অণুগল্পঃ ‘বৃদ্ধ’
সকাল সকাল মর্নিংওয়াকে যাওয়া রাতুলের বরাবরই অভ্যাস। যথারীতি আজও বেরিয়েছে। কিছুটা যাওয়ার পর তার সঙ্গে অমর এসে যোগ দেয়। তারপর দু’জনে হাঁটতে হাঁটতে জীবনের সুখ দুঃখের কথা বলতে বলতে অনেকটা পথ একসাথে যায়। আবার ফিরে আসে একইভাবে। এইভাবে চলে আসছে আজ বছর কুড়ি প্রায়। খুব একটা এই নিয়মের ব্যতিক্রম হয়না কখনও। অমরের বাড়ির কাছাকাছি গেলেই গলি দিয়েই তাকে বেরিয়ে আসতে দেখত। কিন্তু আজ অনেকক্ষণ হয়ে গেল অমরের দেখা নেই।
রাতুলের মনটা হঠাৎ যেন কেমন করে উঠলো। ঢুকে পড়ল ডান দিকের গলিতে। অমরের বাসার সামনে এসে দাঁড়াল। দরজাটা বাহির দিক থেকে তালা দেওয়া। রাতুল ভাবনায় পড়ে গেল- চিরকুমার অমর এ বেলায় আবার কোথায় গেল।
রাতুল তার ফোনটা বাসায় ফেলে রেখে এসেছে। তাই এ মুহূর্তে অমরের সাথে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হলো না। কিন্তু মনটা কেন যেন বারবার কুহু গাইছে। আজকে হাঁটা বাতিল করে সে বাসায় ফিরে এলো। বাসায় ঢুকেই অমরকে ফোন দিল। কিন্তু অমরের ফোনটা বন্ধ!
অমর হয়তো কোন কাজে বাহিরে গেছে। হয়তো তার ফোনে চার্জ নাই। হয়তো তার ফোনটা নষ্ট হয়ে গেছে। এ রকম হাজার হয়তো এর মাঝেও অজানা কিছু একটা রাতুলকে অস্তির করে তুললো। অতঃপর রাতুল পুলিশ স্টেশনে গেল।
পুলিশ অবশ্য ঘন্টাখানেকের মধ্যে অমরকে খোঁজে বের করে নিয়ে আসল। অমর হাসপাতালে গিয়েছিল প্রেসারটা একটু বাড়াবাড়ি করছে বলে। রাতুল লজ্জায় মরে। বয়স বাড়লে মানুষ নাকি এমন উল্টাপাল্টা কাজ করে; এমন অস্থির হয়। তাহলে কি রাতুল সত্যি সত্যি বৃদ্ধ হয়ে গেছে!
লেখক- কবি, প্রাবন্ধিক
কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার থেকে।
এশিয়াবিডি/ডেস্ক/কামরান

