লকডাউনে ভুতুড়ে বিল!

মৌলভীবাজারের রাজনগরে গ্রাহকের ঘাড়ে বিদ্যুৎ বিলের খড়গ চাপিয়ে দিয়েছে রাজনগর পল্লী বিদ্যুৎ। লকডাউনের সময়ে ঘরে বসে মিটার রিডিং লিখে দেয়ায় ও অতিরিক্ত বিলের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। অপরদিকে অতিরিক্ত ইউনিট যোগের অভিযোগ নিয়ে অফিসে গেলেও দেন-দরবার করতে হচ্ছে কর্মকর্তাদের সঙ্গে। তবে রাজনগর পল্লী বিদ্যুতের জিএম বলছেন এভারেজ বিল দিতে গিয়ে অল্প সমস্যা হলেও সঙ্গে সঙ্গে সমাধান করে দেয়া হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সদ্য সাব-জোনাল থেকে জোনাল কার্যালয়ে রূপান্তরিত হওয়া রাজনগর পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা ৫৩ হাজারের উপরে। উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে গত মার্চ মাসে সরকার লকডাউন ঘোষণা করলে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ রিডিং সংগ্রহ করা। ফলে ঘরে বসেই গত তিন মাসের রিডিং লিখে বিল প্রস্তুত করে রাজনগর পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়। একসঙ্গে তিন মাসের মিটার রিডিং দেয়ায় অধিকাংশই মিটারে অতিরিক্ত ইউনিট বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

এমনকি ফেব্রুয়ারি মাসের বিল যেখানে তিন হাজার টাকা সেখানে লকডাউনের সময় বন্ধ থাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরের মাসের বিল মিটারে প্রদর্শিত ইউনিট থেকে বাড়িয়ে অতিরিক্ত ইউনিট যোগ করে দেয়া হয়েছে। ফলে গ্রাহকের ঘাড়ে চেপেছে অতিরিক্ত বিলের বোঝা। এদিকে একসঙ্গে তিন মাসের বিল দেয়ার চাপ, অতিরিক্ত ইউনিট যোগ করে দেয়ায় চাপে পড়া গ্রাহকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। লিখিত অভিযোগ দিচ্ছেন পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ে। অপরদিকে অতিরিক্ত ইউনিটের বিলসহ পরিশোধের জন্য পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তারা গ্রাহকদের চাপ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। গ্রাহকদের আশ্বাস দিচ্ছেন সামনের মাসে সমন্বয় করে নেয়ার।

রাজনগর উপজেলা সদরের ডিড রাইটার আবদুল মুহিত বলেন, তার অফিসে ১০০ টাকা বিল আসে। কিন্তু লকডাউনের কারণে এপ্রিল ও মে মাস অফিস বন্ধ ছিল। এমনকি মেইন সুইচও অফ ছিল। এরপরও প্রায় সাড়ে ৪০০ টাকা বিল ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। রাজনগর উপজেলা সদরের মো. বদরুল ইসলাম বলেন, তার বাসায় একটি মিটারে ব্যবহারের চেয়ে ১০৪ ইউনিটের বিল অতিরিক্ত দেয়া হয়েছে। সমাধানের জন্য তিনি রাজনগর পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ টালবাহানা করছে। ইউনিট কমিয়ে দিচ্ছে না। একই বাসার আব্দুল হান্নান বলেন, তার মিটারে ব্যবহৃত ইউনিটের চেয়ে ১১৮ ইউনিট অতিরিক্ত বিল ধরিয়ে দেয়া হয়েছে।

রাজনগর পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, লকডাউনের কারণে মিটার রিডাররা গ্রাহকের বাড়িতে যেতে পারেনি। সেহতু সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গ্রাহকদের একটি এভারেজ বিল দেয়া হয়েছে। এতে দেখা গেছে অল্পকিছু গ্রাহকের বিলে অতিরিক্ত ইউনিট ধরা হয়েছে। যারা এই অভিযোগ নিয়ে আসছে সঙ্গে সঙ্গে আমরা তার সমাধান করে দিচ্ছি।

এশিয়াবিডি/সারাবাংলা/সোহেল

আরও সংবাদ