রহমতে আলম (সাঃ) : ওয়ালাদাত শরীফ (পর্ব এক)
আল্লাহ তায়ালা আমাদের অসংখ্য নিয়ামত দান করেছেন। এই সমস্ত নিয়ামতের মধ্যে অন্যতম প্রধান নিয়ামত হলেন আখেরী জামানার নাবী রাহমাতুল্লীল আলামীন হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। যেই নবীজীর উম্মত আল্লাহ আমাদের করেছেন তাঁর নিজ দয়াগুনে। আল্লাহর যে কোনো নিয়ামত পেয়ে তাঁর শুকরিয়া আদায় করতে হয় এবং এটাই হচ্ছে নিয়ম। এই সমস্ত নিয়ামত পেয়ে শুকরিয়া আদায় করার বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করা হয়। যেমন- কখনও মুখে উচ্চারণ করে, কখনও মনে মনে, কখনও একা একা, কখনও সবাই মিলে, কখনও নফল ইবাদত করে, কখনও দান খায়রাত করে, কখনও রোজা রেখে, কখনও লেখার মাধ্যমে, কখনও মিছিল ও সমাবেশ করে আবার কখনও আনন্দ প্রকাশ করে। আমরা এই সবগুলো পন্থা মোটামুটি মানলেও শেষ পন্থা তথা আনন্দ প্রকাশ করাটা অনেকেই মানি না বা মানতে চাই না। অথচ আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআন শরীফের সূরা ইউনুসের ৫৭ ও ৫৮ নম্বর আয়াতে বলেছেন- “হে মানব জাতি! তোমাদের কাছে তোমাদের প্রতিপালকের তরফ হতে উপদেশ ও অন্তরের রোগের নিরাময় এবং বিশ্বাসীদের জন্য পথপ্রদর্শক ও করুণা সমাগত হয়েছে। আপনি বলে দিন, এ হল তাঁরই অনুগ্রহ ও করুণায়, সুতরাং এ নিয়েই তাদের আনন্দিত হওয়া উচিত, এটা তারা যা (পার্থিব সম্পদ) সঞ্চয় করছে তা হতে অধিক উত্তম”।
উক্ত আয়াতে কারীমার মধ্যে ‘ফাদ্বলুল্লাহ’ তথা আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে। এর ব্যাখ্যায় হাফিজুল হাদীস আল্লামা জালাল উদ্দিন সুয়ুতী (রঃ) তাহার আদ-দুররুল মানসূরে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর উদ্ধৃতি দিয়ে বর্ণনা করেছেন- “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) এই আয়াতে কারীমার তাফসীরে বলেছেন- এখানে ‘ফাদ্বলুল্লাহ’ বলতে ইলিম এবং রহমত বলতে বুঝানো হয়েছে হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। যেমন আল্লাহ তায়ালা কুরআন শরীফের সূরা আম্বিয়ার ১০৭ নম্বর আয়াতে বলেছেন- “আপনাকে আমি সারা বিশ্ববাসীর জন্য রহমতরূপেই পাঠিয়েছি”। তাফসীরে রুহুল মায়ানীর মধ্যেও এরকম বর্ণনা করেছেন হযরত আল্লামা আবু শায়েখ (রঃ)। তাফসীরে মায়রেফুল কুরআনে হযরত আল্লামা মুফতি শফী (রঃ) এই আয়াতে কারীমার তাফসীরে বলেছেন- মানুষের উচিত হলো আল্লাহর রহমত ও অনুগ্রহকেই প্রকৃত আনন্দের বিষয় মনে করা এবং একমাত্র তাতেই আনন্দিত হওয়া।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমন মানব জাতির জন্য আল্লাহর রহমত ও অনুগ্রহ। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- আমি তো আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত রহমত। (ত্বাবরানী, মুজামুল আওসাত্ম ও মুস্তাদরাকে হাকিম)। সুতরাং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেহেতু আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় নিয়ামত। এবং আল্লাহ নিজেই কুরআন শরীফের সূরা আল-ইমরানের ১০৩ নম্বর আয়াতে বলেছেন- “আর তোমরা সে নিয়ামতের কথা স্বরণ কর, যা তিনি তোমাদের দান করেছেন”। তাই আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমনের দিনকে উপলক্ষ্য করে এই দিন যেকোনো ইবাদত করার পাশাপাশি আলোচনা সভা করা ও আনন্দ প্রকাশ করতেই পারি যেভাবে শরিয়ত সমর্থন করে। আর এই বিষয়ে কুরআন হাদীসের দলিলসহ অনেক দলিল পাওয়া যায়। যেমন-
