জনগন ক্ষমতার মালিক ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী শব্দ দুটি কেউ ভুলবেননা
মিথ্যা প্রচারনা অপরাধ।আমরাও বিশ্বাস করিনা মন্ত্রীপুত্র বা মন্ত্রী, শীর্ষ কর্মকর্তারা কোনো অসৎ কর্মকান্ডে জড়িত হতে পারেন।এমন মহাদুঃসময়েতো নয়ই।কিন্তু তিনজন স্বাস্হ্য মন্ত্রীর জমানায় যেখানে ধারাবাহিক স্বাস্হ্যখাতে ভয়াবহ সব দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে,যে সব দূর্নীতির সত্য সংবাদ দিনের পর দিন প্রকাশ হচ্ছে, সংসদেও এ নিয়ে অনেক বিতর্ক, সেখানে কোন খবর প্রচার হলে সত্য মিথ্যা যাচাই না করেই মানুষ বিশ্বাস করছে। কারন প্রভাবশালী শীর্ষ পর্যায়ের পৃষ্টপোষকতা বা সমর্থন সহযোগিতা ছাড়া এতো বড় বড় দূর্নীতির ঘটনা সম্ভব নয়।ঔষধাগার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পরিস্কার করে ভালোই করেছে, তবে করোনা পরবর্তীকালে নিশ্চয় স্বাস্হ্যখাতের সকল অভিযোগ তদন্ত করা যাবে, এখন যুদ্ব মোকাবেলাই বড়।বিভেদ বিতর্ক নয়।দক্ষতা প্রমান করে সফল হওয়াই চ্যালেন্জ।ব্যর্থ হলেই বরখাস্ত হওয়া উচিত।দেশে দেশে হচ্ছে।
কিন্তু মাস্ক এন৯৫ প্যাকেটে সাধারন সস্তা জাল মাস্ক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জেএমআইর এই অপরাধকে ‘ভুলবশত’ বলে সার্টিফিকেট দেয়া কোনক্রমেই গ্রহনযোগ্য নয়।জেএমআইর লাইসেন্স বাতিল,সমুদয় বিলপ্রদান বন্ধ রেখে শাস্তিমূলক ব্যবস্হা গ্রহন করার কি প্রয়োজন ছিলোনা? সেটি করা হয়নি কেনো?এতে নানামুখী সন্দেহ সংশয় প্রশ্ন বাড়বে।সংসদীয় শাসন ব্যবস্হায় সংদীয় তদন্ত কমিটিও হতে পারে যে কোন অভিযোগ এলে।স্বাস্হ্যমন্ত্রনালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্হায়ী কমিটির ও এ বিষয়টি দেখা উচিত।
ঔষধাগারের বিজ্ঞপ্তিই যথেষ্ট নয়।এ বিষয় আরো খোলাসা হওয়া উচিত।এখানে শত্রুপক্ষ মিত্রপক্ষ বলে কিছু নেই। করোনার মতোন ভয়ংকর মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই।করোনায় যে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন।সেখানে আক্রান্ত মানুষদের বাঁচানোর লড়াইয়ে চিকিৎসক, নার্স,টেকনোলজিস্ট থেকে অ্যাম্বুলেন্স চালক পর্যন্ত প্রতিটি স্বাস্হ্য সেবায় নিবেদিত কর্মির সুরক্ষা নিশ্চিত করা দরকার।আমাদের অনেক ডাক্তার নার্স সহ স্বাস্হ্য কর্মি আক্রান্ত।তাদের যে ব্রান্ডেরই হোক নিরাপদ আন্তার্জাতিক মানের মাস্ক পিপিই দেয়া দরকার।
জেএমআই ভুল বশত এন৯৫ মাস্কের প্যাকেটে সস্তা সাধারন মাস্ক দিয়েছে এটা আমরা বিশ্বাস করবো কেনো, কোনো ব্যক্তির কথায়? ৩৭লাখে পর্দা কিনেনি অপারেশন থিয়েটারের? ৫হাজার টাকার বই কেনা হয়নি ৮৫হাজার টাকায়? সরকারি হাসপাতালে মেশিন সরবরাহে সাগর চুরি হয়নি?তাহলে অভিযোগ উঠলে তদন্ত দরকার।কেউ ধুয়া তুলসিপাতা এটা মানুষ মনে করেনা।জেএমআই যেখানে ৭০ভাগ সরন্জাম সরবরাহ করে বলে খবর এসেছে গনমাধ্যমে সেখানে অবশ্যই তাদের পৃষ্টপোষক ক্ষমতাধররাই। এতো বড় অপরাধ তারা ভুলবশত করেছে মানবো কেনো তদন্ত ছাড়া? মুনাফা যেখানে দু:সময়ে নিত্য পন্য মজুদে দাম বাড়িয়ে লুটছে একদল, সেখানে সস্তা মাস্ক সরবরাহ করে তারাও মুনাফা লুটতে চেয়েছে-এমনটা অস্বীকার করার সূযোগ কই? অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা গ্রহন করা দরকার।নয় সেটাই মনে হবে ডালমে কুচ কালা হ্যায়।
সত্যকে যখন চাপা দেয়া হয় তখন মনে হয় অনেককেই রক্ষা করা হয়,আর সত্যকে চাপা দিতে থাকলে,কার্যকর ব্যবস্হা গ্রহন না করলে গুজব বা মিথ্যাচারও ভয়ংকর সত্যের মতোন মানুষের কাছে উঠে আসে।তখন সর্বনাশ আসে।অনেক নিরপরাধ মানুষের ইমেজ ও নষ্ট হয়।স্বাস্হ্যখাতের ধারাবাহিক দুর্নীতির অভিযোগে মন্ত্রনালয় কোথায় কখন অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্হা গ্রহন করেছে?যা হচ্ছে দুদকের হাত ধরেই হচ্ছে।সেখানে শীর্ষপর্যায়ের জড়িতরা কি বিপদে পরছেন? না টিকাদার আর হাসপাতালের সিভিল সার্জন ও কমিটিতে রেখে সই নেয়া ডাক্তার?
