শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ!

প্রধান শিক্ষকের সহযোগিতায় শিক্ষার্থীদের সামনে সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভয়ে স্কুলে আসা ছেড়ে দিয়েছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।

গত বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) বরগুনা সদর উপজেলার ২ নম্বর গৌরিচন্না ইউনিয়নের ধূপতি মনসাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোসা. শামসুন্নাহার মুনমুন এ হামলার মদদদাতা বলে অভিযোগ রয়েছে। ১৫ মার্চ বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ওই স্কুলে গেলে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিত থাকার সত্যতা পাওয়া যায়।

স্থানীয় ও অভিভাবক সূত্রে জানা যায়, সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফা শিক্ষার্থীদের যত্নের সঙ্গে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করেন। অন্যদিকে, প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহার মুনমুন প্রতিদিন দুপুর ১২টায় স্কুলে আসেন এবং ১টায় চলে যান। তিনি সঠিকভাবে স্কুলের খোঁজ খবর না রেখে সরকারি বেতন তুলে নেন। সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফা এসবের প্রতিবাদ করলে প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফার বদলির ব্যবস্থা করেন।

সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফা এ বদলির বিষয় হাইকোর্টে আপিল করেন এবং হাইকোর্ট তার আপিলের পক্ষে রুল জারি করে কর্মস্থলে বহাল রাখেন। এ কারণেই প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহার মুনমুন ক্ষিপ্ত হয়ে ভাড়াটে সন্ত্রাসীর সহযোগিতায় স্কুল চলাকালীন সময় সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফার উপরে চড়াও হয়।

একপর্যায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সামনে বাঁশের লাঠি, জিআই পাইপ ও ইট দিয়ে দুই দফায় মারধর করেন। মারধরের এক পর্যায়ে শিক্ষক গোলাম মোস্তফা অজ্ঞান হয়ে যান। এসময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষক গোলাম মোস্তফার স্ত্রী তাকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে মোস্তফা জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ২৬ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত শিক্ষক বলেন, আমি যদি অন্যায় করে থাকি সেই বিচার মাথা পেতে নেব। আর প্রধান শিক্ষক যদি অনৈতিকভাবে আমাকে সন্ত্রাসী নিযুক্ত করে মারধর করে থাকেন সেই বিচারের প্রত্যাশী আমি।

ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে না আসার বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহানাজ আক্তার বলেন, সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফার ওপর অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলার কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা ভয় পেয়ে স্কুলে আসেনা।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহার মুনমুনের মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

এদিকে, স্থানীয় জনসাধারণ ও ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষকের অপসারণ ও সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফার ওপর সন্ত্রাসী হামলার দৃষ্টান্তমূলক বিচারের জোর দাবি জানান।

বরগুনা জেলা প্রাইমারি শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) এমএম মিজানুর রহমান জানান, প্রশাসনিকভাবে তাকে বদলি করা হয়েছে। তাছাড়া সে রুল জারি করে তার বদলি স্থগিতের কোনো প্রমাণ আমাদের দেখাতে পারেননি। শিক্ষার্থীরা যদি স্কুলে না আসে তাহলে আমরা কি করতে পারি।

এশিয়াবিডি/ডেস্ক/সাইফ

আরও সংবাদ