আল্লাহ নিজেই এই দিনের কথা আলোচনা করেছেন।
সূরা আল-ইমরানের ৮১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেছেন- “স্মরণ করুন! যখন আল্লাহ নবীদের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলেন এই বলে- আমি তোমাদেরকে যে কিতাব ও প্রজ্ঞা দান করেছি তা গ্রহণ কর। অতঃপর তোমাদের কাছে যা আছে তার সমর্থক একজন রাসূল আসবেন। তখন অবশ্যই তোমরা তার প্রতি ঈমান আনবে এবং তাকে সাহায্য করবে। তিনি বলেছিলেন, তোমরা কি স্বীকার করলে এবং এ ব্যাপারে আমার চুক্তি গ্রহণ করলে? তারা বলেছিলেন, স্বীকার করলাম। তিনি বলেছিলেন, তাহলে তোমরা সাক্ষী থেকো, আর আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষী থাকলাম”। আলোচ্য আয়াতের তাফসীরে তাবরানীর মধ্যে এসেছে- হযরত আলী (রাঃ) ও আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তায়ালা সব রাসূলগণের কাছ থেকে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে অঙ্গীকার নেন যে, তারা স্বয়ং যদি তার আমলে জীবিত থাকেন, তবে যেন তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেন তথা ঈমান আনেন এবং তাকে সাহায্য করেন। স্বীয় উম্মতকেও যেন এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়ে যান। সুতরাং এই আয়াতে কারীমা থেকে আমরা পরিষ্কার বুঝলাম যে, স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা রুহ জগতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্মের কথা আলোচনা করেছেন। তাও আবার সমস্ত নবী রাসূলদের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়ে যে, শেষ নবীর সাক্ষাত পেলে উনার প্রতি ঈমান আনতে ও ইসলাম প্রচারে সাহায্য করতে।
ঈসা (আঃ) তাঁর কওমের সাথে আলোচনা করেছেন।
হযরত ঈসা (আঃ) তাঁর কওমের সাথে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্মের আলোচনা করেছেন, এমনকি তিনি তাঁর কওমের কাছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নাম মোবারক আহমদ হবে সেটাও বলে দিয়েছেন। আর এই কথাগুলো আল্লাহ তায়ালা কুরআন শরীফের সূরা ছফ এর ৬ নম্বর আয়াতে বলেছেন- “স্মরণ করুন মরিয়মের পুত্র ঈসা বলেছিলেন, হে বনী ইসরাঈল! আমি তোমাদের কাছে প্রেরিত আল্লাহর রাসূল। আমার সামনে যে তাওরাত আছে, আমি তাকে সত্য কিতাব বলছি এবং আমার পরে আহমাদ নামের একজন রাসূল আসার সু-সংবাদ দিচ্ছি। অতঃপর সে যখন স্পষ্ট প্রমাণাদি নিয়ে এল, তখন তারা বলল, এতো পরিষ্কার এক যাদু”। এখানে ঈসা (আঃ) কর্তৃক আলোচনায় প্রদত্ত সেই রাসূলের নাম বলা হয়েছে আহমদ। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বহু নামের মধ্যে অন্যতম এক নাম হলো আহমদ। এ সম্পর্কে বুখারী ও মুসলিম শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত যুবায়র ইবনে মুতঈম (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- আমার পাঁচটি প্রসিদ্ধ নাম রয়েছে, আমি মুহাম্মাদ, আমি আহমাদ, আমি আল-মাহী আমার দ্বারা আল্লাহ কুফুরি ও শিরককে নিশ্চিহ্ন করে দিবেন। আমি আল-হাশির আমার চারপাশে মানব জাতিকে একত্রিত করা হবে। আমি আল-আক্বিব (সর্বশেষে আগমনকারী)”। এভাবে কুরআন শরীফের বহু আয়াতে কারীমার মধ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আগমনের আগের ও পরের এবং তাঁর মহান শান-মান আলোচনা করা হয়েছে। যেমন- সূরা বাকারার ১২৯, সূরা আল-ইমরানের ১৬৪, সূরা তওবার ১২৮, সূরা ছফের ৬, সূরা মারইয়ামের ২২-২৬ ও ৩৩, সূরা ফাতাহ ৯, সূরা বালাদ ১-৩, সূরা আহযাবের ৫৬, সূরা দ্বোহা ১১ ও সূরা ইনশিরাহ ৪ নম্বর আয়াত সমুহের বিভিন্ন তাফসীর দেখতে পারেন।
