ঈদুল ফিত্বর : করণীয় কাজ


আল-হামদুলিল্লাহ! দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনা করার পর মুমিন মুসলমানদের জন্য খুশির বার্তা নিয়ে আগমন করবে পবিত্র ঈদুল ফিত্বর। এই দিনটি আল্লাহর পক্ষ থেকে মুমিন মুসলমানদের জন্য অন্যতম একটি নিয়ামত। তাই মহান মালিকের নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করার নিমিত্তে ঐ দিন খুশি উৎযাপন করার পাশাপাশি কুরআন-সুন্নাহের আলোকে আমাদের কিছু করণীয় কাজ আছে। যে কাজগুলো করলে আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ হবে ইনশা-আল্লাহ।

ঈদের রাতের নফল ইবাদত করা।

ঈদের রাতে নফল ইবাদত করার ফজিলতের বর্ণনা বিভিন্ন কিতাবে পাওয়া যায়। সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত আবূ উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যে ব্যক্তি ঈদুল ফিত্বর এবং ঈদুল আদ্বহার রাতে (সাওয়াবের নিয়তে, ইবাদতের উদ্দেশ্যে) জাগ্রত থাকবে, সে ব্যক্তির হৃদয় ঐ দিন মৃত্যুবরণ করবে না যেদিন অন্য হৃদয়গুলো মৃত্যুবরণ করবে। (অর্থাৎ কিয়ামতের দিনে তার কোন ভয় থাকবে না)”। অন্য একটি হাদীসে এসেছে- “হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যে ব্যক্তি পাঁচটি রাত (ইবাদতের উদ্দেশ্যে) জাগ্রত থাকবে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে। তারবিয়ার রাত (জিলহাজ্জ মাসের ৮ তারিখের রাত), আরাফার রাত, কুরবানী দিবসের রাত এবং ঈদুল ফিত্বরের রাত ও শবে বরাতের রাত”। (আত তারগীব ওয়াত তারহীব লিল আসবাহানী ও লিল মুনজেরী)

ফজরের নামাজ মাসজিদে গিয়ে আদায় করা।

প্রতিদিনের মত ঈদের দিনও যথা সময়ে মাসজিদে গিয়ে ফজরের নামাজ আদায় করার চেষ্টা করা। ফজরের নামাজের ফজিলত সম্পর্কে সহীহ মুসলিম শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত উসমান ইবনে আফফান (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যে ব্যক্তি জামাতের সাথে ইশার নামাজ আদায় করলো সে যেন অর্ধেক রাত পর্যন্ত নামাজ আদায় করলো। আর যে ব্যক্তি ফাজরের নামাজ জামাতের সাথে আদায় করলো সে যেন সারা রাত জেগে নামাজ আদায় করলো”।

সকালে গোসল করা।

ঈদের দিন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হওয়া ও ঈদুল ফিত্বরের নামাজ আদায় করার লক্ষ্যে সকালে গোসল করা। সুনানে ইবনে মাজাহ এর হাদীসে এসেছে- “হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল ফিত্বর ও ঈদুল আদ্বহার দিন গোসল করতেন”। হযরত ইমাম মালিক (রহঃ) উনার কিতাব মুয়াত্তা ইমাম মালিকে একক ভাবে বর্ণনা করেছেন- “হযরত নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) ঈদুল ফিত্বরের দিন সকালে ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে গোসল করতেন”।

মিসওয়াক করা।

মিসওয়াক করার অনেক ফজিলত রয়েছে এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিসওয়াক করাকে অশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। সুনানে আন-নাসাঈ এর মধ্যে এসেছে- “হযরত আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- মিসওয়াক মুখের পবিত্রতা অর্জনের উপকরণ ও আল্লাহর সন্তোষ লাভের উপায়”।

সুগন্ধি ব্যবহার করা।

ঈদের দিন সুগন্ধি ব্যবহার করার বিষয়ে মুস্তাদরাকে হাকেম এর চতুর্থ খণ্ডে একখানা সুন্দর হাদীস এসেছে- “হযরত হাসান ইবনে আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদের দিন আমাদের নির্দেশ দিতেন। আমরা সর্বোত্তম সুগন্ধি ব্যবহার করি”।

