ভোটের তারিখ পেছাতে ফের শাহবাগে শিক্ষার্থীদের অবস্থান
ইসির সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করায় সরস্বতী পূজার দিনে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির নির্বাচন বন্ধের দাবিতে ফের শাহবাগ অবরোধ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ধর্মের শিক্ষার্থীরা এই অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেয়।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বেলা ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধনের পর নির্বাচন কমিশন অফিস অভিমুখে পদযাত্রা ও ঘেরাও কর্মসূচি পালন করার জন্য রওনা দিলে শাহবাগ মোড়ে বাধা দেয় পুলিশ।
পরে দুপুর ২টার দিকে শাহবাগ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা রাস্তা বন্ধ করায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা। এমনকি অফিসে বা গুরুত্বপূর্ণ কাজেও বাধা দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
দুপুরে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করেন- ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন, সংস্কৃতি সম্পাদক আসিফ তালুকদার, সদস্য তানভীর হাসান সৈকত, জগন্নাথ হল ছাত্র সংসদের ভিপি উৎপল বিশ্বাস, জিএস কাজল দাশসহ ছাত্রলীগের নেতারা। এ সময় বিভিন্ন হল সংসদের ভিপি, জিএস, এজিএসসহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে এজিএস সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধ। হাইকোর্টের ওপর বন্দুক রেখে নির্দেশ দিয়ে আমাদের গায়ে আগুন ঢেলে দেবেন না। আপনারা (ইসি) নিজে তার উদ্যোগ নেন, আমাদের হাইকোর্ট দেখাবেন না। আমাদের হাইকোর্ট দেখালে আপনাদের সুপ্রিম কোর্ট দেখিয়ে ছাড়ব।’
প্রগতিশীল আইনজীবীদেরে এ দাবি আপিল বিভাগে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে অনতিবিলম্বে তারিখ পরিবর্তন করতে হবে। নির্বাচন কমিশন বোকার স্বর্গে বসবাস করছেন।’
এ সময় শিক্ষক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, সুশীল সমাজ, ক্রিয়াশীল সমস্ত ছাত্র সংগঠনকে অপমান, অধিকার হরণের বিষয়ে একতাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান সাদ্দাম।
মানববন্ধনে আসিফ তালুকদার বলেন, ‘জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য আজ গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ। সে মুহূর্তে ইসির সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিতে পারি না। ছাত্রসমাজকে হাইকোর্টের ভয় দেখাবেন না, আমরা আপনাদের সিদ্ধান্তকে ভেঙ্গে চুরমার করে দেব।’
উৎপল বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশন বরাবর চিঠি দেওয়ার পরেও দাবি না মানার কারণ জানতে চাই। একই দিনে সার্বজনীন উৎসব স্বরস্বতী পূজা এবং নির্বাচন কখনো হতে পারে না। কারণ শিক্ষার্থীসহ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে পূজা পালিত হয়।’
পূজার দিনে নির্বাচন কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চায় উৎপল। এ ছাড়া দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে নিশ্চিত করেন দৈনিক অধিকারকে।
শাহবাগ অবরোধের পর পূজার দিনে নির্বাচন, মানি না মানবো না; বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠায় নাই; শেখ হাসিনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠায় নাই; ৩০ তারিখ নির্বাচন, মানি না মানবো না; ইসি তুই জবাব দে, নইলে গদি ছেড়ে দে’ বলে স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাত ৮টায় ইসিকে ১৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয় আন্দোলনকারীরা। ১৮ ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচনের সময় পরিবর্তন না করলে ইসি ঘেরাওসহ নির্বাচন কমিশনারকে পদত্যাগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেয় শিক্ষার্থীরা। তবে ইসির সিদ্ধান্ত ১৮ ঘণ্টার মধ্যে পরিবর্তন না করায় ফের আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা।
এশিয়াবিডি/ডেস্ক/সাইফ