বিসিএস ৩৯ তম ব্যাচের ডা. আবু তাহের দুদিন আগে ফেসবুকে লিখেছেন যে গত এক মাসে তিনি হাসপাতালের শতাধিক অপারেশন করেছেন। নিজের পকেটের টাকা দিয়ে বাজার থেকে মাস্ক কিনে ব্যবহার করেছেন। কিন্তু স্বাস্থ্য সচিব প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন অত্যাধুনিক জীবাণু প্রতিরোধী এন৯৫, কে৯৫, এফএফপি২, মাস্ক ডাক্তারদেরকে সরবরাহ করেছেন; যা ডাহা মিথ্যা। নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল থেকে যেসব মস্ক সরবরাহ করা হয়েছে তা অত্যন্ত নিম্ন মানের। এ নিয়ে স্বাস্থ্য সচিব মিথ্যাচার করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে এরকম অনেক মিথ্যা প্রস্তুতির নাটক সাজিয়ে হাজার কোটি টাকা লোপাট করছেন কিছু লুটেরার দল।
এই ঘটনায় কারণ দর্শানোর জন্য শনিবার দুপুরে আবু তাহেরকে নোটিশ দেওয়া হয়। আগামী তিন দিনের মধ্যে তাকে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ডা. আবু তাহের বলেন, ‘আমি প্রকৃত সত্য তুলে ধরেছি। গত এক মাসে হাসপাতালে শতাধিক অপারেশন করেছি। আমাকে মানসম্মত মাস্ক বা পিপিই হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা হয়নি। অথচ স্বাস্থ্য সচিব প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলেছেন পর্যাপ্ত পরিমাণে এন৯৫, কে৯৫, পিপিএফ২ মাস্ক হাসপাতালগুলোতে মজুদ আছে। তাহলে এগুলো গেল কোথায়?
তিনি আরও বলেন, এই বক্তব্যের জন্য তিনি মোটেও অনুতপ্ত নন। দেশের একজন নাগরিক হিসেবে তিনি সত্য ঘটনা তুলে ধরেছেন। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তিনি নোটিশের জবাব দিবেন’।
আমরা প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সগুলি দেখেছি।প্রধানমন্ত্রী যতো সমস্যা জানতে চেয়েছেন ততই সবাই সব ঠিক আছে, পূর্নপ্রস্তুতি আছে বলেছেন।বড় কর্তারা চেয়েছেন ধামাচাপা দিতে।নারায়নগন্জে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী একজন তরুন সরকারি চিকিৎসকের মুখে সমস্যা শুনে বিস্মিত হন।সেখানেও বড় কর্তাদের চেহারা দেখা গেছে।প্রধানমন্ত্রী সত্য জানতে চান।সাহসী সৎ দেশপ্রমিকরাই সত্য বলেন।ব্যর্থ চাটুকার অযোগ্য অসৎরাই সত্যকে ভয় পায়।মানুষের আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাতেই আস্হা বিশ্বাস পরম নির্ভরতা। তিনি সাহসের সাথে রাষ্ট্রনায়োকিচিত নেতৃত্বে সমাধান দিচ্ছেন।প্রনোদনায় অর্থনীতি রক্ষার পরিকল্পনাই নেননি সত সামনে কি সেটা জানিয়ে মানুষকে সতর্ক করেছেন।কি ককরতে হবে তাও বলেছেন।৫কোটি মানুষের খাবারের দায়িত্ব নিয়েছেন।
মন্ত্রী গেলে ভালো মন্ত্রীই পাওয়া যাবে, এসব বড় কর্তা গেলে আরও দক্ষ কর্তা মিলবে।কিন্তু চিকিৎসক হারালে মহামারী আক্রান্ত মানুষের জীবন বিপন্ন হবে।আর কর্তারা চাকরি গেলে কিছু করতে পারবেননা।চিকিৎসকরা চাকরি গেলে দেশ বিদেশ কাজ করে খেতে পারবে।খালি কতৃত্ব দেখাবেন না।জনগন ক্ষমতার মালিক ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী শব্দ
লেখকঃ পীর হাবিবুর রহমান
নির্বাহী সম্পাক বাংলাদেশ প্রতিদিন
এশিয়াবিডি/ডেস্ক/কামরান

