পকেট কমিটি না করে দুঃসময়ের কর্মীদের দলে স্থান দিন : সিলেটে ওবায়দুল কাদের
সুরমা নিউজ:
দলের ভেতরে শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে। সুনামগঞ্জ থেকে সুন্দরবন এ অভিযান চলবে। মদ, জুয়া, ক্যাসিনো বিএনপি শুরু করেছিল। এখন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এগুলোর বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযানে নেমেছেন। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নগরীর কবি নজরুল অডিটরিয়ামে সিলেটে আওয়ামী লীগ নেতা আ ন ম শফিক স্মরণে আয়োজিত শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের একথা বলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সিলেটের সবচেয়ে বড় সমস্যা সংগঠনে কলহ। এই কোন্দল মেটাতে না পারলে আমরা ফল কোনোদিনও পাবো না। নির্বাচনে আমরা হেরে যাই, কারণ আমরা নিজেরাই নিজেদের শত্রু।
তিনি বলেন, আপন ঘরে যার শত্রু, তার শত্রুতা করার জন্য বাইরের শত্রু দরকার নেই। সিলেটের অবস্থাও তেমন। তাই বিভক্তি ঝেড়ে ফেলে ঘরের মধ্যে ঘর করা, পকেট কমিটি করা- এসব থেকে বিরত থেকে দুঃসময়ের কর্মীদের কোণঠাসা না করে তাদের দলের বিভিন্ন পদে স্থান দিন।
মঞ্চে বসা নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিভেদ সৃষ্টির মতো কাজ আপনারা পরিহার করবেন। আপনারা দলাদলি না করলে কর্মীদের মধ্যে দলাদলি হবে না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজ যে শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে এ অভিযান শুধু ঢাকায় নয়, সুনামগঞ্জ থেকে সুন্দরবন, কুতুবদিয়া থেকে তেঁতুলিয়া। সারা বাংলাদেশে যেখানেই টেন্ডারবাজ, চাঁদাবাজ, মাদক, দুর্নীতিবাজ, অপকর্মকারী, সেখানেই শেখ হাসিনার অ্যাকশন। এই অ্যাকশন অব্যাহত থাকবে।
‘সততায় শেখ হাসিনা বিশ্বের প্রথম সারির দু’তিনজনের একজন নেতা। তার কর্মী হয়ে আমরা যদি অপকর্ম করি, এরচেয়ে লজ্জার আর কিছু হতে পারে না। তাই অপকর্মকে আর আশ্রয়-প্রশ্রয় দেবো না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আজ বিষদগার করছে। কারণ তারা একটা দুর্নীতিবাজ দল। তারা সন্ত্রাসীর দল। তারা দুর্নীতি করেছে, হাওয়া ভবন করেছে, লুটপাট করেছে, ক্যাসিনো সৃষ্টি করেছে। জুয়া বঙ্গবন্ধু আইন করে বন্ধ করেন। আর বিএনপি বৈধতা দিয়েছে। জুয়া অপসংস্কৃতির জন্মদাতা বিএনপি।
তিনি বলেন, বিএনপি বেসামাল হয়ে গেছে। বেপরোয়া ট্রাকের মতো কখন যে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে! নয়তো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলতো না। শেখ হাসিনার সামনে গণতন্ত্র, সততার শাসননীতি বজায় রাখা ছাড়া বিকল্প কিছুই নেই।
শফিকুল হকের স্মৃতিচারণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখানে সবার জন্য আসিনি। শফিকুল হকের জন্য এসেছি। তার মতো ত্যাগী নেতা হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। যিনি দলকে দিয়েই গেছেন, নিজের জন্য এক টুকরো ভূমিও রেখে যাননি।
তিনি সিলেটের বিভিন্ন সড়কের উন্নয়ন কাজের হালনাগাদ তথ্য দিয়ে বলেন, সিলেট–ঢাকা চারলেন সড়ক এখন ছয় লেন হবে। আগে এই প্রকল্প বাতিল হয়েছিল সচিবকে ঘুষ দিতে না পারায়। এবার ছয়লেন করতে এডিবি ফান্ড দেবে। কাজের অগ্রগতি খুব দ্রুত হবে।
আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান শফিকুল হকের জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে ও শেখ হাসিনার শিক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলের জন্য নেতাকর্মীদের কাজ করার নির্দেশনা দেন।
সিলেট নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিনের পরিচালনায় স্মরণসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ও মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, কেন্দ্রীয় সদস্য অধ্যাপক রফিকুর রহমান, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, হবিগঞ্জের সংসদ সদস্য শাহ নেওয়াজ গাজি মিলাদ, সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ। এছাড়া স্থানীয় নেতারা স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন।