‘অর্থের দাপটে’ ব্রিটিশ ভিসা প্রাপ্তির হার বেড়েছে
বিনিয়োগের বিনিময়ে যুক্তরাজ্যে বসবাসের সুযোগ নেওয়া বিদেশিদের হার অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। দেশটির অভিবাসন বিভাগের সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ২৫৫ জন ‘গোল্ডেন ভিসা’ নামে পরিচিত বিনিয়োগ ভিসায় যুক্তরাজ্যে বসতি গড়েছেন।
গত পাঁচ বছরের মধ্যে কোনো ছয় মাসে এটাই সর্বোচ্চ বিনিয়োগ ভিসা প্রদানের রেকর্ড। গত শনিবার এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। টিয়ার-ওয়ান ইনভেস্টর’ শ্রেণির এই ভিসার জন্য যুক্তরাজ্যে ২০ লাখ পাউন্ড (প্রায় ২২ কোটি টাকা) বিনিয়োগের শর্ত পূরণ করতে হয়। এই ভিসাকে ‘অর্থের দাপটে যুক্তরাজ্যে বসতি গড়ার লাইসেন্স’ বলে আখ্যায়িত করেন সমালোচকেরা।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বহির্ভূত দেশ থেকে মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ আকর্ষণে স্থায়ী বসবাস সুবিধার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০০৮ সালে বিনিয়োগ ভিসা চালু করে যুক্তরাজ্য। ‘টিয়ার ১ ইনভেস্টর ভিসা’ নামে এটি পরিচিত। নিয়ম অনুযায়ী ২০ লাখ পাউন্ড বিনিয়োগের জন্য ২০ লাখ পাউন্ড প্রস্তুত রয়েছে এমনটি দেখাতে পারলে প্রাথমিক অবস্থায় পাঁচ বছরের ভিসা দেওয়া হয়। পাঁচ বছর পর স্থায়ী বসবাসের আবেদন করতে পারেন ওই সব বিদেশিরা।
২০১৮ সালে অভিযোগ উঠে যে, বিভিন্ন দেশের অসাধু ব্যক্তিরা কর ফাঁকি ও অর্থ পাচারের হাতিয়ার হিসেবে এ সুযোগ ব্যবহার করছে। সেই সময় যুক্তরাজ্যের মাইগ্রেশন অ্যাডভাইজরি কমিটি জানায়, বিনিয়োগ ভিসা যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির জন্য খুব একটা উপকারে আসছে না।
বেশির ভাগ আবেদনকারী সরকারি বন্ডে বিনিয়োগ করছেন। এটি প্রকৃতপক্ষে কোনো বিনিয়োগ নয়; বরং সরকারকে ঋণ দেওয়ার শামিল। তখন যুক্তরাজ্য সরকার সাময়িক এই ভিসা দেওয়া স্থগিত করে। তবে শর্ত কিছুটা কঠিন করে কিছুদিন পর আবারও এই ভিসা প্রদান চালু করে।
নতুন শর্তে বলা হয়, সম্ভাব্য বিনিয়োগের অর্থের ওপর আবেদনকারীর কমপক্ষে দুই বছর নিয়ন্ত্রণ ছিল—এমনটি প্রমাণ করতে হবে। শর্ত কঠিন করার পরও এই ভিসা আবেদনকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে প্রতিবেদনে উঠে আসে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে এই ভিসা আবেদনকারীর সংখ্যা সর্বোচ্চে পৌঁছে। ওই বছর মোট ১ হাজার ১৭২ জনকে বিনিয়োগ ভিসা প্রদান করা হয়। আর গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৩৫০ জন। বিনিয়োগ ভিসায় আবেদনকারীদের শীর্ষে আছে চীন ও রাশিয়ার নাগরিকেরা।