১৮ মাস পর প্রাণ ফিরে পেল রাজনগরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান!

১৮ মাস পর প্রাণ ফিরে পেল রাজনরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানদীর্ঘ প্রায় ১৮ মাস স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকার পর আজ রবিবার মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রাণের সঞ্চার ঘটেছে। উৎসব মূখর পরিবেশে আমেজ নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা প্রবেশ করছে প্রিয় বিদ্যাপীঠে। স্বাস্থবিধি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্কুল কলেজ পরিদর্শনে তৎপর রয়েছে উপজেলা প্রসাশন, শিক্ষা কর্মকর্তাসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।

সরেজমিনে রাজনগরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা আনন্দের সাথে নতুন জামা গায়ে, পরিচ্ছন্ন পরিবেশে, স্বাস্থ্য বিধি মেনে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করছে। দীর্ঘদিন পর এক সহপাঠির সাথে আরেক সহপাঠির দেখা হচ্ছে, এ যেন এক অনন্য দৃশ্যপট! ঈদের আনন্দ আজ তাদের মধ্যে বিরাজমান।

উৎসব মূখর পরিবেশে ২০২১ ও ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং ষষ্ঠ শ্রেণির ক্লাস শুরু হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদেরকে প্রবেশের আগে শরীরের তাপমাত্রা, স্বাস্থ্যবিধি পরিক্ষা করে প্রবেশ করানো হচ্ছে।

উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের শহীদ সুদর্শন উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ইউপি চেয়ারম্যান টিপু খান নিজ অর্থায়নে শিক্ষার্থীদেরকে মাস্ক, হ্যান্ডসেনিটাইজার বিতরন করে মিষ্টি মুখ করাচ্ছেন।

উপজেলা শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানাযায়, রাজনগর উপজেলায় সরকারি ও বেসরকারি মোট প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১৫১ টি। মোট ছাত্র-ছাত্রী আছেন ৩৮ হাজার ৯২১ জন। এমপিওভোক্ত শিক্ষকের সংখ্যা ৭১৬। এছাড়াও মাধ্যমিক স্কুল, মাদ্রাসা, স্কুল এন্ড কলেজ, কলেজসহ আরোও ২৬ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

খলাগাঁও করিমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোহনা তাহছিন মিশু জানান, স্ব-শরীরে পাঠদানে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি খুব আনন্দিত। শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং সহপাঠীদের সাথে দীর্ঘদিন পর দেখা হয়ে খুব ভালো লাগছে। আমরা যেন নিয়মিত স্বাস্থ্য বিধি মেনে ক্লাস করতে পারি এই প্রত্যাশা করছি।

অভিভাবক শামিম আহমদ জানান, শিক্ষার্থীরা ঘরে দীর্ঘদিন অলস সময় কাটিয়েছে। স্কুল কবে খুলবে এটা নিয়ে উদগ্রীব ছিল তারা। আজ আমি আমার মেয়েকে নতুন স্কুল ড্রেস ও খাতা-কলম কিনে দিয়েছি ক্লাস করার জন্য। খুব আনন্দের সাথে মেয়েটা স্কুলে গেছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা(ভারপ্রাপ্ত) সোমা ভট্টাচার্য জানান, পূর্ব নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষক – শিক্ষিকারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান শুরু করেছেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশিরভাগই ইউনিফর্ম পরা ছিল। কোনো শিক্ষার্থীর বা শিক্ষকের শারিরীক কোনো সমস্যা দেখা দেয়নি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, উপজেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাঠদানের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস করানোর জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রসাশন তৎপর রয়েছে বিভিন্ন বিদ্যালয় পরিদর্শনে।

উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান খান বলেন, মাস্ক পরিধান, হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায়, বাইরের খাবার বর্জন করা এসব বিষয় লক্ষ্য রাখার জন্য আমি অভিভাবক ও শিক্ষকদের অবগত করেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াঙ্কা পাল বলেন, মেহেরুন্নেছা, আইডিয়েল ও পোর্টিয়াস স্কুল পরিদর্শন করেছি। ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি কিছুটা কম আছে। যারা আসেনি তাদের অভিভাবকদের সাথে শিক্ষকরা যোগাযোগ করে কারণ জানবেন। ইউনফর্ম পরে আসেনি এরকম শিক্ষার্থীর সংখ্যা খুব কম। আমরা আপাতত এবিষয়ে কিছুটা ছাড় দিচ্ছি।

এশিয়াবিডি/ডেস্ক/কামরান
আরও সংবাদ