মূলধন হারাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা
২৮ কোম্পানি জেড ক্যাটাগরিতে
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ২৮টি কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরিতে পাঠানোর কারণে শেয়ারধারীরা মূলধন হারাচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিনিয়োগকারীরা। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোকে নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি উক্ত কোম্পানিগুলোর পরিচালকদের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া যেতে পারে। কোম্পানি সম্পর্কিত নন-কমপ্লায়েন্সের জন্য পরিচালকদের ব্যক্তিগত হিসাব জব্দ করে কমপ্লায়েন্স ঠিক করতে হবে। এক্ষেত্রে ডিভিডেন্ট বিতরণের অনিয়ম দূর হবে।
গতকাল শনিবার বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের হলরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিনিয়োগকারীদের পক্ষে এসব দাবি জানান বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি আতাউল্লাহ নাঈম।
এদিকে বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহজুড়ে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা কমেছে।
অনুষ্ঠানে আতাউল্লাহ নাঈম বলেন, ২৮টি কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরিতে পাঠানোর কারণেই মূলত শেয়ারধারীরা মূলধন হারাচ্ছে। এ সময় পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা সৃষ্টি ও স্থায়ী গতিশীলতা, চলমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বিনিয়োগকারী ও পুঁজিবাজারের জন্য বর্তমান সময়ে কর্তৃপক্ষের করণীয় সম্পর্কে সংগঠনটির ১২ দফা দাবিও তুলে ধরেন তিনি। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে- সংশ্লিষ্টকোম্পানিগুলোকে নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া ও পরিচালকদের দেশ ত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া। কোম্পানি সম্পর্কিত নন-কমপ্লায়েন্সের জন্য পরিচালকদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে কমপ্লায়েন্স ঠিক করে দেওয়া। পুঁজিবাজার-সংক্রান্ত বিষয়ে সব স্টেকহোল্ডারের সুচিন্তিত মতামত গ্রহণ করে পারস্পরিক অনাস্থা দূর করে বিনিয়োগকারীদের আস্থায় নেওয়ার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা, বিগত বিএসইসির জেড ক্যাটাগরি-সংক্রান্ত উদ্যোগ বর্তমান সময়ে বাস্তবায়নে অসৎ উদ্দেশ্য আছে কি না, তা খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো আমাদের দেশে ‘পুঁজি বিনিয়োগ আইন’ প্রণয়নও কার্যকর করা, প্রকৃত লভ্যাংশ না পেলে এবং কোম্পানিগুলো প্রতারণার আশ্রয় নিলে যাতে বিনিয়োগকারীরা আইনি সুযোগ নিতে পারে, তা নিশ্চিত করা, বিএসইসিকে পুঁজিবাজারের স্বচ্ছতা বাড়াতে আইনের সময়োপযোগী সংশোধন করা, গত ১৫ বছর কারসাজির কারণে সৃষ্ট পতনে সর্বস্ব হারিয়ে যেসব বিনিয়োগকারী আত্মহত্যা ও হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন, সেসব বিনিয়োগকারীর পরিবার থেকে একজনকে চাকরির সুব্যবস্থা করা, ২০১০ সালের ধসের পর থেকে আজ অবধি পুঁজিহারা বিনিয়োগকারীদের ৫০ শতাংশ পুঁজির জোগান দেওয়া, সব হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা নিঃশর্ত প্রত্যাহার এবং ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা, আইপিওতে আসা কোম্পানিগুলোতে গিয়ে বিভিন্ন সংস্থার নামে চাঁদা আদায় ও এজিএমকে ঘিরে চলমান অনিয়ম দুর্নীতি অনুসন্ধান করে প্রকৃত দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া,
পুঁজিবাজারের বর্তমান সংকট উত্তরণে বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসি সাপোর্ট দেওয়া, অতিদ্রুত বাইব্যাক আইন করা,
নতুন কোম্পানির সেকন্ডারি মার্কেটে তালিকাভুক্তির পর তাদের সার্বিক কার্যক্রম সঠিক মনিটরের আওতায় আনা, ‘পুঁজিবাজারবিষয়ক তথ্য ব্যাংক’ গঠন করে বিনিয়োগকারীদের জন্য পুঁজিবাজার-সংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য নির্দিষ্ট স্থান থেকে সংগ্রহ করার সহজ সুবিধা নিশ্চিত করতে বিএসসিইকে ডিএসই ও সিএসই সমন্বয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
সূত্র: কালবেলা