মৌলভীবাজারে সাংবাদিকের উপর হামলা: ১ মাসেও সনাক্ত হয়নি হামলাকারীরা
দৈনিক যুগান্তরের মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি হোসাইন আহমদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ১ মাস পার হলেও এখনও হামলাকারীদের সনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে হামলাকারীরা সনাক্ত না হওয়ায় জেলায় কর্মরত সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের মধ্যে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হচ্ছে। জেলা শহরের ব্যস্থতম সড়কে এরকম হামলার ঘটনায় সম্পৃক্তকারীদের সনাক্ত করে গ্রেফতারে পুলিশের কার্যকরি ভুমিকার জোর দাবি জানিয়েছেন অনেকেই। এদিকে ইতিমধ্যে ঘটনার প্রতিবাদে ও দুর্বৃত্তদের গ্রেফতারের দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করে।
২৯ অক্টোবর রাত ৯টায় মৌলভীবাজার শহরের পুলিশ ফাঁড়ি ও প্রধান ডাক ঘরের সামনে একটি প্রাইভেটকার ও ৩টি মোটরসাইকেলে এসে দৈনিক যুগান্তরের মৌলভীবাজার প্রতিনিধি হোসাইন আহমদ এর উপর হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে দুর্বৃত্তরা।
জানা যায়, ঘটনার দিন হোসাইন আহমদ নিজ দোকান থেকে মোটরসাইকেল যোগে পোশাক আনার জন্য সেন্ট্রাল রোড হয়ে শহরের পশ্চিম বাজার এলাকায় ট্রেইলারের দোকানে যাচ্ছিলেন। এই সময় তিনি শহরের পুলিশ ফাঁড়ি ও প্রধান ডাক ঘরের সামনে পৌছালে পিছনে থাকা একটি মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা তাকে লাতি মেরে ফেলে দেয়। পরে গাড়ি থেকে দেশীয় অস্ত্র বের করে সন্ত্রাসীরা পিটাতে থাকে। এক পর্যায়ে পার্শ্ববর্তী ব্যবসায়ীরা এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে তাকে আহত অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
এঘটনায় হোসাইন আহমদ বাদী হয়ে ৩০ অক্টোবর অজ্ঞাত নামা আসামী করে মৌলভীবাজার মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এদিকে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে বিবৃতি দিয়েছে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে জুড়ী প্রেসক্লাব, মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাব, শেরপুর প্রেসক্লাব, ক্যাম্পেইন ফর মিডিয়া ফিডম, সাইবার সেফটি ফাস্ট বাংলাদেশ, যুগান্তর স্বজন সমাবেশ মৌলভীবাজার জেলা ও রাজনগর উপজেলা শাখা। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, রাজনীতিবীদ ও ব্যক্তিবর্গ এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
এবিষয়ে হোসাইন আহমদ বলেন, হামলাকারীরা এক মাসেও গ্রেফতার না হওয়ায় আমি উদ্বেগ-উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছি। প্রকাশ্যে বর্বরোচিত হামলা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকি স্বরূপ। তিনি দুর্বৃত্তদের আশু গ্রেফতারের জন্য পুলিশ প্রশাসনের নিকট দাবি জানিয়েছেন।
জেলার সচেতন মহল বলছেন, পৌর শহরের ব্যস্থতম রোডে একজন গণমাধ্যম কর্মীর উপর প্রকাশ্যে সন্ত্রাসীরা হামলা করে। ঘটনার ১মাস পার হলেও এখনও সন্ত্রাসীরা সনাক্ত না হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হচ্ছে। স্বাভাবিক চলাফেরা নিয়ে দুশ্চিন্তায় সাধারণ মানুষ।
এবিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নবগোপাল পাল বলেন, হামলাকারীদের সনাক্তের কাজ চলমান। আশাকরি একটা রিজাল্ট আসবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান বলেন, এ পর্যন্ত আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। আরো কিছু তথ্য সংগ্রেহের কাজ চলমান রয়েছে। সম্পূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।