কবিতাঃ এই সময়
এই সময়
মোঃ জিয়াউল হক
আমার মা এখন রোগাক্রান্ত
সে ঘুমোতে যাবার আগে জেগে উঠতে চায়,
তার স্বপ্ন এখন ধূসর, করে নিজের সাথে বিদ্রোহ,
সাহস এখন দন্তহীন, স্বপ্নগুলো লুকিয়ে আছে বাটিক আঁচলে।
এখন তার অনেক কিছু দেখা দরকার।
এই তো সেদিন সে খবরের কাগজে পড়লো
শেফালির চিৎকার আর দাতাল শুয়োর,
এখনো শেফালির কাছে ঘুরে কার্তিকের কামার্তো কুকুর।
কুকুরের নখের চিহ্নের চেয়ে বড় চিহ্ন আছে উর্বর মাটিতে,
কারা যেন মাটি খামছে ধরেছে,
পুকুর চুরি আর ভস্মে উচ্ছ্বাসিত শেয়ালগুলো।
বাক স্বাধীনতা এখন নদীর জলে হাবুডুবু
নদীর কিনার থেকে তুমুল হাস্য রসের তামাশা।
আমার মা নেড়েচেড়ে উঠে
রাজ্যপট দেখার সাহস পায় না।
আমার মা ভয়ে কুলুপ এটেছে মুখে
যদি গলা টিপে ওপারে চালান করে দেয়,
তবুও তার বুকে নিরন্তর জ্বালা
ঠোঁটের প্রান্তে এসে থেমে যায় কথা,
খোলা মাঠে কথা বলা ভীষণ মানা।
কবে শেষ হবে দুঃস্বপ্নের তীক্ষ্ণ থাবা দশ আঙ্গুল জুড়ে?
তার হাতের তালু জুড়ে কড়া,
সে এখন দীর্ঘ পরিশ্রান্ত,
যেন কতোকাল পায়নি শীতল পিপাসার জল।
আবার বহুকাল পরে সে কলম ধরেছিলো
কয়েকটি লাইন লিখতে,
তার চোখে দেখেছিলাম বিস্ময়ের ভার ঝরঝর করতে।
তার কয়েকটি লাইন সরল আর গভীর মর্মার্থ
ঠিক এইরকম
” প্রিয় আশাজাগানিয়া,
আমি হাটুগেড়ে বসেছিলাম নিজের সামনে
একটু বেশি লাগছিলো হৃদয়ে, তাই লিখতে বসলাম।
আমার হাঁটুগেড়ে বসা কুর্নিশ নয়,
তবে এটা সত্য
হাঁটুগেড়ে বসে কুর্নিশ করা এখন আমাদের মজ্জাগত স্বভাব,
আমি কোনো বীর মহীয়সী নই
আমার ডাকে পরিবর্তনের সুবাতাস ছড়াবে শেফালির ঘরে,
তবুও অপেক্ষায় থাকি
অপেক্ষার কষ্ট জানি, মৃত্যু নেই, অঘুমের রাতে।
আমি কখন দেখতে পাবো সর্বময় শান্তির গ্রাস?
আর বলবো ” এখন খুব খুব ঘুম পাচ্ছে”।
এশিয়াবিডি/ডেস্ক/কামরান