বালাগঞ্জে চরম উত্তেজনা!

বালাগঞ্জে বিরোধপূর্ণ জমির দখল নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এতে যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, বালাগঞ্জ উপজেলার দেওয়ানবাজার ইউনিয়নের নশিওরপুর মৌজার অন্তর্ভুক্ত ১৬ শতাংশ আউশ শ্রেণীর জমির মালিকানার দাবী নিয়ে স্থানীয় দুটি পক্ষের মধ্যে সৃস্ট বিরোধ আপোষ নিস্পত্তি প্রক্রিয়াধীন থাকা অবস্থায় একটি পক্ষ জমি দখলে নিয়ে চাষাবাদের চেষ্টা করছে। অপর পক্ষ বিরোধ নিস্পত্তির পূর্বে জমি দখল মুক্ত রাখতে তৎপর থাকায় সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় আলাপুর গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী নজরুল ইসলাম ১৯৮৬ সালে নশিওরপুর গ্রামের জনৈক রাশিদ আলীর নিকট থেকে নশিওরপুর মৌজার অন্তর্ভুক্ত ১৬ শতাংশ আউশ শ্রেণীর জমি ক্রয় করে ভোগ-ব্যবহার করে আসছেন। গত বছরের ২৫ মে প্রবাসী নজরুল ইসলামের স্বজন মো. ফারুক মিয়া জমিতে আউশ ধানের চারা রোপন করেন। চারা রোপনের পর দিন নশিওরপুর গ্রামের রফিক মিয়ার পুত্র মুজিবুর রহমান রিপন ও তার লোকজন সদ্য রোপন করা চারা ট্রাক্টর দিয়ে মাড়িয়ে দিয়ে জমি ক্রয় সূত্রে তাদের মালিকানাধীন বলে দাবী করেন।

এসময় দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ২১ জন লোক আহত হয়েছিলেন।

এনিয়ে বালাগঞ্জ থানায় মামলা পাল্টা মামলা দায়ের করা হয়েছিল।

তৎকালীন সময়ে স্থানীয় মুরব্বিয়ানরা সৃস্ট বিরোধ আপোষ নিস্পত্তির জন্য দুই পক্ষকে আহবান জানান। এতে উভয় পক্ষ সম্মতি প্রদান করেন এবং জমির মালিকানার কাগজ পত্র মুরব্বীদের কাছে জমা দেন ।

মুরুব্বীরা সংশ্লিস্টদের মাধ্যমে জমির মালিকানার কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে প্রকৃত মালিক পক্ষকে সমজিয়ে দিতে বিরোধ আপোষ নিস্পত্তির ব্যবস্থা করেন।

বিরোধ নিস্পত্তি প্রক্রিয়া চলমান থাকা অবস্থায় গত শুক্রবার বিকেলে মুজিবুর রহমান রিপন ট্রাকটার দিয়ে জমিতে হাল চাষের চেষ্টা করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী নজরুল ইসলামের স্বজনরা মুজিবুর রহমানকে চাষাবাদে আপত্তি জানাতে আপোষ নিস্পত্তির সাথে সংশ্লিস্ট মুরব্বিয়ানদের শরনাপন্ন হন । অধিকাংশ মুরব্বিয়ানরা পবিত্র ইতেকাফ পালনে থাকায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসতে পারছেন না।

এব্যাপারে নজরুল ইসলামের স্বজন ফয়ছল আহমদ জানান, রমজান মাস পর মুরব্বিয়ানরা প্রকৃত মালিক পক্ষকে জমি সমজিয়ে দিয়ে বিষয়টি আপোষ নিষ্পত্তির কথা রয়েছে।

মুজিবুর রহমান আপোষ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটাতে মুরব্বিয়ানরা পবিত্র ইতেকাফ পালনে থাকার সুযোগে অনাধিকার পূর্বক জমি ভোগ দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

মুজিবুর রহমান জানান, বিষটি মীমাংসার আগ পর্যন্ত জমি চাষাবাদের জন্য তাকে সালিশান মুরব্বিয়ানরা সম্মতি দিয়েছেন।

উক্ত ঘটনার সালিশ সংশ্লিষ্ট মুরব্বি মো. বাবরু মিয়া জানান, বিরোধপূর্ন জমি কোন পক্ষকে ভোগ দখলে দেওয়ার যুক্তি নেই। বিরোধ নিস্পত্তির লক্ষে মুরব্বিয়ানরা জমির মালিকানার কাগজ পত্র ভূমি সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে যাছাই বাছাই করছেন। রমজান মাস পর চূড়ান্ত সিন্ধান্ত নেওয়া হবে।

এব্যাপারে বালাগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ গাজী আতাউর রহমান বলেন, উক্ত বিষয়ে কেউ এখনো থানায় অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এশিয়াবিডি/কামরান/তারেক

আরও সংবাদ