সারা দেশের মাঝে করোনা সংক্রমণের শীর্ষে মৌলভীবাজার
জনসমাগম নিষিদ্ধ
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, দেশের ২৯টি জেলা করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে। সে তালিকায় সবার প্রথমেই রয়েছে মৌলভীবাজার।
এই সংক্রমণ রোধে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টার পর জেলার সব দোকানপাট বন্ধ করতে হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানান, স্বাস্থ্যবিধি মানতে আমরা গত কয়েকদিন ধরে জেলাব্যাপী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। আগামীকাল থেকে আমরা আরও কঠোর হব। সন্ধ্যা ৭টার পর সব দোকানপাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দিনের বেলা স্বাস্থ্যবিধি না মানলে প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হবে। বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) থেকে ১৫ দিন সারা জেলায় মাইকিং করে ভ্যাকসিন নেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ দেওয়া হবে।
এদিকে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার জেলায় সব ধরণের জমায়েত নিষিদ্ধ করেছেন।মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া জানিয়েছেন, জেলাব্যপী সবধরণের জমায়েত নিষিদ্ধ। বিয়ে, ওয়াজ, কীর্তন কিছুই করা যাবেনা। এত দিন আমরা স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে প্রচার চালিয়ে আসছিলাম কাল থেকে জেলাব্যাপী আরও গতি বৃদ্ধি করা হবে। সেই সাথে বন্ধ থাকবে সব পর্যটন স্পট।
মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মোর্শেদ রুমি সারা দেশে কোভিড সংক্রমণে মৌলভীবাজার শীর্ষে এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৯০ শতাংশ, সে জায়গায় মৌলভীবাজারে ২২ দশমিক ২০ শতাংশ। গত ১১ মার্চ থেকে আজ ৩১ মার্চ পর্যন্ত ৪১৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এরমধ্যে ৯২ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। মারা গেছেন ২ জন।
সিভিল সার্জন বলেন, মৌলভীবাজার প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা। তাছাড়া মানুষ স্বেচ্ছায় করোনা টেস্ট করতে চান না। হাসপাতালে যারাই আসছেন এবং উপসর্গ দেখা যাচ্ছে তাদের করেনা পরীক্ষা করতে বলা হচ্ছে। অনেকে আবার নমুনা না দিয়েই চলে যান।
তিনি বলেন, সংক্রমণ রোধে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ঘনঘন হাত ধুতে হবে, মাস্ক ব্যবহার করতে হবে, সামাজিক দূরত্ব মানতে হবে। একই সাথে করোনার টিকা নিতে হবে।
সারাদেশের মতো মৌলভীবাজারে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। শুধু সংক্রমণ নয়, গত এক সপ্তাহে এই জেলার দুইজন বাসিন্দা ভাইরাসটির দ্বারা সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন।
এদিকে দেশে ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ৫ হাজার ৩৫৮ জনের করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। মারা গেছেন ৫২ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ২১৯ জন।
এর আগে গত সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, গত কিছুদিন ধরে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে এবং সংক্রমণের মাত্রা ‘খুব দ্রুত বাড়ছে ’।
তার দেয়া তথ্য অনুসারে, মার্চের ১৩ তারিখে সংক্রমণের মাত্রা উচ্চ ছিল ৬টি জেলায়, ২০ তারিখে দেখা গেছে ২০টি জেলা ঝুঁকিতে আছে। আর মার্চের ২৪ তারিখে দেখা গেছে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার উচ্চ এমন জেলার সংখ্যা ২৯টি।
স্বাস্থ্য অধিদফতর বলেছে, যেসব জেলায় উচ্চ সংক্রমণ রয়েছে, প্রয়োজনে সেসব জেলার সঙ্গে আন্তঃজেলা যোগাযোগও সীমিত করা হতে পারে। তবে সেটি সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন জেলার পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেবে। প্রয়োজন হলে স্থানীয়ভাবে লকডাউন আরোপ করা হতে পারে, তবে সে ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট জেলা তাদের পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেবে।
এশিয়াবিডি/ ডেস্ক/ মুবিন

