সিলেট করোনা আইসোলেশন সেন্টারের পাশেই পশুর হাট, ক্ষুদ্ধ নগরবাসী

করোনা আতঙ্কের মধ্যেই সিলেট সিটি করপোরেশন সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে এবার বসবে কোরবানির পশুর হাট। সিলেটের করোনা আইসোলেশন সেন্টার নগরীর চৌহাট্টাস্থ শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতাল। সেই হাসপাতাল থেকে ১০ মিটার দুরত্বের সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ। আর এতে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন নগরবাসী।

স্থানীয়রা বলছেন, করোনার আইসোলেশন সেন্টারের পাশে পশুর হাট বসালে সিলেটের করোনা পরিস্থিতি ভয়ংকর রূপ ধারণ করতে পারে। এছাড়া আলিয়া মাদ্রাসা এলকায় রয়েছে প্রায় অর্শতাধিক হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এ অবস্থায় আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে পশুর হাট বসালে তার প্রভাব পড়বে চিকিৎসা নিতে আসা সেবাপ্রত্যাশীদের মাঝে।

সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাঠের পশ্চিম পাশে ২০ থেকে ৩০ মিটার এলাকার ভেতরে রয়েছে মহানগর হাসপাতাল, ক্রিসেন্ট ব্লাড ব্যাংক, প্লাজমা, প্লাটিলেট, রেড সেল, সিটি পলি ক্লিনিক ও শিশু হাসপাতাল, পাইওনিয়ার হাসপাতাল, গ্রীনভিউ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ওয়েল কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ল্যাব ডেল্টা ডায়াগনস্টিক ও ক্যান্সার নির্ণয় সেন্টার। মাঠের দক্ষিণ পাশে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতাল, করোনা আইসোলেশন সেন্টার। এছাড়া শাহজালাল মাজার দরগার মিনারের পাশে রয়েছে মেডিএইড হার্ট সেন্টার ছাড়াও রয়েছে ফার্মেসিসহ নানা প্রতিষ্ঠান।

বাণিজ্যের তুলনায় জনস্বাস্থ্য ও জনস্বার্থ বিবেচনার তাগিদ নগরবাসী ও পরিবেশবিদদের। অন্যান্যবারের মত শহরের মধ্যে না রেখে লোকালয় থেকে দূরে হাট বসানো না হলে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হবে বলে অভিমত তাদের।
জানা যায়, করোনা পরিস্থিতিতে রাজধানী ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে প্রধান প্রধান চলাচল সড়ক ও জনবসতি এড়িয়ে শহরতলীর ফাঁকা স্থানে কোরবানির অস্থায়ী পশুর হাট বসাতে সুপারিশ করেছে সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদুল আজহা আসন্ন। জিলহজ মাসের চাঁদ দেখাসাপেক্ষে আগামী পহেলা আগস্ট ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। এ সময়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী পশুর হাট বসে। এ বছর করোনা মহামারির কারণে হাটগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হবে। এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পরিকল্পিতভাবে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না গেলে করোনা সংক্রমণের অধিক ঝুঁকির শঙ্কা রয়েছে।

সিলেট বিভাগের মধ্যে গত ১৫ এপ্রিল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম মারা যান ওসমানী মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক ডা. মঈন উদ্দিন। সেই থেকে মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়। পরের মাসে পৌঁছায় দুই অঙ্কের কোঠায়। ৮৮ দিন সিলেট বিভাগে শতাধিক মৃত্যু হয়েছে।

রবিবার (১২ জুলাই) পর্যন্ত সিলেট বিভাগে করোনায় মৃতের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১০১ জনে। বিভাগে প্রতিদিন আক্রান্তের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, স্বাস্থ্য বিধি মেনে টিলাগড়ে এমসি কলেজ মাঠ, সরকারি আলিয়া মাদরাসা ময়দান আর দক্ষিণ সুরমায় অবস্থিত ট্রাক টার্মিনালে কোরবানির পশু বেচাকেনার জন্য জেলা প্রশাসন অনুমতি দিয়েছে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ইজারা দেয়ার জন্য টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিধি মেনেই হাট পরিচালনা করা হবে।

এশিয়াবিডি/কেকে/আদনান
আরও সংবাদ