কানাইঘাটে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন

মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউপির এক ব্যক্তি তার এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে কানাইঘাট উপজেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেন।
শনিবার (১৪ নভেম্বর) বিকালে কানাইঘাট উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউপির বাখালছড়া গ্রামের রহিম উদ্দিন রমু’র পুত্র আব্দুল জব্বার কানাইঘাট উপজেলা প্রেসক্লাবে এলাকাবাসীকে নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, তার প্রতিপক্ষ একই গ্রামের আব্দুল হান্নানের পুত্র আব্দুল কাদির তাদের বিভিন্ন মামলার আসামী হওয়ার কারণে পরিকল্পিত ভাবে সে ও তার স্বাক্ষীদের উপর ষড়যন্ত্রমূলক ধর্ষণের মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদেরকে নানা ভাবে হয়রানীর চেষ্ঠায় লিপ্ত রয়েছে।
তিনি জানান, গত ১৮ অক্টোবর আমার ছোট ভাই তৌহিদুর রহমান তুতা ও তার স্ত্রী ৫ মাসের অন্তসত্বা রোজিনা আক্তারকে আমার প্রতিপক্ষরা মারপিঠ করলে এনিয়ে কানাইঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করি। মামলা দায়েরের পর আসামীরা মামলা সম্পর্কে অবগত হয়ে গত ২০ অক্টোবর বাখালছড়া গ্রামের শফিকের নেতৃত্বে বাখালছড়া গ্রামের সেলিম উদ্দিন উরফে টাইগার সেলিম, ডালিম আহমদ, আব্দুল করিম, নিজাম উদ্দিন গংরা আমার ছোট ভাই তোতাঁ মিয়ার স্ত্রী ৫ মাসের অন্তস্বত্বা রোজিনা বেগমকে বেদড়ক মারপিট করে। এ সময় শফিকের নেতৃত্বে আব্দুল কাদির আমার বসতঘরে আসবাবপত্র ভেঙ্গে প্রায় ২০ হাজার টাকার ক্ষতিসাধন করে। এসময় খবর পেয়ে আমি বাড়িতে আসিয়া আমার ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীকে মুমূর্ষ অবস্থায় চিকিৎসার জন্য উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় বিবাদীরা আমাকে বাধাগ্রস্থ করে।
এসময় আমি কানাইঘাট থানা পুলিশ নিয়ে আহত অবস্থায় আমার ভাই এবং ভাইয়ের স্ত্রীকে উদ্ধার করে কানাইঘাট হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা সিওমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এতে ২১ অক্টোবর রাতে রোজিনা বেগমের গর্ভপাত হয়। ডাক্তাররা জানিয়েছেন রোজিনা বেগমের প্রচুর রক্তক্ষরণে তাহার জীবন সংকটাপন্ন অবস্থায় আছে। উক্ত ঘটনায় সিলেটের আমলগ্রহণকারী আদালতে কানাইঘাট সিআর মামলা নং- ২৪১/২০২০ইং একটি মামলা দায়ের করি। এতে মামলার আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে গত ০৪ নভেম্বর সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আমি ও আমার মামলার স্বাক্ষী বাখালছড়া গ্রামের বিশিষ্ট মুরব্বী আব্দুস সালাম ও হবিবুর রহমান এর বিরুদ্ধে আব্দুল কাদির বাদী হয়ে তার বোন সুমানা আক্তারকে ধর্ষণের অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করে। সিলেট নারী ও শিশু মোকদ্দমা নং- ৫৫৫/২০২০ইং।
আব্দুল জব্বার বলেন, আমি বা আমার মামলার স্বাক্ষীরা সুমানা আক্তারের ধর্ষণের সাথে জড়িত নয়। আব্দুল কাদির পরিকল্পিতভাবে এই মামলায় আমাদেরকে আসামী করেছে। তারা আমার ছোট ভাই তৌহিদুর রহমান তুতার স্ত্রী রোজিনাকে মারপিঠ করায় তার গর্ভে থাকা অবস্থায় সন্তান মারা যায়। প্রসবের পর মৃত সন্তান জন্ম গ্রহনের ঘটনায় অভিযোগ দায়েরের পর থেকে আমাকে ও আমার স্বাক্ষীগণকে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দিয়ে আব্দুল কাদির হয়রানীর চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, আমি বা আমার স্বাক্ষীগন কেউ এই ধর্ষণ মামলায় জড়িত নয়। তাই সরকারের উর্দ্ধতন মহলের প্রতি আমার অনুরোধ প্রকৃতপক্ষে এই ধর্ষণ মামলায় যারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হউক এবং সঠিকভাবে সরেজমিনে তদন্তের মাধ্যমে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হোক। এতে সরেজমিনে তদন্তের মাধ্যমে যদি আমি বা আমার স্বাক্ষী কেউ জড়িত হওয়ার প্রমান পাওয়া যায় তাহলে আমাদেরকে আইনের আওতায় নেওয়া হউক। অন্যতায় আমাদেরকে অযথা হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান করে বিবাদী আব্দুল কাদির ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে বাখালছড়া গ্রামের বিশিষ্ট মুরব্বী বীর মুক্তিযোদ্ধা সওকত আলী, আকবর আলী, আব্দুল মন্নান, জলাল উদ্দিন, হাবিবুর রহমান, আব্দুস সালাম, মানিকুর রহমান, শফিকুর রহমান, রহিম উদ্দিন রমু, তৌহিদুর রহমান, জাহাঙ্গির হোসেন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।