বন্যার্তদের পাশে ‘সেভ সিলেট’

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানিতে তলিয়ে আছে সিলেট। ঘর-বাড়ি রাস্তা-ঘাট, দোকানপাটসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পানিতে নিমজ্জিত। জেলার বেশিরভাগ উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকায় চরম খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে।

এ অবস্থায় বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছে ‘সেভ সিলেট’। প্রথম দফা বন্যা পরিস্থিতির পর থেকেই সংগঠনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের জন্য খাদ্যসামগ্রীসহ প্রয়োজনীয় নানা উপকরণ তুলে দিচ্ছেন।

সেভ সিলেটের সমন্বয়ক মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, চলতি বছরের ২৯ মে থেকে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পরপরই সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকেরা দুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেন। এখন পর্যন্ত সিলেট ও সুনামগঞ্জের প্রায় প্রতিটি উপজেলায় রান্না করা খাবারসহ শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। খাদ্যসহায়তা হিসেবে ছিল চিড়া, চিনি, বিস্কুট, চাল, ডাল, পেঁয়াজ, তৈলসহ খাবার স্যালাইন, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনা মহামারির কারণেই ২০২০ সালের ২৬ মার্চ সেভ সিলেটের যাত্রা শুরু হয়। এর প্রতিষ্ঠাতা স্বেচ্ছাসেবী ও উদ্যোক্তা ড. আয়ান মুমিনুল হক। সংগঠনটি সিলেটের মানুষের সেবায় কাজ করে যাচ্ছে। এ অঞ্চলের সামাজিক সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে সংগঠনটি। তাছাড়া যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে এ সংগঠনের সদস্যরা। সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবক, সদস্য ও দাতাদের সহযোগিতায় সংগঠনটি পরিচালিত হয়।

সেভ সিলেটের সমন্বয়ক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমরা বিভিন্ন সময়ে সামাজিক সমস্যার সমাধানে নিয়ে কাজ করি, ২০২০ সালে করোনা মহামারির সময়ে আমরা কাজ করছি। ২০২২ সালের বন্যার সময়েও সিলেট বিভাগের প্রতিটা ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলায় আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের বন্যায় আমাদের উপজেলার স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছে।

সেভ সিলেটের প্রতিষ্ঠাতা ড. আয়ান মুমিনুল হক বলেন, সেই সিলেট প্রতিষ্ঠার পর থেকেই অসহায়, দরিদ্র, খেটে খাওয়া মানুষকে সাহায্য করা। পাশাপাশি রক্তদান, বিনামূল্যে খাবার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা, পরিবেশ রক্ষা, উদ্যোক্তা তৈরিসহ ২৬৩টি প্রকল্প নিয়ে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে সংগঠনের ৫ হাজারের অধিক স্বেচ্ছাসেবকরা বিভিন্ন উপজেলায় মাঠ পর্যায় কাজ করে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ আমরা ‘শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলানটিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২০’ অর্জন করি। এছাড়া ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ঢাকার অনুষ্ঠানে সম্মাননা লাভ করি, দুবাইয়ে গ্লোবাল পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাওয়ার্ড ২০২১ এবং থাইল্যান্ডে গ্লোবাল ইয়ুথ লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড ২০২২ লাভ করি। সব মিলিয়ে আমরা ২৭টি অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেছি। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও বিশ্বের ৩৬টি দেশে টিম গঠন করতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি আরও বলেন, অসহায়, দরিদ্রের পাশে থেকে সেভ সিলেট কাজ করে যাবে। যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা প্রস্তুত রয়েছে।

আরও সংবাদ