উত্তম কাপড় পরিধান করা।

সহীহ বুখারী শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বাজারে বিক্রি হচ্ছিল এমন একটি রেশমী জুব্বা নিয়ে হযরত উমর (রাঃ) আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি এটি ক্রয় করে নিন। ঈদের সময় এবং প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এটি দিয়ে নিজেকে সজ্জিত করবেন। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন এটি তো তার পোষাক, যার (আখিরাতে) কল্যানের কোন অংশ নেই।(অর্থাৎ তাকওয়া ও সাওয়াবের)”। এখানে লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো- নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদ উপলক্ষে সুন্দর পোশাক পরার ব্যাপারে নিষেধ করেননি। কিন্তু তিনি এ জুব্বা কিনতে সম্মতি দেননি যেহেতু সেটি ছিল রেশমের তৈরী জুব্বা।

সহীহ ইবনে খুযাইমা কিতাবে এসেছে- “হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এমন একটি লাল রেখা বিশিষ্ট ইয়ামনী চাদর ছিলো যেটা তিঁনি দুই ঈদের সময় ও জুমার দিন পরিধান করতেন”। মুস্তাদরাকে হাকেম এর চতুর্থ খণ্ডে একখানা সুন্দর হাদীস এসেছে- “হযরত হাসান ইবনে আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদের দিন আমাদের নির্দেশ দিতেন। আমরা সর্বোত্তম কাপড় পরিধান করি”।

সকালে কিছু আহার করা।

দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনা করার পর শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে ঈদের দিন সকালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছু আহার করতেন। বিশেষ করে খেজুর দিয়ে ইফত্বার করতেন। সহীহ বুখারী শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল ফিত্বরের দিন কিছু খেজুর না খেয়ে বের হতেন না। অপর এক বর্ণনায় এসেছে তিনি তা বিজোড় সংখ্যায় খেতেন”।

 সাদাক্বাতুল ফিত্বর আদায় করা।

রামাদ্বান মাসের ইবাদত সমূহের মধ্যে অন্যতম একটি ইবাদত হচ্ছে রোজার শেষে ঈদুল ফিত্বরের দিন সাদাক্বাতুল ফিত্বর আদায় করা। সহীহ বুখারী শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদেরকে ঈদের নামাজের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার পূর্বেই সাদাক্বাতুল ফিত্বর আদায় করার নির্দেশ দেন”।

 নফল সাদাক্বাহ করা।

ঈদের দিন সবার সামর্থ অনুযায়ী নফল সাদাক্বাহ করা একটা অন্যতম উত্তম কাজ। সহীহ বুখারী শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল ফিত্বরে দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন। এর পূর্বে ও পরে কোন নামাজ আদায় করেননি। অতঃপর বিলাল (রাঃ) কে সঙ্গে নিয়ে নারীদের নিকট এলেন এবং সাদাক্বাহ প্রদানের জন্য তাদের নির্দেশ দিলেন। তখন তাঁরা দিতে লাগলেন। নারীদের কেউ দিলেন আংটি, আবার কেউ দিলেন গলার হার”।

তাকবির পাঠ করা।

ঈদগাহে যাওয়ার পথে তাকবীর পাঠ করা। পবিত্র কুরআনুল কারীমে সূরা বাকারার ১৮৫ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে- “তার জন্য তোমরা আল্লাহর তাকবীর পাঠ (মহিমা বর্ণনা) করো এবং যেন তোমরা কৃতজ্ঞ হতে পারো”। সুনানে দারা কুতনী এর দ্বিতীয় খণ্ডে এসেছে- “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল ফিত্বরের দিন ঘর থেকে বের হয়ে ঈদগাহে পৌঁছা পর্যন্ত তাকবীর পাঠ করতেন। ঈদের নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত তাকবীর পাঠ করতেন। যখন নামাজ শেষ হয়ে যেতো তখন আর তাকবীর পাঠ করতেন না”।

ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর মতে ঈদুল ফিত্বরের দিন ঈদগাহে যাওয়ার সময় তাকবির উচ্চস্বরে বলবে না। (হেদায়া)। মুস্তাদরাকে হাকেমে এসেছে- ঈদুল ফিত্বরে ঈদগাহে যাওয়ার সময় আস্তে আস্তে এই তাকবীর পড়তে থাকা। তবে ঈদুল আদ্বহায় যাওয়ার সময় এ তাকবীর উচ্চ আওয়াজ করে পড়তে থাকবে। তাকবির হচ্ছে- “আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার। আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ”। অনুবাদ- “আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান, আল্লাহ ব্যতিত কোনো উপাস্য নেই ও আল্লাহ মহান। আল্লাহ মহান ও সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য”।

সকাল সকাল ঈদগাহে রাওয়ানা করা।

ঈদের দিন সকালে ঈদের নামাজের জন্য সকাল সকাল ঈদগাহে রাওয়ানা করা। সুনানে আবু দাউদ শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত আবূ উমাইর ইবনে আনাস (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে একদল আরোহী এসে সাক্ষ্য দিলো যে, গতকাল তারা (ঈদের) চাঁদ দেখেছে। তিঁনি লোকদেরকে রোজা ভঙ্গ করার এবং পরদিন সকালে ঈদগাহে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন”।

 ঈদগাহে ভিন্ন রাস্তায় যাতায়াত করা।

ঈদের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদগাহে যাওয়া আসার সময় ভিন্ন রাস্তা ব্যবহার করতেন। সুনানে আবু দাউদ ও তিরমিজী শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদের দিন এক রাস্তা দিয়ে ঈদগাহে যেতেন এবং অন্য রাস্তা দিয়ে ফিরে আসতেন”। সুনানে তিরমিজী শরীফের হাদীসে আরো এসেছে- “হযরত আলী (রাঃ) বলেন, পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত”।

ঈদের নামাজ আদায় করা।

ঈদের দিন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে দুই রাকাত ওয়াজীব নামাজ আদায় করা।
প্রথমে আমাদের মনে রাখতে হবে হানাফী মাযহাবের ফকিহগনের মতে ঈদের নামাজের শরয়ী হুকুম হচ্ছে এটা আদায় করা ওয়াজীব। এ বিষয়ে আল-মাউসুয়াতুল ফিকহিয়্যাহ এর মধ্যে এসেছে- “হানাফি মাযহাবের ফকিহগণের বিশুদ্ধ মতে ঈদুল ফিত্বর ও ঈদুল আদ্বহার নামাজ হচ্ছে ওয়াজীব”। আল্লামা আব্দুর রহমান আল-জাযীরি (রহঃ) তার কিতাব আল ফিকহু আলাল মাযাহিবিল আরবা এর প্রথম খণ্ডে বলেছেন- “ঈদুল ফিত্বর ও ঈদুল আদ্বহার নামাজ হচ্ছে ওয়াজীব”৷ উক্ত কিতাবের মধ্যে আরো বলা হয়েছে- “ঈদের নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য জুমার নামাজের ন্যায় জামাত হওয়া শর্ত”৷ (মাযাহিবুল আরবা প্রথম খণ্ড)

ঈদের জামাতে না পেলে কি করা?

হানাফী মাযহাবের নির্ভরযোগ্য ফেকার কিতাব হেদায়ার মধ্যে এসেছে- “যে ব্যক্তির ইমামের সাথে ঈদের নামাজ ফউত হয়ে গেছে, সে তা কাযা পড়বে না। কেননা এই প্রকৃতির নামাজ এমন কিছু শর্তসাপেক্ষেই ইবাদত রূপে স্বীকৃত হয়েছে, যা মুনফারিদ দ্বারা (একজনের দ্বারা) সম্পন্ন হতে পারে না”। হানাফী মাযহাবের সুপ্রসিদ্ধ কিতাব আল ফিকহু আলাল মাযাহিবিল আরবা এর প্রথম খণ্ডে এ বিষয়ে বলা হয়েছে- “আহনাফের কথা হলো- জুমার নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য যেমন জামাত শর্ত ঠিক তেমনিভাবে ঈদের নামাজের জন্যও জামাত শর্ত৷ তারা আরো বলেন, যদি কোন কারণে ঈদের জামাত ছুটে যায় ঐ সময় কিংবা অন্য সময়ে আদায় করা লাগবে না”৷

