বড়লেখায় তরুণদের স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা সংস্কার ও ঝোপঝাড় পরিষ্কার
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নের কাঠালতলী ৬ নং ওয়ার্ড মুছেগুল আঞ্চলিক সড়কে প্রতিদিন ছোটখাটো যানবাহনসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ যাতায়াত করেন। বৃষ্টির দিনে সড়কে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। চরম দূর্ভোগ পড়েন এলাকার জনসাধারণ। যোগাযোগ ব্যবস্থার দূর্ভোগের বিষয়টি চিন্তা করে শুক্রবার সকালে সড়ক সংস্কার ও সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্য জুবায়ের আহমদ শিমুলের উদ্যোগে হযরত বেলাল (রাঃ) জামে মসজিদের সন্মুখ হতে রাস্তা মেরামত ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করা হয়।
এসময় স্বেচ্ছাশ্রম কার্যক্রমে আরও ছিলেন মাওলানা ফয়জুল হক, সাইফুল ইসলাম, ছনর আলী, আবুল হোসেন, আব্দুল কাদির,আবুল কালাম, তায়েফ হাসান, নাজমুল ইসলাম,সিদ্দিকুর রহমান, আব্দুস শহীদ, আব্দুস সালামসহ আরো অনেকেই এসময় তারা সড়কের খানাখন্দ ইট-বালু দিয়ে ভরাট করে উভয় পাশের ঝোপঝাড় পরিস্কার করেছে এতে সড়কের চিত্র পুরো বদলে গেছে। সংস্কার করা সড়কে সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পেয়েছে জনসাধারণ স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করছে।
এদিকে একই দিনে সড়কের দুই পাশের ঝোপঝাড় পরিষ্কারে উদ্যোগ নেন দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নের কাঠালতলী (টাকি) এলাকার তরুণরা তারা স্বেচ্ছাশ্রমে কাঠালতলী-মাধবকুণ্ড রাস্তার দুইপাশের প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেছেন। প্রতি শুক্রবার তারা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম চালাবেন বলে জানিয়েছেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নের কাঁঠালতলী বাজার (মৌলভীবাজার-চান্দগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়ক) থেকে পূর্বদিকে গেছে কাঠালতলী-মাধবকুণ্ড সড়ক। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে অনেক মানুষ আসা-যাওয়া করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ছোটখাটো যানবাহনও চলাচল করে। দীর্ঘদিন ধরে সড়কের দুইপাশে ঝোপঝাড় বেড়ে ওঠেছে। গাছগুলো ডালপালা মেলেছে, যা সড়কের ওপর এসে পড়েছে। এতে সড়কটি কিছুটা সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এছাড়া সড়কটিতে ঘন ঘন বাঁক রয়েছে। এই অবস্থায় পথচারী ও যানবাহনের চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে। প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে সড়কের দুই পাশের ঝোপঝাড় পরিষ্কারে উদ্যোগ নেন কাঠালতলী (টাকি) এলাকার তরুণ মারুফ আহমদ, আমিনুল ইসলাম ও রাহেল আহমদ। তারা বিষয়টি এলাকার ছোট-বড় সবাইকে জানান। এতে সবার সাড়া মেলে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা শুক্রবার সকাল থেকে সড়কের উভয়পাশের ঝোপঝাড় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু করেন।
জানা গেছে, কাঠালতলী (টাকি) ও মুছেগুল এলাকার কয়েকজন তরুণ সড়কের দুই পাশের ঝোপঝাড় পরিষ্কার করছেন। কেউ ময়লা-আবর্জনা টুকরিতে ভরছেন, কেউ তা নির্দিষ্ট স্থানে রেখে আগুনে পুড়িয়ে দিচ্ছেন। এতে সড়কের চিত্র পুরোটাই বদলে যাচ্ছে।পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেন এলাকার সমাজসেকব বেলাল আহমেদ ও সয়দুল ইসলাম, শিক্ষক কামরুজ্জামান মুক্তা, জাবেদ আহমেদ, মারুফ আহমদ, আমিনুল ইসলাম, রাহেল আহমদ, আল আমিন, রাজন,জাফর, শুকুর মিয়া, আইনুল ইসলাম, শিমুল আহমেদ, মাসুদ আহমেদ, রাফি, ইমরান, শাকিলসহ অনেক।
শিক্ষক কামরুজ্জামান মুক্তা বলেন, কাঠালতলী-মাধবকুণ্ড সড়কটির উভয়পাশে ঝোপঝাড় ও লতাপাতার কারণে সড়কটি সংকুচিত হয়ে পড়েছিল। এতে পথচারী ও যানবাহনের চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। এলাকার কয়েকজন তরুণ বিষয়টি ছোট-বড় সবাইকে জানান। এতে সবার সাড়া মেলে। এরপর আমরা সড়কটির উভয়পাশ পরিস্কারের পরিকল্পনা গ্রহণ করি। পরিকল্পনা অনুযায়ী শুক্রবার থেকে কাজ শুরু করেছি। আমরা প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা পরিস্কার করেছি। প্রতি শুক্রবার আমরা এই কার্যক্রম চালাবো। আমাদের কাজ অনেকে প্রশংসা করেছেন। পুরো সড়কটি আমরা পরিস্কার করব। এজন্য এলাকার মানুষের সাথে কথা হয়েছে। তারা সবাই কাজে অংশগ্রহণ করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
ব্যাংক কর্মকর্তা জুবায়ের আহমদ শিমুল বলেন, তরুণদের এই কার্যক্রম প্রশংসার দাবি রাখে, সড়ক দুর্ঘটনারোধে এই কার্যক্রম অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। আমাদের সকলের উচিত নিজ-নিজ অবস্থান থেকে সড়কের উভয় পাশের ঝোপঝাড় পরিস্কার করে সৌন্দর্য্য বর্ধনে এগিয়ে আসা। বৃষ্টির দিনে মুছেগুল আঞ্চলিক সড়কের বেহাল অবস্থা হয়। এলাকার দূর্ভোগের কথা চিন্তা সকল শ্রেনীপেশার মানুষদের নিয়ে সংস্কার কাজের উদ্যোগ গ্রহণ করি। এই স্বেচ্ছাশ্রমে কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। আগামীতে এলাকার সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিতে সকলের অংশগ্রহণ থাকবে।
ইউপি সদস্য রাসেল আহমদ বলেন, কাঠালতলী-মাধবকুণ্ড সড়ক এখন অনেক সুন্দর লাগছে। এলাকার তরুণরা সড়কের দুইপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা প্রশংসনীয়। তাদের মতো সবার উচিত নিজ নিজ এলাকার রাস্তাঘাট পরিষ্কার করা। আমিও আমার এলাকার তরুণদের নিয়ে রাস্তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু করব।