ওয়ালাদাত শরীফের আলোচনায় আল্লাহ গৌরব করেন।
সুনানে নাসাঈ ও বায়হাকী শরীফের হাদিসে এসেছে- “হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হযরত মুআবিয়া (রাঃ) বলেছেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হয়ে তাঁর সাহাবীদের এক মজলিসে পৌছলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের এখানে কিসে বসিয়েছে? তারা বললেন, আমরা আল্লাহর স্মরণে এবং তিনি যে আমাদেরকে হিদায়ত দান করেছেন এবং আপনাকে প্রেরণ করে আল্লাহ তায়ালা আমাদের উপর যে ইহসান করেছেন তার শোকর আদায় করার জন্য বসেছি। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, সত্যই কি তোমরা এজন্য এখানে বসেছো? তারা বললেন, আল্লাহর শপথ! আমরা এজন্যই এখানে সমবেত হয়েছি। তিনি বললেন, আমি তোমাদেরকে মিথ্যাবাদী মনে করে তোমাদের থেকে শপথ নিইনি, বরং এজন্য যে, জিবরীল (আঃ) এসে আমাকে সংবাদ দিলেন, আল্লাহ তায়ালা তোমাদের ব্যাপারে ফেরেশতাদের সামনে গৌরব করছেন”।
আশুরার দিন ও বারই রবিউল আওয়াল।
আমরা জানি পবিত্র আশুরার দিন একটি ফজিলতের দিন। এই দিনে আল্লাহর হুকুমে অনেক বড় বড় ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে হযরত মুসা (আঃ) ও তাঁর কওম ফেরাউনের কবল থেকে রেহাই পেয়েছিলেন। এবং সেই দিনটাকে বনি ইসরাঈল বড় সম্মান করত এবং মুসা (আঃ) নিজেই এই দিনে রোজা রেখেছিলেন। যেমন হাদিসের বিভিন্ন কিতাবের মধ্যে পাওয়া যায়। হাদিসের বিভিন্ন কিতাবে এগুলো পাওয়া যায়। আমরা এখানে তিনটি কিতাব থেকে তিনটি হাদিস শরীফ দেখব। তিনটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে।
বুখারী শরীফের হাদিসে এসেছে- “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাদীনায় আগমন করে দেখতে পেলেন যে, ইয়াহুদীগণ আশুরার দিনে রোজা পালন করে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কি ব্যাপার? তোমরা এ দিনে রোজা পালন কর কেন? তারা বলল, এ অতি উত্তম দিন, এ দিনে আল্লাহ তা’লা বনী ইসরাঈলকে তাদের শত্রুর কবল হতে নাজাত দান করেন, ফলে এ দিনে মূসা (আঃ) রোজা পালন করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি তোমাদের অপেক্ষা মূসার অধিক নিকটবর্তী, এরপর তিনি এ দিনে রোজা পালন করেন এবং পালনের নির্দেশ দেন”।
মুসলিম শরীফের হাদিসে এসেছে- “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাদীনায় হিজরত করে ইয়াহূদীদেরকে আশূরার দিন রোজা পালনরত দেখতে পেলেন। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, তোমারা কোন দিনের রোজা পালন করছ, তারা বলল, মহান দিনে আল্লাহ তায়ালা মূসা (আঃ) ও তাঁর সম্প্রদায়কে মুক্তি দিয়েছেন এবং ফেরাউন ও তার কওমকে ডুবিয়ে দিয়েছেন। এরপর মূসা (আঃ) কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার লক্ষ্যে এ দিনে রোজা পালন করেছেন। তাই আমরাও এ দিনে রোজা পালন করছি। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমরা তো তোমাদের থেকে মূসা (আঃ) এর অধিক নিকটবর্তী এবং হাক্বদার। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোজা পালন করলেন এবং পালন করার জন্য সকলকে নির্দেশ দিলেন”।
