আমরা কি খাচ্ছি, কেনো খাচ্ছি?

আমরা কি খাচ্ছি, কেনো খাচ্ছিখাদ্য মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে । জীবনধারণ, দৈহিক ও মানসিক বিকাশের অপরিহার্য উপাদান হলো খাদ্য। খাবারের উপাদান মূলত ছয়টি যেমন, প্রোটিন, শর্করা, স্নেহ, ভিটামিন, খনিজ উপাদান এবং পানি যা আমরা সবাই জানি। অন্যান্য উপাদানও খাদ্যে বিরাজমান । আমরা দৈহিক চাহিদা মেটানোর জন্য যে সকল খাবার খাচ্ছি সেগুলোর মধ্যে ছয়টি উপাদান বিদ্যমান, এটা আমরা জেনেই খাচ্ছি। প্রশ্ন হলো আদৌ কি তাই?

বর্তমান সময়ে আমরা রাস্তা ঘাট, বিভিন্ন ছোট বড় দোকানপাট, সুপারশপ, নামি দামী রেস্টুরেন্ট, বড় বড় কোম্পানীর তৈরি করা প্রসেসড ফুড ইত্যাদি থেকে যা খাচ্ছি তাতে কি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো না মন্দ এগুলো নিয়ে বিশেষ ভাবে ভাবনার দরকার আছে ।

এখন রোজার মাস চলছে, রাস্তার পাশে নানান ধরনের সুস্বাদু খাবারের পসরা নিয়ে বিক্রেতারা বসে থাকে । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় এগুলোর মধ্যে ভাজা পোড়া খাবারই বেশি, এগুলো ভাজার জন্য কি তেল ব্যবহার করা হয় তা আমরা জানি না, তাই এগুলো না খাওয়াই ভালো কারন এগুলো থেকে এসিডিটি সহ নানা ধরনের শারিরিক সমস্যা সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল/কালার দিয়ে খাবার রং এবং স্বাদ পরিবর্তন করা হয় এগুলো আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকর। রাস্তার ধুলাবালি থেকেও খাবার নষ্ট হয় তাই এগুলো ক্রয় বা খাওয়ার ক্ষেত্রে ভালোবভবে লক্ষ রাখতে হবে ।

বর্তমান সময়ে ভোজনরসিকরা গ্রিল বা পোড়া মাংস খাওয়ার প্রতি আগ্রহ দেখায়, এগুলো অধিক পরিমানে খাওয়া ঠিক নয় কারন এগুলো থেকে ক্যান্সার সহ দেহে নানাবিধ সমস্যা দেখা দিতে পারে । শুধুমাত্র ভেজাল খাদ্য গ্রহণের ফলে প্রতিবছর অনেক মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে ।

ইদানিং দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন দোকানপ্যাঁতে শিশুবাচ্চাদের মুখরোচক এবং ফেন্সি কালারে মোড়ককৃত খাবারের সমাহার । এখন প্রশ্ন হলো, এগুলোকি বি.এস.টি.আই’র অনুমোদন নেয়া কিনা? শিশু বাচ্চাদের কত বয়স পর্যন্ত এগুলো খাওয়া যাবে? কত বয়স পর্যন্ত খাওয়া যাবে না? মেয়াদ আছে কিনা? যে সকল ইনগ্রেডিয়াটেবা খাদ্য উপাদান ব্যবহৃত হচ্ছে সেগুলো শিশুবাচ্চদের দেহের জন্য উপযোগী কিনা? যদি শিশু বাচ্চাদের দেহের জন্য উপযোগী হয় তবে তা খাবারে মোড়কে সূত্রসহ লেখা আছে কিনা? উৎপাদিত খাবারে যে ধরনের ভেজিটেবল ফ্যাট ব্যবহার করা হয় সেগুলো দেহের জন্য ক্ষতিকর কিনা? ইত্যাদি আমাদের ভোক্তা বা ক্রেতাদেরকে জানতে হবে এবং এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। সুতরাং আমরা কি খাচ্ছি, কেনো খাচ্ছি? এ ব্যাপারে এখনই সোচ্চার হতে হবে ।

আমরা যদি একটি সুস্থ এবং মেধাবী জাতি গঠন করতে চাই তাহলে আমাদেরকে ভেজালমুক্ত এবং নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে । এজন্য বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি বি.এস.টি.আই, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কতৃপক্ষ, ফুড ইঞ্জিনিয়ার বা ফুড টেকনোলজিস্ট এবং বেসরকারী খাদ্য উৎপাদন প্রতিষ্ঠান সমূহকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

লেখকঃ এ. কে.এম. খাদেমুল বাশার
চিফ ইনস্ট্রাক্টর (টেক/ফুড)
ডিপার্টমেন্ট অব ফুড টেকনোলজি
কিশোরগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট।

এশিয়াবিডি/ডেস্ক/কামরান 
আরও সংবাদ