ধর্ষণের পর হত্যা, মৌলভীবাজারে ২ আসামির মৃত্যুদণ্ড
মৌলভীবাজারের রাজনগরে এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের দায়ে দুই জনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন মৌলভীবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক।
বুধবার (১৫ মে) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতের বিচারক মো. সোলায়মান দুই আসামির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়ে এ রায় প্রদান করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা আসামিরা হলেন, রাজনগর উপজেলার ছিক্কা গ্রামের আবারক মিয়া ও দক্ষিণ কাসিমপুর গ্রামের জয়নাল মিয়া।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩০ মে বিকালে ধান কেনার জন্য ৭০ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন রাশেদা বেগম। রাত ৮টা পর্যন্ত রাশেদা বেগম বাড়িতে না ফিরলে তাঁর বোন রায়শা বেগম এর ব্যবহৃত মোবাইল থেকে কল দিলে রাশেদা বলে আবারক এর বাড়ীতে যাচ্ছে। কিছু সময় পরে রাশেদা বেগম এর ব্যবহৃত মোবাইলে কল দিলে তাকে পাওয়া যায়নি। সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোজাখুজি অবস্থায় নিখোঁজের দুই দিন পর ২ জুন রাজনগর থানা আবারক এর বসত বাড়ীর দক্ষিণ পার্শ্বে সংলগ্ন মাছুগাঙ্গে (খালে) একজন অজ্ঞাতনামা কালো বোরকা পরিহিত মহিলার লাশ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে রাশেদা’র স্বজনরা মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে উপস্থিত হয়ে লাশ সনাক্ত করেন।
ওই ঘটনায় রাশেদা বেগম এর বড় ভাই আব্দুল খালিদ বাদী হয়ে ঘটনার পরেরদিন রাজনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করে পুলিশ। আদালতের বিচারক ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীত প্রমানিত হলে এ রায় প্রদান করেন। আদালত এ রায়ের পাশাপাশি প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে জরিমানাও করেন। রায় ঘোষণা শেষে আবারক মিয়া ও জয়নালকে সাজা পরোয়ানা মুলে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
আসামী পক্ষের আইনজীবি এডভোকেট মো: বিল্লাল হোসেন জানান, আমরা আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট নই। এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা হাইকোর্টে আপিল করবো। আসামীরা ন্যায় বিচার বঞ্চিত হয়েছেন। আশাকরি উচ্চ আদালতে আসামীরা খালাস পাবেন।
রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট নিখিল রঞ্জন দাস জানান, মৌলভীবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক মো: সোলাইমান নারী ও শিশু নির্যাতন মোকাদ্দমা ২৫৩/২০১৯ এর রায় ঘোষণা করেন। ওই মামলায় ২০১৮ সালের মে মাসে জৈনক রাশেদা বেগমকে আসামী আবারক মিয়া ও জয়নাল মিয়া প্রথমে ধর্ষন করেন এবং ধর্ষনের পর হত্যা করে রাজনগরের মাছুগাঙ্গে লাশ ফেলে দেন। বিজ্ঞ আদালত আমাদের স্বাক্ষী প্রমাণ গ্রহণ করেছেন এবং রাষ্ট্রপক্ষ মামলার স্বাক্ষী প্রমাণে সামর্থ হওয়ায় আসামী আবারক মিয়া ও জয়নাল মিয়াকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন।