রহমতে আলম (সাঃ) : ওয়ালাদাত শরীফ (পর্ব দুই)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে তাঁর ওয়ালাদাত শরীফ পালন করেছেন। হযরত মূসা (আঃ) আশুরার দিনে রোজা রেখে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেন ফেরাউনের কবল থেকে নাজাত পাওয়ার জন্য। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি সোমবার রোজা রাখতেন নিজের ওয়ালাদাত শরীফের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে। যেমন, মুসলিম শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত আবূ ক্বাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে সোমবারের রোজা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ঐদিন আমি আগমন করেছি এবং ঐদিন আমার উপর কুরআন শরীফ নাযিল হয়েছে”।

সুতরাং আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসরণ করে এই দিন রোজা রেখে ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালন করতে পারি। আল্লাহর এমন অনেক মায়ার বান্দা আছেন যারা বছরে একদিন না বরং প্রতি সোমবার রোজা রেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমনের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মহান আল্লাহর কাছে। তিরমিজী শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত মুত্তালিব ইবনে আবী ওয়াদাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হযরত আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে এলেন, মনে হয় তিনি যেন কিছু শুনতে পেয়ে মিম্বারে আরোহন করলেন। অতঃপর বললেন, আমি কে? সাহাবাগণ বললেন, আপনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হউক। তিনি বললেন, আমি মুহাম্মাদ ইবনে আব্দিল্লাহ ইবনে আব্দিল মুত্তালিব। আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি কুলকে সৃষ্টি করে আমাকে উত্তম দলের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তিনি উত্তম দলকে বিভিন্ন গোত্রে বিভক্ত করে আমাকে উত্তম গোত্রের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তিনি উত্তম গোত্রকে বিভিন্ন ঘরে বিভক্ত করে আমাকে উত্তম ঘর ও উত্তম বংশের অন্তর্ভুক্ত করেছেন”।

সাহাবী হযরত হাসান বিন সাবিত (রাঃ) এর কবিতা।

সহীহ বুখারী ও তিরমিজী শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত হাসানের জন্য মাসজিদে একটা মিম্বার রেখে দিতেন। তিনি তাতে দাঁড়িয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর গৌরবগাঁথা আবৃত্তি করতেন অথবা তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ থেকে কাফিরদের কটূক্তির জবাব দিতেন। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন- আল্লাহ তায়ালা রূহুল কুদুস জিবরীল আমিন এর মাধ্যমে হাসানকে সহযোগিতা করেন যতক্ষণ তিনি গৌরবগাঁথা আবৃত্তি করেন অথবা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পক্ষ থেকে কাফিরদের তিরস্কারের জবাব দেন”। এখানে উল্লিখিত হাদীস থেকে আমরা পরিষ্কার বুঝলাম যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আলোচনা করা জায়েজ। শুধু জায়েজ না, বরং কোন নাস্তিক মুরতাদ যদি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শানে কোন বেয়াদবী করে তাহলে তার জবাব দেওয়া উম্মত হিসেবে একান্ত কর্তব্য। যা হযরত হাসান (রাঃ) করতেন সরাসরি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে দাঁড়িয়ে। হযরত হাসান বিন সাবিত (রাঃ) এর কবিতার মধ্যে অন্যতম একটি হলো- অর্থ: “আপনার চেয়ে সুন্দর পৃথিবীর কোনো চোখ দেখেনি, আপনার মতো সুন্দর সন্তান কোনো মা জন্ম দেয়নি। আপনাকে সৃষ্টি করা হয়েছে নিখুঁতভাবে, যেন আপনি বলেছ যেভাবে, সেভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে”।

 আবু লাহাবের কবরে পানি পান।

সহীহ বুখারী শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত উরওয়া (রাঃ) বর্ণনা করেন, সুওয়াইবা ছিলেন আবূ লাহাবের দাসী এবং সে তাকে আযাদ করে দিয়েছিল। এরপর সুওয়াইবা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দুধ পান করান। আবূ লাহাব যখন মারা গেল, তার একজন আত্মীয় তাকে স্বপ্নে দেখল যে, সে ভীষণ কষ্টের মধ্যে নিপতিত আছে। তাকে জিজ্ঞেস করল, তোমার সঙ্গে কেমন ব্যবহার করা হয়েছে। আবূ লাহাব বলল, যখন থেকে তোমাদের হতে দূরে আছি, তখন থেকেই ভীষণ কষ্টে আছি। কিন্তু সুওয়াইবাকে আযাদ করার কারণে কিছু পানি পান করতে পারছি”। আবু লাহাব একজন কট্টর কাফির ও চিরস্থায়ী দোযখী হওয়ার পরও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমনের দিন তার দাসীকে মুক্তি দেওয়ার কারণে যদি দয়াল আল্লাহ প্রতি সোমবারে তার কবরে জান্নাতের পানি পান করান তাহলে আমরা যারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উম্মত আছি তারা যদি এই দিনকে সম্মান করি, আল্লাহ কি আমাদের জন্য পরকালে কিছু দিবেন না? অবশ্যই এই বিশ্বাস আমরা রাখতে পারি এর মিনিময় আল্লাহ আমাদের দিবেন।

