। বিচ্ছেদের পর মিলন মধুর হয়ে উঠলেও বিচ্ছেদ শুধুই কাঁদায়। সেই কান্নাটুকু আমি দেখেছি তার প্রিয়দের বুকে। সত্যিকার অর্থেই বুঝি বেদনার চিঠিতে লিখা থাকে প্রেমের বয়ান। আজ হাজারো বুকে সে বয়ান চিৎকার করে উঠছে দিগন্ত কাঁপিয়ে। কেবলই বেদনা-শতটুকরো হয়ে বাতাসে মিলিয়ে যাচ্ছে। আমি তার তীর্থ ভূমিতে দাঁড়িয়ে উপভোগ করছি প্রেমের শরাব। শর্তহীন ভালবাসার বিচারহীন কান্না। ভালবাসার শিকড়ে একদিন মধু সিঞ্চন করেছিলেন সে তিনিই। আজ তা ঢালপালায় বিস্তৃত হয়ে আকাশ ছুঁয়েছে; মেঘ ছুঁয়েছে। কান্না ঝরছে ধরনীতলে।

হুজুর- ছিলেন আক্ষরিক অর্থেই আমাদের ছায়াবৃক্ষ। প্রতিষ্ঠানের চেয়েও বড় প্রতিষ্ঠান। আমরা তার নামের মহিমায় বেড়ে উঠেছি। তার ব্যক্তিত্বের আকাশসম চূড়ায় কতো সূর্য উঠেছে; কতো মেঘ জমেছে তথাপি তার মুকুট ছিল চিরমহিমায় প্রোজ্জ্বল। তার অতলস্পর্শী মেধার কাছে আমরা বারবার নুয়ে পড়েছি। এক জীবন্ত অভিধান হয়ে মফস্বল শহরের সম্রাট হয়ে বেঁচেছিলেন জীবনভর।

অভিযোগ, অনুযোগ ছিল আমাদের। রাগ-বিরাগেরও কমতি ছিল না। কিন্তু তার মোমের হৃদয়ে ভালবাসার আগুন জ্বেলে সকল মান-অভিমান ভেঙ্গে দিতেন। আজ আসামীর মতো হাঁটুগেড়ে ক্ষমা চাইছি তার কাছে। ক্ষমা করো আমাদের সকল অপ্রত্যাশিত ভুলের।

প্রিয় হুজুর- স্মৃতিতে চোখ ভারি হয়ে উঠছে। অশ্রুই তার স্বাক্ষী। আমার কী বোর্ড ভিজে যাওয়ার পর শব্দহীন হয়ে এখানেই শেষ টানছি। ছলকে উঠা স্মৃতিময়তা নোট খাতায় তোলে রাখলাম ভবিষ্যতের কোন এক লেখার জন্য।

লেখকঃ সাংবাদিক, কলামিস্ট

আরও সংবাদ