২৬ হাজার ‘প্রধানমন্ত্রী’ নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত
সংখ্যাটা ২৬ হাজারের কাছাকাছিই এবং প্রায় এই সংখ্যক প্রধানমন্ত্রীই নির্বাচিত হতে চলেছে সারাদেশের স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীদের ভোটে।
জাতীয় নির্বাচনের মতই স্কুলগুলোতে পোস্টারে ছেয়ে গেছে, যদিও সেসব হাতে লেখা। লাইন ধরে ভোটাররা ভোটকক্ষে ঢুকে নির্বাচনী এজেন্ট ও কর্মকর্তাদের সামনে ভোটার নাম্বার নিশ্চিত করে আঙ্গুলে কালি লাগিয়েছেন। পরে গোপন কক্ষে গিয়ে দিয়েছেন পছন্দের প্রার্থীদের ভোট।
শনিবার ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। দেশের সব মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদরাসায় (ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি) স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের যোগ্য প্রার্থীদের নির্বাচিত করছে।
সকাল ৯টায় শুরু হওয়া এ ভোটগ্রহণ বিরতিহীনভাবে চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। বিকেলে বিজয়ীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে একজন প্রধানমন্ত্রী ও কয়েকজন মন্ত্রী বাছাই করবে শিক্ষার্থীরা।
নির্বাচন উপলক্ষে সকাল ৭টা থেকে স্কুল ড্রেস পড়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে শুরু করে। বিদ্যালয়ের মাঠে লাইনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে একে একে ক্লাস রুমে গিয়ে সেখানে বসানো ভোট বক্সে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে বেরিয়ে আসে শিক্ষার্থীরা।
ভোট কক্ষে জাতীয় পর্যায়ের ভোটের মতোই পোলিং অফিসার, প্রার্থীদের এজেন্টরা উপস্থিত ছিলেন। তারা নানাভাবে ভোটারদের সহায়তা করেছে। সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা প্রয়োগ করেছে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার।
শিক্ষার্থীদের এ নির্বাচন কার্যক্রম পরিদর্শন করতে সকালে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আসেন। এ সময় তিনি বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র ঘুরে দেখেন।
দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয় (৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি) ও দাখিল মাদ্রাসায় এ স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচন আয়োজন করা হয়েছে। তবে অন্য কোনো পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেমন- নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ এবং আলিম, ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসা এ নির্বাচনের আওতায় বিবেচিত হবে না।
তফসিল অনুযায়ী, ১৪ জানুয়ারি থেকে স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচনের মনোনয়নপত্র আহ্বান করা হয়। ১৬ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র জমা নেয়ার শেষ দিন ছিল। যাচাই বাছাই শেষে ১৮ জানুয়ারি বৈধ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। ১৯ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার শেষে প্রার্থীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, এ বছর দেশের ৮টি বিভাগ ও ৮টি মহানগরের আওতাধীন ৫৫৯টি উপজেলা/থানায় মোট ২২ হাজার ৯২৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তার মধ্যে ১৬ হাজার ৩৮৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৬ হাজার ৫৪২টি দাখিল মাদ্রাসা রয়েছে।
এবার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১ লাখ ৩১ হাজার ৭২টি ও মাদ্রাসায় ৫২ হাজার ৩৩৬টি পদে প্রার্থীরা অংশগ্রহণ করছে। নির্বাচনে মোট ১ কোটি ১৫ লাখ ৫৩ হাজার ৯১৬ জন ভোটার রয়েছে। তাদের মধ্যে ৬২ লাখ ৫১ হাজার ৬৮৩ জন ছাত্রী (৫৪ দশমিক ১০ শতাংশ) রয়েছে।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতন্ত্র চর্চা তৈরি করতে ‘স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচন’র আয়োজন করা হয়। এর মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতন্ত্র চর্চাসহ একে অপরকে সহযোগিতা করা, শ্রদ্ধা প্রদর্শন, শতভাগ শিক্ষার্থী ভর্তি ও ঝড়ে পড়া রোধে সহযোগিতা, পরিবেশ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ নিশ্চিতসহ ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও সহশিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়। ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ সালে দেশে সব মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদ্রাসায় স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
এশিয়াবিডি/ডেস্ক/সাইফ