কোরবানির চামড়া নদীতে ভাসছে, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য
চামড়া শিল্প কদর কমে যাওয়ায় এভাবেই নদীতে ভাসছে চামড়া। প্রতিবছর কেউ না কেউ চামড়া সংগ্রহের জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে চামড়া সংগ্রহ করে কিন্তু এবার সেটা না হওয়ায় মৌলভীবাজারের জুড়ীতে কুরবানির পশুর চামড়া নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য।
ঈদের ২য় দিন রোববার বিকেলে জুড়ী নদীতে গিয়ে চামড়া ভাসতে দেখা গেছে এবং সেটা গিয়ে হাকালুকি হাওরে পতিত হচ্ছে।
কেউ খোলামেলা ভাবে এবং কেউ আবার বস্তাবন্দি করে নদীতে ফেলেছেন।
নদীর পাশ্ববর্তী বাসিন্দা মমিনুল হক শাওন বলেন, নদীতে ফেলে দেয়ার কারণে নদী দূষিত হচ্ছে। কিন্তু আমাদের যে অন্য কোনো উপায় নেই। প্রশাসন থেকেও বর্জ্য অপসারণের কোনো ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
কথা হয় বেলাগাও এলাকার বাসিন্দা রাব্বি এর সাথে। তিনি বলেন, আমরা একদিন অপেক্ষা করেছি, কেউ চামড়া নিতে আসেনি। ধীরে ধীরে চামড়া থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে সেজন্য নদীতে ফেলে দেই। আমাদের এখানে আবার পুঁতে রাখার মত জায়গাও নেই। কারন এলাকা বা বাড়ীর পাশেপাশে শুধু পানি আর পানি।
এতে চামড়া ব্যবসায়ীরা যেমন লোকসানের মুখোমুখি হচ্ছেন তেমনি নদীতে চামড়া ফেলার কারণে নদী ও হাকালুকি হাওরের পানি মারাত্মক দূষিত হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী জায়ফরনগর ইউনিয়নের বেলাগাঁও মামুনুর রশিদ দুপুর একটায় জানান, জুড়ী নদীর শাখা কন্টিনালা দিয়ে রোববার সকাল থেকেই অনেক চামড়া ভেসে যেতে দেখা গেছে।
অনেকে আবার বিক্রি করতে না পেরে কুরবানি দেওয়া পশুর চামড়া মাটিতে পুতে ফেলেছেন।
উপজেলার ৩ং পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের ইউনিয়নের ভবানীগঞ্জ বাজারের দেওয়ান মারজান মেহেদী জানান, প্রতি বছর দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার অর্থ যোগাতে বিভিন্ন এতিমখানা, মাদরাসা ও সংগঠন চামড়া সংগ্রহ করে নিয়ে যেত। এবার কেউ নিতে আসেনি তাই আমাদের কুরবানির পশুর চামড়া মাটিতে পুতে ফেলেছি।
জুড়ীর ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়ী শিমুল আহমদ জানান, এবার আমি ৩৪টি বড় গরুর চামড়া কিনে মাত্র ৫ হাজার ৫শ’ টাকায় বিক্রি করেছি। আগে যেখানে প্রতিটি বড় গরুর চামড়া ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা বিক্রি করা যেত সেই একই চামড়া বর্তমানে ১শ’ টাকায় বিক্রি করা যাচ্ছে না।
এশিয়াবিডি/ডেস্ক/মারুফ