আবু দাউদ শরীফের হাদিসে এসেছে- “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাদীনায় এসে ইয়াহুদীদের আশুরার দিন রোজা পালনরত পেলেন। তাদেরকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা বললো, এটি একটি মহান দিন, যেদিন মহান আল্লাহ মূসা (আঃ) কে ফেরাউনের উপর বিজয়ী করেছেন। সুতরাং এ মহান দিনের সম্মানার্থে আমরা সওম পালন করি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের চাইতে আমরা মূসা (আঃ) এর বেশি হকদার। অতঃপর তিনি ঐদিন রোজা পালনের নির্দেশ দেন”।
উপরে উল্লিখিত তিনটি হাদিসের দিকে খেয়াল করলে দেখবেন আশুরার দিনে রোজা রাখার তিনটি ভিন্ন কারণ পাওয়া যায়। প্রথম হাদিসে রোজা রাখার কারণ হিসেবে বনী ইসরাঈলের লোকেরা বলেছে এই দিন হলো উত্তম দিন এবং বনী ইসরাঈলদের তাদের শত্রুদের থেকে নাজাত তথা স্বাধীনতা দান করেছেন। দ্বিতীয় হাদিসে এসেছে তারা বলেছে এই দিন মহান দিন ও মূসা (আঃ) আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের কথা বলেছে। তৃতীয় হাদিসে এসেছে মহান দিন ও বিজয় দানের কথা। সুতরাং আমরা পরিষ্কার বুঝলাম যে, কোন উত্তম দিনে, কোন মহান দিনে, কোন বিজয়ের দিনে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার পাশাপাশি রোজা রেখে এই দিনকে সম্মান জানানো জায়েজ আছে। হযরত মূসা (আঃ) ও নবী ইসরাঈল ফেরাউনের কবল থেকে নাজাত পেয়ে এই দিনকে যদি তাঁরা উত্তম দিন, মহান দিন, কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দিন ও বিজয়ের দিন বলতে পারে এবং মূসা (আঃ) এর অনুসরণ করে যদি আমাদের নবী রোজা রাখতে পারেন ও রাখার নির্দেশ দেন, তাহলে আমরা কেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমনের দিনকে উত্তম দিন বলতে পারবনা? তারা যদি এই দিন ফেরাউনের কবল থেকে নাজাত পেয়ে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা স্বীকার করার পাশাপাশি রোজা রেখে তা পালন করে, তাহলে আমরা কেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমনের দিনকে পালন করতে পারবনা, যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে আমাদের দোযখের আগুন থেকে নাজাত পাওয়ার রাস্তা বের করে দিলেন। আর তিনির আগমনত ছিল এই কারণেই, যেমন কুরআন শরীফে এসেছে- ‘মুবাশশিরা ওয়া নাযিরা’ তথা সু-সংবাদ দানকারী ও সতর্ককারী। এখানে ‘মুবাশশিরা ওয়া নাযিরা’ এর ব্যাখ্যায় তাফসীরে তাবারী ও বাগভীতে এসেছে- ‘মুবাশশির’ এর মর্মার্থ এই যে, তিনি স্বীয় উম্মতের মধ্য থেকে সৎ ও শরীয়তানুসারী ব্যক্তিবর্গকে জান্নাতের সু-সংবাদ দেন এবং ‘নাযিরা’ এর মর্মার্থ এই যে, তিনি অবাধ্য ও নীতিচ্যুত ব্যক্তিবর্গকে আযাব ও শাস্তির ভয়ও প্রদর্শন করেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই তাঁর ওয়ালাদাত শরীফ পালন করেছেন। এই বিষয়ের আমরা আগামী পর্বে আলোকপাত করব ইনশা আল্লাহ ।
———–চলবে
লেখক: ইমাম ও খতিব ওল্ডহাম জামে মাসজিদ, যুক্তরাজ্য।
এশিয়াবিডি/ডেস্ক/কেকে