করোনাভাইরাসঃ কুয়েতে ২ সপ্তাহের ছুটি ও বিমান চলাচল বন্ধের ঘোষণা
করোনা আতংকে রীতিমতো কাঁপছে বিশ্ব। প্রতিরোধেও চলছে অব্যাহত চেষ্টা পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে সতর্কতা।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে কুয়েতের মন্ত্রীসভা টানা ২ সপ্তাহের জন্য সরকারী সকল কর্মক্ষেত্রে স্বাভাবিক কাজ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
স্থগিতাদেশ এর এই সময় চলাকালীনকে সরকারি ছুটি হিসেবে বিবেচনা করছে দেশটির মন্ত্রীসভা।
বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে কুয়েত মন্ত্রীসভার এক জরুরী বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
কুয়েতের সরকারি মুখপাত্র তারেক আল মাজরামের বরাত দিয়ে আরব টাইমস্ জানায়, দেশটির মন্ত্রীসভার বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার ১২ই মার্চ থেকে ২৬শে মার্চ পর্যন্ত নেয়া সরকারি এ ছুটির তথ্যটি।
আগামী ২৭ ও ২৮ মার্চ এ দুদিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকায়, ষোল দিন পর ২৯শে মার্চ রোববার থেকে সরকারী- বেসরকারি অফিস-আদালত পুনরায় খুলবে।
অন্যদিকে, নভেল করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর অংশ হিসেবে আগামী ১৩ ই মার্চ শুক্রবার মধ্যরাত থেকে কুয়েত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাণিজ্যিক বিমান চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে দেশটির সিভিল এভিয়েশন।
তবে কার্গো বিমানগুলি আগের মতো স্বাভাবিকভাবে চলাচল করবে।
এছাড়াও কুয়েতের সরকারি দুই সপ্তাহের ছুটি চলাকালীন দেশটির সকল রেস্তোরাঁ, কফি শপ, জিমস্, ক্লাব ও শপিংমল বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করেছে মন্ত্রীসভা।
কেবিএ বোর্ডের চেয়ারম্যান আদেল আল-মাজেদ জানান, জরুরী স্বার্থে কুয়েতের ছয়টি শহরে প্রতিটি ব্যাংকের একটি করে শাখা খোলা থাকবে।
তিনি আরও জানান, ব্যাংকগুলি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক অর্থ স্থানান্তরসহ বৈদ্যুতিন পরিষেবাগুলি অব্যাহত রাখবে। ব্যাংকগুলি নগদ অর্থসহ এটিএম মেশিন সরবরাহ করবে যাতে গ্রাহকরা অর্থ উত্তোলন করতে পারেন।
এদিকে, কুয়েতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কতৃক ঘোষিত এক বিজ্ঞপ্তিতে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে অদ্যাবধি যেসব প্রবাসী কুয়েত প্রবেশ করেছেন, তাদেরকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নতুন প্রধান কেন্দ্র গুলোতে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী যোগাযোগের সময় অবশ্যই সাথে থাকতে হবে সিভিল আইডি এবং পাসপোর্ট।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে যখন বিশ্বজুড়ে চলছে অব্যাহত চেষ্টা, ঠিক তখন কুয়েত সরকারও করোনা প্রতিরোধে সর্বোচ্চ চেষ্টার পাশাপাশি দেশটির নাগরিক ও অভিবাসীদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে।
এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সহ ৭ দেশের সঙ্গে ৭ দিন বিমান চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয় কুয়েত।
পরে সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে বাংলাদেশ সহ ১০ দেশের নাগরিকের ক্ষেত্রে কুয়েত প্রবেশে করোনাভাইরাস মুক্ত এই মর্মে সনদ দেখিয়ে কুয়েত প্রবেশ করতে নির্দেশ প্রদান করা হয়।
এর একদিন পর ফের পূর্বের সিদ্ধান্তের ন্যায় বাংলাদেশ সহ ১০ দেশের সঙ্গে বিমান চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কুয়েত।
পরবর্তীতে গত সোমবার আরব টাইমসের কুয়েত সংস্করণের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমান চলাচল বন্ধ অবস্থায় আকামার মেয়াদত্তীর্ণ হয়ে গেলেও কুয়েতে কাজ করছেন এমন ১৬টি দেশের প্রবাসী কর্মীর ভিসা ও ভ্রমণ ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।
এবার করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে স্থানীয় নাগরিকদের সুবিধার্থে সীমিত ফ্লাইট ও কার্গো বিমান গুলোর ফ্লাইট বাদে ১৩ই মার্চ মধ্যরাত থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য গোটা বিশ্বের সঙ্গে বিমান চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয় কুয়েত।
বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত কুয়েতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০ জনে, সুস্থতা লাভ করেছেন ৫জন ও সংকটপূর্ণ ৪জন।
এছাড়াও দেশটির তিনটি জায়গায় যথাক্রমে, জওয়ান রেসর্ট (১০৫), খাইরান রেসর্ট (৫৮০) ও আল-কুত বিচ্ হোটেলে (১৪৬), সর্বমোট ৮৩১ জনকে কোরেন্টাইনে রাখা হয়েছে
এশিয়াবিডি/বেলাল/কামরান