কারাগার’কে করোনা হাসপাতাল তৈরী করতে চান আরিফ!

সিলেটে করোনাভাইরাস সংক্রমণ উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যাওয়ার চিকিৎসা ও হাসপাতাল সংকট দেখা দিচ্ছে। নগরীতে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় নির্ধারিত শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে হাতে গোনা কিছু সিট খালি আছে। বেসরকারি নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মাউন্ট এডোরা হাসপাতাল কোভিড-১৯ আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া শুরু করেছে। তবে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে চিকিৎসা ব্যয় নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে সচেতন মহল।

এমন পরিস্থিতিতে নগরীতে ৫শ’ শয্যার হাসপাতালের ব্যবস্থা করতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এক্ষেত্রে নগরীর বন্দরবাজার এলাকার পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারকে হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।

নগরীর উপকণ্ঠ বাদাঘাটে ২০১৮ সালের শেষদিকে নবনির্মিত সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের উদ্বোধনের পর সেখানে বন্দি স্থানান্তর করা হয়। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পুরাতন কারাগারে কিছু কয়েদি এখনও রাখা হয়।

বর্তমানে কয়েদি থাকার পরও পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারকে হাসপাতাল করার প্রস্তাবের যৌক্তিকতা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, এখানে মাত্র ২২ জনের মত বন্দি রয়েছেন। তাদের নতুন কারাগারে সরিয়ে নিলেই হয়ে যায়। এই কারাগারের অবস্থান ও স্থাপনা সুবিধার জন্য এখানে হাসপাতাল করা সহজ। সরকার থেকে অনুমোদন দেওয়া হলে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে হাসপাতালের বেডসহ অন্যান্য কিছু সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে। নতুন নিয়োগকৃত চিকিৎসকদের এখানে দেওয়া যাবে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্যাডে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মেয়র আরিফ উল্লেখ করেন, সিলেটে দ্রুত বেড়ে চলেছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। করোনা চিকিৎসার জন্য এখনই পর্যাপ্ত হাসপাতাল প্রস্তুত করা প্রয়োজন। নতুবা আগামীতে ভয়াবহ পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।

পুরাতন কারাগারে হাসপাতাল স্থাপনের প্রস্তাবনায় মেয়র বলেন, এর ফলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সিলেটের রোগীরা বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।

বর্তমান পরিস্থিতিতে সিলেটে চিকিৎসাজনিত সংকট অনেকাংশেই মোকাবিলা করা সম্ভব হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেন মেয়র। এ ব্যাপারে প্রশ্নের জবাবে মেয়র আরিফ বলেন, পুরাতন কারাগারে সাধারণ রোগীরা থাকবে। আর যাদের জটিলতা বেশি, তাদের শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে।

তিনি বলেন, বিভাগীয় শহর হওয়ায় সিলেটে বাইরের রোগীরাও আসবে। সবার কথা চিন্তা করেই একটি প্রস্তাব দিয়েছি। এখন সরকারের সংশ্লিষ্টরা ব্যবস্থা নেবেন।

মেয়র আরিফ বলেন, বেসরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসায় অনেক খরচ হবে। সবার পক্ষে তা বহন করা সম্ভব হবে না। সরকারকেই দায়িত্ব নিতে হবে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বেসরকারি নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজকে সরকারিভাবে ব্যবহার করলে সবচেয়ে ভালো হয়। সেখানে সবকিছু প্রস্তুত রয়েছে। শুধু সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা করলে সিলেট অঞ্চলের মানুষের করোনা চিকিৎসার সংকট অনেকখানি কেটে যাবে।

প্রসঙ্গত, বুধবার সকাল পর্যন্ত সিলেট বিভাগের চার জেলায় মোট ১ হাজার ৬৯৮ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয় জানিয়েছে। এদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯৮৮ জন সিলেট জেলার; যাদের অধিকাংশই নগরী ও সদর উপজেলার বাসিন্দা।

সিলেট বিভাগে এখন পর্যন্ত ৩৮ জন করোনায় মারা গেছেন এবং সুস্থ হয়েছেন ৪১৫ জন। বর্তমানে চার জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ২৪৫ জন করোনা আক্রান্ত ভর্তি রয়েছেন।

এশিয়াবিডি/ডেস্ক/কামরান

আরও সংবাদ