আল ফিকহু আলাল মাযাহিবিল আরবা প্রথম খণ্ডে উনারা আরো বলেছেন- “আর যদি পড়তে চায় তাহলে সে চার রাকাত নামাজ (নফল) আদায় করবে অতিরিক্ত তাকবীর ছাড়া। তাতে প্রথম রাকাতে সূরা ফাতেহা পাঠের পর পড়বে সূরা আলা, দ্বিতীয় রাকাতে পড়বে সূরা দ্বুহা, তৃতীয় রাকাতে পড়বে সূরা ইনশিরাহ, আর চতুর্থ রাকাতে পড়বে সূরা সূরা ত্বীন”৷ এখানে যদিও বিভিন্ন সূরার নাম এসেছে। কিন্তু আপনি কুরআনুল কারীমের যে কোন সূরা দিয়ে নামাজ আদায় করতে পারেন। বরং আপনার জন্য যেটা সহজ এবং বিশুদ্ধভাবে মুখস্ত আছে সেই সূরা দিয়ে আদায় করা উত্তম হবে। এবং এক সালামে চার রাকাত না পড়ে দুই রাকাত করেও পড়তে পারেন। ইনশা-আল্লাহ আপনার পক্ষ থেকে আল্লাহ ক্ববুল করবেন।

খুত্ববাহ শ্রবণ করা।

ঈদের নামাজের পর দুটি খুত্ববাহ প্রদান করা হয়। আল-ইকদুল মারফুদ ও মুনিয়া কিতাবে এসেছে- “দুই ঈদের খুত্ববাহ দেওয়া সুন্নাত এবং তা শ্রবণ করা ওয়াজীব”। কিন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের অনেক ভাই এটা শ্রবণ না করে চলে যান। যেটা মোটেই উচিত না। কারণ ওয়াজীব ছেড়ে দেওয়া গুনাহের কাজ।

খুশি উৎযাপন করা।

দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনা করার পর আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাদের খুশির দিন হিসেবে খুশি উৎযাপন করার উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। তবে সেটা হতে হবে শরীয়তের গন্ডির ভিতরে থেকে। সুনানে আবু দাউদ ও নাসাঈ শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মাদীনাতে আগমন করেন সে সময় তারা (মদীনা বাসীগণ) দুটো দিনে খেলাধূলা করত। নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন আল্লাহ তোমাদেরকে এ দুটোর পরিবর্তে উত্তম দুটো দিন দিয়েছেন। আর তা হচ্ছে আদ্বহার দিন ও ফিত্বরের দিন”।

শুভেচ্ছা বিনিময় করা।

ঈদের শিষ্টাচারের মধ্যে রয়েছে পরস্পরের মাঝে উত্তম পদ্ধতিতে শুভেচ্ছা বিনিময় করা। সে শুভেচ্ছার ভাষা যে ধরণেরই হোক না কেন। যেমন কেউ কেউ বলেন, “তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম” তথা আল্লাহ আমাদের ও আপনাদের নেক আমলগুলো ক্ববুল করে নিন। কিংবা ঈদ মোবারকসহ এ ধরণের অন্য যে কোন বৈধ ভাষায়। হযরত জুবাইর বিন নুফাইর (রহঃ) বলেন, ঈদের দিন নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীবর্গ যখন একে অপরের সাথে সাক্ষাত করতেন তখন বলতেন “তুকুব্বিলা মিন্না ও মিনকা” তথা আমাদের আমল ও আপনার আমল ক্ববুল হোক। (ইবনে হাজার (রহঃ) বলেন এর সনদ সহীহ। আল-ফাতহ দ্বিতীয় খণ্ড)
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক আমল করার তৌফিক দান করুন। ঈদের দিনের উছিলায় আমারদের সবাইকে মাফ করে হেদায়ত দান করুন। বিশ্বের মাঝে শান্তি দান করুন। (আমিন)

এশিয়াবিডি/ডেস্ক/কামরান
আরও সংবাদ