রাইড শেয়ারিং করে বন্যার্তদের পূনর্বাসন সহায়তা করেছেন আট বন্ধু

যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডের আট বন্ধু উবারে রাইড শেয়ার করে একদিনের আয়ের অর্থ দিয়ে সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন প্রকল্পে গৃহ নির্মানে সহায়তা করছেন। দেশের অসহায় মানুষের সহায়তায় বন্ধুদের এই ব্যাতিক্রম উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে পরিচিতজনরাও সহায়তা দিয়ে উৎসাহ দিয়েছেন এই বন্ধুদের । লন্ডন থেকে শামীম, সবুর, শাওন, তাহের, সাইদুল, হাসান এবং আয়ারল্যান্ড থেকে আকতার ও সুজন মূলত দেশের চরম সংকটময় মুহুর্তে ভারত থেকে নেমে আসা পানি ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় বিচলিত হয়ে উঠেন।

গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্যায় বাড়িঘর হারানো মানুষের দুঃখ দুর্দশা দেখে তাদের জন্য কিছু করার তাগিদ অনুভব করেন তারা। বিবেকের তাড়না থেকে উবারে রাইড শেয়ারিং করে তহবিল সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেন তারা। আট বন্ধু একটি দিন নির্দিষ্ট করে দুপুর থেকে শেষ রাত পর্যন্ত নিজেদের গাড়ি দিয়ে উবারে রাইড শেয়ারিং করে আয়ের সমুদয় অর্থ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনে ব্যায়ের সিদ্ধান্ত নেন। তাদের এই উদ্যোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করলে পরিচিতজনরাও সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসেন। আট বন্ধুর একদিনের আয়ের ও পরিচিতিজনদের সহায়তায় ৩ হাজার ৮ শত ৬১ পাউন্ড সংগ্রহ করেন তারা। সেই অর্থ দেশে পাঠিয়ে প্রনোদনা সহ ৬ লক্ষ ২০ হাজার ৩০০ টাকা দিয়ে টিন, সেলাই মেশিন ও নগদ টাকা দিয়ে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া ও রাজনগর উপজেলার ৬২ পরিবারকে পুনর্বাসন সহায়তা দেওয়া হয়। এ উদ্যোগের বাস্তবায়ন করে ক্যাম্পেইন ফর মিডিয়া ফ্রিডম (সিএমএফ)।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রাজনগর উপজেলার মনসুরনগর ইউনিয়ন পরিষদ, কান্দিরকুল ও তারাপাশা উচ্চ বিদ্যালয় পয়েন্ট, মৌলভীবাজার উপজেলার চাঁদনীঘাট পয়েন্ট এবং কুলাউড়া উপজেলার চৌমুহনা ও টিলাগাঁও পয়েন্টে ৬২টি পরিবারকে গৃহনির্মানের জন্য টিন, নগদ টাকা ও সেলাই মেশিন প্রদান করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আকমল হোসেন নিপু, মনসুরগর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, রাজনগর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান সোহেল, ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদ রুবেল, ক্যম্পেইন ফর মিডিয়া ফ্রিডম (সিএমএফ) এর সভাপতি ও যুগান্তরের মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি হোসাইন আহমদ, দেশরুপান্তরের জেলা প্রতিনিধি শাহবান রশীদ চৌধরী অনি, সহ-সভাপতি আশরাফ আলী, সাধারণ সম্পাদক মো. ফরহাদ হোসেন, দপ্তর সম্পাদক কামরান আহমদ, কুলাউড়ার সমন্বয়ক তানিম হোসেন রুহিন, সমাজসেবী কাওসার আহমদ ও সংবাদ সারাবেলার কুলাউড়া প্রতিনিধি শুভ গোয়ালা প্রমুখ।

ইউকে প্রবাসী সাইদুল ইসলাম বলেন, দেশ যখন প্রাকৃতিক কিংবা মানবসৃষ্ট কোন সংকটে পড়ে তখন প্রবাসীরা সবচেয়ে বেশি বিচলিত হয়ে উঠেন। ঐতিহাসিকভাবে প্রবাসীরা দেশ মাতৃকার জন্য সর্বোচ্চ ভূমিকা রেখে এসেছেন। আমাদের সামান্য সহায়তা যদি দেশের একটি পরিবারের কষ্ট ও দুূর্ভোগ লাগব করতে পারে তাতেই নিজের স্বার্থক বলে মনে করবো। দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে এটা আমাদের ক্ষুদ্র একটি প্রচেষ্ঠা মাত্র।

আরও সংবাদ