 আরাফার দিন ও বারই রবিউল আওয়াল।

সূরা মাঈদার ৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন- “আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নিআমত সম্পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য দীন হিসেবে পছন্দ করলাম ইসলামকে”। উক্ত আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন আজ তথা আরাফা দিবসে তোমাদের জন্য তোমাদের দীন পূর্ণাঙ্গ করলাম। এটা হল আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে এ উম্মাতের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত। আল্লাহ তায়ালা ইসলাম দিয়ে আদম (আঃ) সহ অসংখ্য নাবী রাসূল প্রেরণ করেছেন, সে ইসলামকে নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাধ্যমে পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন। এ উম্মাত অন্য কোন দীন বা নাবীর প্রতি মুখাপেক্ষী নয়। এ নাবী শেষ নাবী, তাকে কিয়ামত পর্যন্ত পৃথিবীর সকল মানব ও জিন জাতির জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। অতএব যা ইসলামে হালাল হওয়ার মত তা হালাল করে দেয়া হয়েছে, আর যা হারাম হওয়ার মত তা হারাম করে দেয়া হয়েছে। এরপর হালাল বা হারাম করার কিছুই নেই। আল্লাহ তায়ালা যা দিয়েছেন সবই সত্য এবং পরিপূর্ণ। যেমন সূরা আনআমের ১১৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন- “সত্য ও ন্যায়ের দিক দিয়ে তোমার প্রতিপালকের বাণী পরিপূর্ণ”।

সহীহ বুখারী শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত ত্বারিক ইবনু শিহাব থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইয়াহূদীগণ হযরত ওমর ফারূক (রাঃ) কে বলল যে, আপনারা এমন একটি আয়াত পড়ে থাকেন তা যদি আমাদের মধ্যে নাযিল হত, তবে আমরা সেটাকে ঈদ হিসেবে গ্রহণ করতাম। হযরত ওমর (রাঃ) বললেন, আমি জানি এটা কখন নাযিল হয়েছে, কোথায় নাযিল হয়েছে এবং নাযিলের সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোথায় ছিলেন, আয়াতটি আরাফাতের দিন নাযিল হয়েছিল। আল্লাহর শপথ আমরা সবাই আরাফাতে ছিলাম, সেই আয়াতটি হলো অর্থ: আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করে দিলাম”। সুতরাং ইসলাম ধর্ম পূর্ণতা লাভ করার দিনকে যদি আমরা খুশির দিন হিসেবে ঈদের দিন বলি তাহলে যে নবীর রক্তের মিনিময়ে ইসলাম ধর্ম পূর্ণতা পেল সেই নবীর আগমনের দিনকে আমরা কেন ঈদের দিন হিসেবে পালন করতে পারব না?

 ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের র‌্যালি।

অনেক আছেন কুরআন হাদিসের এই সমস্ত দলিল পাওয়ার পর বা জানার পর বলেন যে, তাহলেত ইদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালন করবেন সোমবার দিনে বা ১২ রবিউল আউয়ালে রোজা রেখে। রোজা না রেখে আপনারা রাস্তায় বের হয়ে র‌্যালি কেন করেন? তাই আমরা সংক্ষেপে র‌্যালি করা যে জায়েজ সে বিষয়ে দুটি ঘটনা আপনাদের স্বরণ করিয়ে দিব ইনশা আল্লাহ।

