তরমুজ চাষিরা দিশেহারা
করোনা পরিস্থিতি আর বৈরী আবহাওয়া- দুই কারণে ঝালকাঠির তরমুজ ও বাঙ্গি চাষিরা এখন চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছেন।
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে লক-ডাউনের কারণে যানবাহন ও হাটবাজার বন্ধ থাকায় এমনিতেই কোথাও ক্ষেতের এসব তরমুজ ও বাঙ্গি সরবরাহ সম্ভব হচ্ছিল না। এরপর বিরূপ আবহাওয়ায় কয়েক দিন আগের শিলাবৃষ্টিতে বাড়তি বেদনা যোগ হয়েছে চাষিদের।
অনেক চাষিই বেসরকারি ঋণদান প্রতিষ্ঠান থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে এখন আসল টাকা পরিশোধ করতেই হিমশিম খাচ্ছেন। অন্যদিকে বাজারজাতের সুযোগ না থাকায় পাইকাররাও ক্ষেতে আসছেন না । তাই ক্ষেতে থেকেই নস্ট হয়ে যাচ্ছে তরমুজ ও বাঙ্গি। নিজেরাও বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে না পারায়
চাষিরা এখন চরম হতাশ। ধারদেনা করে পুঁজি খাটিয়ে সর্বস্বান্ত হওয়ার শঙ্কায় দিন কাটছে তাদের।
এ বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে সরকারি সহায়তা চেয়েছেন এসব তরমুজ চাষি।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঝালকাঠি জেলায় এবার ১৬ হেক্টর জমিতে তরমুজ ও ৪১ হেক্টর জমিতে বাঙ্গির আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ৪ হেক্টরে তরমুজ ও ৪ হেক্টরে বাঙ্গি, নলছিটি উপজেলায় ৫ হেক্টরে তরমুজ ও ৭ হেক্টরে বাঙ্গি, রাজাপুর উপজেলায় ৭ হেক্টরে তরমুজ ও ২০ হেক্টরে বাঙ্গি, কাঠালিয়া উপজেলায় তরমুজের চাষ না হলেও ১০ হেক্টরে বাঙ্গির চাষ করা হয়েছে।
কোনো কোনো বছর ঝড় বৃষ্টিতে ফসল কিছুটা নষ্ট হলেও এবারের মতো এমন বিপর্যয় কখনো হয়নি।
তরমুজ চাষি সাদ্দাম হোসেন জানান, তার ক্ষেতে যে তরমুজ হয়েছে, সেগুলো বিক্রির উপযোগী হতেই করোনাভাইরাসের কারণে সারা দেশ অচল হয়ে পড়েছে। বিক্রির সুযোগ নেই। খেতের তরমুজ খেতেই নষ্ট হচ্ছে।
আরেক তরমুজ চাষি লাল মিয়া জানান, তিনি ১ টাকার তরমুজও বিক্রি করতে পারেননি। একই অবস্থা অন্য চাষিদেরও।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ফজলুল হক মিয়া করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে তরমুজ চাষিদের বিপাকে পড়ার কথা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘কৃষকের সার্বিক সহযোগিতায় কৃষি বিভাগ তাদের পাশে রয়েছে। সরকারি প্রণোদনার ব্যবস্থা আসলে যথানিয়মে প্রকৃত চাষিদের তা দেয়া হবে।’
এশিয়াবিডি/ডেস্ক/সাইফ

