কুলাউড়ায় মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা

পরিবর্তনের যোগে পরিবর্তনই মানুষকে সাফল্যের সর্বোচ্চ উচ্চশিখরে নিয়ে যেতে পারে। এই পরিবর্তন যদি গ্রামের কৃষি ক্ষেতে হয় তাহলে উন্নতির ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। এমনটিই দেখা যায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় । সেখানে মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষে ব্যাপক আগ্রহী দেখা যাচ্ছে কৃষকের মধ্যে। এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে ইতোমধ্যেই স্বাবলম্বী হয়েছেন উপজেলার টিলাগাও ইউনিয়নের হতদরিদ্র কৃষক হান্নান মিয়া , আব্দুর নুর, নারায়ণ চন্দ্র ভৌমিক, রাম দে রাজভর,লনি মালাকার,ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের মামুনুর রশিদ, মালিক মিয়া, জয়চন্ডি ইউনিয়নের মিঠুন চন্ড দাস, রাউৎগাঁও এর স্বপন মিয়া ।

মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে কৃষকরা সল্প সময়ে অল্প খরচে লাভমান হচ্ছেন।
কৃষক হান্নান মিয়া , স্বপন মিয়া, মামুনুর রশিদ জানান, সমন্বিত কৃষি ইউনিট কৃষিখাতের আওতায় পল্লী কর্ম- সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) এর অর্থায়নে ও হীড বাংলাদেশ এর সার্বিক সহযোগিতায় ৩০ শতাংশ জমিতে উনারা মালচিং পদ্ধতিতে বিভিন্ন ধরণের সবজির চাষ করেছেন। ফলন ভালো হওয়ায় আরও বেশি পরিমাণ জায়গা নিয়ে বড় পরিসরে এ পদ্ধতিতে চাষ বাড়াতে চান। ফলন ভালো হয়েছে পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করে ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষক।

তিনি আরও বলেন, মালচিং হচ্ছে এক ধরনের পলিথিন। যা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। রোগজীবাণু থেকেও গাছকে রক্ষা করে। অতিরিক্ত পানি রোধ করে। গাছের গোড়ায় আগাছা কম জন্মায়। এই পদ্ধতিতে সবজি চাষ করতে হলে প্রথমে জমি তৈরি করে মাটির সঙ্গে প্রয়োজন মত সার মিশিয়ে নিয়ে বেড তৈরি করতে হয়। বেডের প্রস্থ হবে এক মিটার। এক বেড থেকে আরেক বেডের দূরত্ব হবে ৩০ সেন্টিমিটার। এরপর জমিতে তৈরি করা সবকটি বেড মালচিং পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হয়। এতে সল্প ব্যায়ে অল্প জমিতে ফসল চাষে কয়েকগুণ বেশি লাভমান হচ্ছেন কৃষকরা।

হীড বাংলাদেশ এর কুলাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহেল সিকদার জানান, সবজি চাষে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মালচিং পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে সবজি চাষে শ্রম ও সময় কম লাগে, খরচও কম হয়। এ পদ্ধতিতে সারা বছর সবজি চাষ করা যায়। তাই এলাকার কৃষকরা এবার মালচিং পদ্ধতির দিকে ঝুকছে। হীড বাংলাদেশের আঞ্চলিক ব্যবস্হাপক মোঃ দীল ইসলাম বলেন, হীড বাংলাদেশ সব সময় কৃষকের কল্যাণে কাজ করে। কৃষকের যাতে সময় এবং অর্থ কম ব্যয় হয় সেজন্য মালচিং পদ্ধতি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন।

কুলাউড়া উপজেলা কৃষি অফিসার মুহাম্মদ জসিমউদ্দিন বলেন, মালচিং পদ্ধতি চাষ করলে কৃষকরা উপকৃত হবে। বেডে চারা রোপনের জন্য ১৮ ইঞ্চি দুরত্ব রাখতে হবে। ৪ ইঞ্জি ব্যাসের পাইপ দিয়ে ছিদ্র করে ঐ ছিদ্রে সবজির চারা রোপন করলে কৃষকেরা বেশি লাভবান হবেন।

আরও সংবাদ