মালাই চা’য়ে সংসার চলে ৭ পরিবারের
ছোট্ট একটি দোকান। উপরে টিনের চাল। চারিদিকে নাই বেড়া। অথচ এই দোকানেই চা খাওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষজন এসে ভিড় জমাচ্ছেন।
সম্প্রতি গিয়ে দেখা যায়, রাজনগরের বিখ্যাত এই মালাই চা খেতে অনেক দূর থেকে আসছেন পর্যটকেরা। লোক মুখে এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই চায়ের কথা জানতে পেরে পর্যটকরা এখানে আসছেন চায়ের স্বাদ নেয়ার জন্য।
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার চৌধুরী বাজারের শাহ মোস্তফা টি পয়েন্টের মালাই চা সুনাম ছড়িয়েছে অনেক দূর। দুই বছর আগে মালাই চায়ের এই পদ শুরু করেছিলেন ইকবাল আহমদ। অল্প দিনের মধ্যেই তার দোকানের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে। এখন চা-প্রেমীদের পছন্দের ঠিকানা চৌধুরী বাজারের টি পয়েন্ট।
দেশের সিংহভাগ চা উৎপাদন হয় মৌলভীবাজার জেলায়। যে কারণে অন্যান্য জেলার তুলনায় এই জেলায় চায়ের একটা গৌরব ও ঐতিহ্য রয়েছে। যতই রমরমা পানীয় থাকুক, চায়ের কোনো বিকল্প নেই। রাজনগরের এই মালাই চা তার সুনাম কুড়িয়েছে জেলাজুড়ে। চা-প্রেমীদের কাছে এই চায়ের কদর রসনা বিলাসের মতোই।
মালাই চায়ের কারিগর ইকবাল হোসেন বলেন, ‘মালাই চা তৈরি করি খাঁটি গরুর দুধ থেকে। অন্যান্য যে চা তৈরি করি, সেগুলো গরু ও পাউডার দুধের মিশ্রণে। কিন্তু মালাই তৈরি হয় শুধুই গরুর দুধ দিয়ে। প্রতিদিন প্রায় ৪০ লিটার গরুর দুধের প্রয়োজন হয়।’

ইকবাল আরোও বলেন, ‘চা ভালো হওয়ায় একজন খেয়ে আরেকজনের কাছে সুনাম বলেন। এ রকম বাড়তে বাড়তে মোটামুটি একটা পরিচয় হয়ে গেছে। এখন আমি ছাড়া আরও ছয়টা পরিবার চলে আমার এই দোকানের আয় থেকে।’
এলাকার বাসিন্ধা ইমন বলেন, ‘সন্ধ্যার পর এখানে এলেই দেখা যায় মানুষে ভর্তি। কেউ দাঁড়িয়ে চা পান করছেন, কেউ বসে। বলা যায়, জায়গাই পাওয়া যায় না।’
মুন্সিবাজার থেকে আসা রাফছান ও নোমান বলেন, ‘এনিয়ে আমি ৫ বার এসেছি এখানে চা খেতে। এই শীতের মধ্যেও আমি এতদূর থেকে আসি শুধুমাত্র এই চা’য়ের স্বাদ নেয়ার জন্য।’
চা খেতে মৌলভীবাজার থেকে আসা মাজিদ আহমেদ এশিয়াবিডিকে বলেন, ‘শহর থেকে প্রতিদিনই লোকজন আসেন। তারা ফেসবুকে চেকইন দেন যে রাজনগরের চা অনেক সুস্বাদু। এটা জেনেই এখানে আসা। বাস্তবে চা পান করে দেখলাম অনেক মজাদার। ফেসবুকে যে রকম বলা হয়, তার চেয়েও অনেক বেশি সুস্বাদু এই চা।’ সহপাঠি ইমরানেরো বক্তব্য সেইম।
এবিষয়ে রাজনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও মনসুর নগর ইউপি চেয়ারম্যান মিলন বখত বলেন, ‘এটা আমাদের উপজেলার জন্য গর্বের বিষয়। আমি নিজে গিয়েছিলাম পরিদর্শন করতে। দেখেছি বাইরা থেকে মানুষ আসে চা খেতে। খুবই ভালো লেগেছে আমার কাছে।’
এশিয়াবিডি/ডেস্ক/কামরান