আনারসের গুনাগুণ

আনারসের গুনাগুণ- এফ এস সোহানা সরকারআনারস একটি মৌসুমি ফল। বর্ষার সুস্বাদু ফল হিসেবে আনারস বেশ পরিচিত। এটি রসালো মিষ্টি একটি ফল। কাঁচা অবস্থায় সবুজ এবং পাকলে হলদে রং ধারন করে। অনেকে এই ফলটি কাঁচা অবস্থায় সবজি হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। এই ফলে রয়েছে অনেক গুনাগুন যা আমরা অনেকেই জানি না। চলুন আজ জেনে নেই।

★ দেহে পুষ্টির চাহিদা পূরন করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। যাদের শরীর দূর্বল, শক্তি পান না তারা প্রতি দিন একটি করে আনারস খেতে পারেন। শরীর এর দূর্বলতা দূর করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে এই পুষ্টিকর ফলটি।

★ আনারস এর মধ্যে থাকা উপাদানগুলো বিভিন্ন ধরনের হরমোন জনিত সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।

★ আনারস আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে শুনতে অবাক হলেও এটাই প্রমানিত কারন আনারস এ রয়েছে প্রচুর ফাইবার এবং কম ফ্যাট । তাই ওজন কমাতে বা নিয়ন্ত্রণ এ রাখতে আপনি নিয়মিত আনারস খেতে পারেন।

★ এছাড়া আনারস এ আছে ক্যালসিয়াম, ম্যাংগানিজ ও ভিটামিন সি। যা আমাদের দেহের হাড় গঠন ও দাঁতের মাড়ি মজবুত রাখতে সাহায্য করে। মাড়ি থেকে রক্ত পড়া বন্ধ বা দাঁত কে স্ট্রং রাখতে আনারস বেশ উপকারি।

★ আমরা অনেকেই বাত ব্যথায় ভুগি। অনেকের দেখা যায় হাটু কনুই এ প্রচন্ড ব্যথা ও ফুলে যায়। সে ক্ষেত্রে আপনারা রোজ আনারস খেতে পারেন বাত ব্যথা রোগে ভাল কাজ করে।

★ সর্দি, কাশি, জ্বর, জন্ডিস এর জন্য আনারস বেশ উপকারী। আমাদের দেশে বর্ষাকালে জ্বর, সর্দি-কাশির প্রকোপ বেড়ে যায়। যেহেতু আনারসে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, বিটা ক্যারোটিন, পটাসিয়াম যা সর্দি, জ্বর প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

★ আনারসে থাকা উপাদান চোখের দৃষ্টি শক্তি ভাল রাখতে সহায়তা করে।

★ হৃদরোগ, ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে এই সুস্বাদু ফলটি।

★ হজম শক্তি বৃদ্ধি তে আনারস বেশ ভাল কাজ করে। আনারসের ব্রোমেলিন যা হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া খিদে বাড়াতে, মুখের রুচি বৃদ্ধি করতে আনারস খুব ভাল কাজ করে। তাই যাদের খাবারে রুচি নেই তারা নিয়মিত আনারস খেতে পারেন।

★ আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা কিনা হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভুগেন। তারা আনারস এর সাথে সামান্য পরিমান জিরা ও আমলকি মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে বেশ উপকার পাওয়া যায়।

★ আনারসে থাকা ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ত্বকের জন্য বেশ উপকারি। ত্বকের রুক্ষতা দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়া মুখে ব্রন, ত্বকে অন্যান্য নানা সমস্যার দূর করতে, ও ত্বকের কোষ বৃদ্ধি করতে আনারস বেশ উপকারি। এতে থাকা ভিটামিন সি চুল পড়া রোধ ও চুলকে শক্ত ও মজবুত করতে সহায়তা করে।

★ তাছাড়া আমাদের দেহে রক্ত পরিষ্কার করতে ও রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করতে এই ফলের জুড়ি নেই। রক্ত পরিষ্কার করে হৃদপিন্ডে রক্ত চলাচল এ সাহায্য করে।

★ অনেকেরই হাত পাইয়ে জ্বালা পোড়া করে। এটি একটি সাধারন ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে আমাদের মাঝে। এই হাত পা জ্বালা প্রতিরোধেও আনারস বেশ ভাল ভূমিকা রাখে। তাছাড়া যাদের প্রস্রাবে জ্বালা-পোড়া করে তারা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় নিয়মিত আনারস খেতে পারেন, এতে করে প্রস্রাব এর জ্বালাপোড়া কমবে।

★ যাদের কৃমি আছে তারা এই ফলটি খেতে পারেন। কারন কৃৃমি নিরাময়ে আনারস এর গুন অনেক।

★ দেহে পানির পানির ঘাটতি পূরন করে, দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আনারস বেশ কার্যকরী। তাই এই করোনাকালে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বেশি করে আনারস খেতে পারেন। আপনি এটি সালাদ বা জুস হিসেবেও আপনার খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন।

★ তবে চিকিৎসক এর পরামর্শ ছাড়া ডায়াবেটিস রোগী ও গর্ভাবস্থায় আনারস না খাওয়াই ভাল। কারন আনারস এর সুগার এর মাত্রা বেশি তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর এবং গর্ভাবস্থায় আনারস খেলে গর্ভপাত হতে পারে।

লেখিকাঃ এফ এস সোহানা সরকার।

এশিয়াবিডি/ডেস্ক/কামরান 
আরও সংবাদ