কানাইঘাটে রুহেলের লালশায় ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা দরিদ্র শাবানা

চোখে মুখে অন্ধকারের ছাপ


কানাইঘাটের লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউপির ৫নং ওয়ার্ডের মনিপুর গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারের মেয়ে শাবানা বেগম (২০) এখন ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। সে একই গ্রামের আব্দুল মতিনের পুত্র বখাটে যুবক রুহেল আহমদ (২৫) লালশার শিকার হয়ে এখন তার চোখে মুখে অন্ধকারের ছাপ। জানা যায়, গত বছরের ১২ নভেম্বর মনিপুর গ্রামের বশির উদ্দিনের মেয়ে শাবানা বেগম বাড়ীর পার্শের সবজি বাগান থেকে সবজি আনতে গেলে সেখানে দিনে দুপুরে দা- চাকুর ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষন করে একই গ্রামের আব্দুল মতিনের পুত্র রুহেল আহমদ। ধর্ষনের পর রুহেল কাউকে না বলার জন্য অস্ত্রের ভয় দেখায় শাবানাকে। এতে শাবানা ভয়ে পরিবারের কাউকে ধর্ষনের ঘটনাটি বলতে সাহস পায়নি। এভাবে কয়েক দফা রুহেলের লালসার শিকার হয় শাবানা। ঘটনাটি গ্রামে জানাজানি হওয়ার পর শাবানা অসুস্থতাবোধ করলে সে পুরো বিষয়টি খুলে বলে তার পরিবারের সবার কাছে।

এদিকে শাবানার পিতা বশির উদ্দিন এ অবস্থায় অসহায় হয়ে গ্রামের মাতব্বরদের কাছে ফরিয়াদ দিয়ে বিচার প্রার্থী হলে। গ্রামের মাতব্বররা দরিদ্র বশির উদ্দিনের পরিবারের এ ফরিয়াদটি আমলে নেয়নি। তাই বাধ্য হয়ে অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে শাবানার পিতা বশির উদ্দিন ধারা ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩ এর ৯ (১)। ৩০ ধারা মোতাবেক কানাইঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। থানার মামলা নং- ১৫, তারিখ- ২৫/০৬/২০২০ইং। এ মামলায় রুহেলের পিতা আব্দুল মতিন, মাতা দিলারা বেগম সহ একই গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের পুত্র ডালিম ও পাশ্ববর্তী সাতবাঁক ইউপির চরিপাড়া গ্রামের মনাই মিয়ার পুত্র আব্দুল হাকিমকে আসামী করা হয়।

এবিষয়ে আলাপকালে শাবানার পিতা বশির উদ্দিন বলেন, আমার মেয়েকে মনিপুর গ্রামের আব্দুল মতিনের পুত্র লম্পট রুহেল আহমদ গত বছরের ১২ নভেম্বর দুপুর অনুমান ১২টায় আমার বাড়ীর উত্তরে সবজী বাগানে জোরপূবর্ক দা-চাকুর ভয় দেখিয়ে ধর্ষন করে। পরে আমি গ্রামবাসীকে বিষয়টি অবগত করলে গ্রামের মুরব্বীয়ানরা আমার সু-বিচার করে দেয়নি। পরে আমি কানাইঘাট থানায় মামলা দায়ের করলে অন্যান্য বিবাদীরা আমার মেয়েকে রুহেলের সাথে বিবাহ দিবে বলিয়া আলোচনা করে। কিন্তু অধ্যাবদি পর্যন্ত আমার মেয়েকে রুহেলের সাথে বিবাহ না দিয়ে উল্টা আসামী পক্ষের লোকজনেরা মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য আমার উপর চাপ সৃষ্টি করছে।

এবিষয়ে আলাপকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কানাইঘাট থানার এসআই লিটন দাস বলেন, মনিপুর গ্রামের বসির উদ্দিনের মেয়ে শাবানাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে রুহেল আহমদ নামে একটি ছেলে ধর্ষন করেছে মর্মে কানাইঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাটির তদন্ত চলছে। মামলায় রুহেল আহমদের পিতা মাতা সহ আরো কয়েকজন আসামী রয়েছেন। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

সাবেক ইউপি সদস্য মনিপুর গ্রামের বাসিন্দা আফতাব উদ্দিন বলেন, মনিপুর গ্রামের বশির উদ্দিনের মেয়ে শাবানার ধর্ষনকারী রুহেল আহমদ সহ যারা এ ঘটনায় বিভিন্ন ভাবে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানাচ্ছি।
ইউপি সদস্য মিছবাউল ইসলাম বলেন, শাবানার পিতা বশির উদ্দিনের কাছ থেকে তার মেয়ে শাবানাকে একই গ্রামের রুহেল আহমদ জোরপূর্বক ধর্ষন করেছে বলে শুনেছি। পরে বাদী-বিবাদী উভয় পরিবারের সাথে আলোচনা করে রুহেলের সাথে শাবানার বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিলো। পরে রুহেল রাজি না হওয়ায় উক্ত ঘটনার মিমাংসা হয়নি।

এশিয়াবিডি/কামরান/আলিম 
আরও সংবাদ