হযরত ওমর (রাঃ) কেন ফারুক উপাধী পেলেন।

হযরত ওমর ফারুক (রাঃ) এর ইসলাম গ্রহণ করার কাহিনি অনেক হাদীসের কিতাবসহ সিরাতের বিভিন্ন কিতাবেও পাওয়া যায়। তার মধ্যে অন্যতম একটি কিতাব হচ্ছে হাফিজ ইবনুল জাওযী (রহঃ) এর সিফাতুস সাফওয়াহ। সেই কিতাবে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে একটি লম্বা হাদীস বর্ণিত হয়েছে যে, হযরত ওমর (রাঃ) কে তিনি জিজ্ঞেস করেছিলেন কিভাবে ফারুক নাম উপাধি পেলেন। আমরা শুধু শেষ অংশটি আলোচনা করব। হযরত ওমর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাছে এসে যখন ইসলাম কবুল করলেন। তখন ঘরে উপস্থিত সকল সাহাবায়ে কেরাম এমন জোরে তাকবীর ধ্বনি উচ্চারণ করলেন যে তা মাসজিদুল হারামে থাকা লোকজন শুনতে পেলেন। হযরত ওমর (রাঃ) বলেন তখন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললাম- ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমরা কি জীবন মরণ সব সময় সত্যের উপর নই? তিনি বললেন, হ্যাঁ। যার হাতে আমার জীবন তার কসম, তোমাদের জীবন মরণ সব সময় সত্যের উপর। তখন আমি বললাম, তাহলে গোপনীয়তা কেন? যিনি আপনাকে সত্য সহকারে পাঠিয়েছেন তার কসম করে বলছি, অবশ্যই আমরা প্রকাশ্যে বের হবো। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মাঝখানে রেখে দুইটি সারি করা হলো। এক সারির মাথায় হযরত হামযা (রাঃ) ও অন্য সারির মাথায় আমি। আমরা দ্রুত গতিতে মাসজিদে হারামে প্রবেশ করলাম। এই দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ফারুক নাম দিলেন”। এই লম্বা ঘটনা থেকে আমরা বুঝলাম যে সারিবদ্ধ ভাবে রাস্তায় হাঁটা তথা র‌্যালি করা সাহাবায়ে কেরামের আমল ছিল।

 মদিনা শরীফে হিজরতের ঘটনা।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা থেকে হিজরত করে মদিনায় গেলেন। তিনি মদিনায় প্রবেশ করার সময় পুরো মদিনা লোকে লোকারণ্য হয়ে গেল। পথে-ঘাটে, ঘরের ছাদে, এক কথায় মদিনার অলিগলিতে উৎফুল্ল মানুষ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এক নজর দেখার আগ্রহে অধীর ছিল। তখন মদিনার যুবক ও কিশোরের দল মদীনার অলি গলিতে আনন্দ মিছিল বের করেছিল। তারা গভীর প্রেমভরা কন্ঠে গিয়েছিল- অর্থ: “আমাদের কাছে পূর্ণিমার চাঁদের উদয় হয়েছে সানিয়াতুল বেদা হতে। সুতরাং আমাদের জন্য শুকরিয়া আদায় করা আবশ্যক। ( ইমাম বায়হাকী (রহঃ) এর দালাইল কিতাব সহ আরো অনেক কিতাবে এই ঘটনা পাওয়া যায়)।

সর্বোপরি ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালন করা, সে উপলক্ষে আলোচনা সভা করা, দান খয়রাত করা ও রোজা রাখা ও আনন্দ মিছিল করার সহ অনেক দলিল দেওয়া যাবে কুরআন, হাদীস, ইজমা ও কিয়াস দ্বারা। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অনেক বড় বড় ইমাম, মুফতি, মুহাদ্দিসগণ ও মুফাসসিরগন তাদের কিতাবে এগুলো বর্ণনা করেছেন। তাঁরা নিজে আমল করেছেন এবং মুসলিম জাতিকে উৎসাহিত করেছেন ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালন করতে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, যারা মানার নয় তাদের হাজার দলিল দিলেও মানবেনা কারণ সে আবু জেহেলের উত্তরসূরি সেজে আছে। আবু জেহেল হাজার হাজার দলিল নিজের চোখে দেখে ও কানে শুনে সরাসরি রাহমতের নবীকে দেখে ঈমান আনে নাই। আর সাহাবায়ে কেরামে ঈমান এনেছেন একটি দুটি ঘটনা দেখে বা শুনে এমনকি অনেকেই নবীজীর কোন মুযিজা না দেখেও ঈমান এনেছেন। তাই আমরা হাজার নয় সঠিক দলিল একটি পেলেই সাহাবায়ে কেরামের অনুসরণ করে তা আমরা পালন করব।

আল্লাহ তায়ালা তাঁর হাবিব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমনের দিনের উছিলায় আমাদের সবার অন্তরে তাঁর ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মোহব্বাত দান করুন। (আমিন)

লেখক: ইমাম ও খতিব ওল্ডহাম জামে মাসজিদ, যুক্তরাজ্য।

এশিয়াবিডি/ডেস্ক/কামরান 
আরও সংবাদ