ওসমানীনগরে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা, এ বছর ৩৩টি মন্ডপে দুর্গাপূজা
বেজে উঠেছে দেবীপক্ষের বাজনা। মন্ডপে মন্ডপে চন্ডীপাঠের মাধ্যমে মর্ত্যলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে দেবী দুর্গাকে। সিলেটের ওসমানীনগরে প্রতিমার গায়ে তুলি শেষ আচড় দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা।
এবার প্রতিমা তৈরির পাশাপাশি অনেক পূজামন্ডপে চলছে সাজসজ্জার বর্ণিল আয়োজন। প্রতিমার সৌন্দর্য্যতা চাকচিক্য নিয়ে বিভিন্ন পূজামন্ডপের মধ্যে চলছে নিরব প্রতিযোগিতা। ওসমানীনগরে এ বছর ৩৩টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এরমধ্যে সার্বজনীন ২৬টি ও ব্যক্তিগত ৭টি।
ওসমানীনগরে প্রতিবারই প্রতিমা তৈরিতে দেখা যায় নতুনত্ব। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। মন্ডপের সাজসজ্জাতেও এবার থাকছে নানা চমক। মূর্তি তৈরীতে ভিন্নতা আনতে অনেকে ভারত থেকেও মৃৎশিল্পী আনিয়েছেন।
যশোর থেকে প্রতিমা তৈরী করতে এসেছেন কারুশিল্পী বলরাম আচার্য্য। তার সাথে সহযোগী রয়েছেন আরো চারজন। রাতদিন পরিশ্রম করে তৈরি করছেন দুর্গা, লক্ষ্মী, স্বরস্বতী, কার্তিক, গনেশ, অসুর, মহিষ, সিংহের মৃন্ময় মূর্তি। মূর্তি তৈরিতেও রয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়া। কোন কোন মন্ডপে দেবী দুর্গার এবারের আগমন ও গমনের প্রতিকী ঘটনাসহ পৌরাণিক কাহিনীকে নানা আদলে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। দেবদেবীর প্রতিমা পাশাপাশি পৌরাণিক নানা চরিত্রের মূর্তি দিয়েও সাজিয়ে তোলার কাজ এগিয়ে চলেছে। বিদ্যুতের সাহায্যে দেখানো হবে দেবরাজ্যের নানা কল্প কাহিনী।
কলকাতার মৃৎশিল্পী রঘুনাথ পাল বলেন, “পূর্ব-পুরুষের আদি পেশা ছিল প্রতিমা তৈরি। সেই সূত্রধরে আমিও ছোটবেলা থেকে প্রতিমা তৈরির কাজ করে আসছি। এবারে সিলেটসহ বাংলাদেশে ১০টি প্রতিমা তৈরি করেছি। প্রতিমা সুন্দর হলে আগামী দিনেও আমার চাহিদা বাড়বে। এজন্য প্রতিমা সুন্দর করতে আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছি।”
উপজেলার বৃহৎ পূজা মন্ডপ সিদ্ধেশ্বরী সেবা সংঘের পূজা কমিটির সভাপতি উত্তম দেবনাথ জানান, আশা করা যাচ্ছে প্রতিবারের মতো এবারও সপ্তমী থেকে তাদের মন্ডপে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামবে। দর্শনাথীদের নিরাপত্তা ও সাহায্যার্থে তাদের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীও মন্ডপ এলাকায় ২৪ঘন্টা নিয়োজিত থাকবে।
ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম আল মামুন বলেন, আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় যে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোসহ সার্বিক আইন শৃংখলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মন্ডপগুলোতে পুলিশ-আনসার-ভিডিপির সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেয়া ছাড়াও রয়েছে পুলিশের নিয়মিত টহল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা সফল ভাবে উদযাপনের জন্য প্রশাসন থেকে সব ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থায়। পূজাকালিন সময়ে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হবে। পূজার সময় যে কোন সমস্যায় কন্ট্রোল রুমের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন যে কেউ। প্রশাসন সনাতন ধর্মালম্বীদের বৃহৎ এ উৎসবে সব ধরণের সহযোগিতা করবে।