পাঠ্যবইয়ে ‘জুলাই বিপ্লব’
- জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক
- ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পলায়ন
- চার নেতার একজন শেখ মুজিবুর রহমান
- আবু সাঈদ ও মুগ্ধদের ভুলবো না
জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনের পর পাঠ্যবইয়ে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে অন্তর্বর্তী সরকার। স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার প্রবর্তন করা কারিকুলাম বাতিল করে চালু হয়েছে ২০১২ সালের কারিকুলাম। বিভিন্ন শ্রেণির বইয়ে স্থান পেয়েছে ছাত্র-জনতার জুলাই আন্দোলনের নানা কাহিনি, ছবি, কার্টুনসহ নানা বিষয়। জুলাই আন্দোলন চলাকালে বাড্ডায় হেলিকপ্টার থেকে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি করার বিষয়টি পাঠ্যবইয়ে শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে আনা হয়েছে কার্টুনের মাধ্যমে। বাদ দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত শেখ মুজিব বন্দনা। স্থান পেয়েছে দেওয়ালে দেওয়ালে আঁকা বিভিন্ন গ্রাফিতিও।
নবম ও দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ে ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা’ অধ্যায়ে বলা হয়েছে ২৬শে মার্চ মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এরপর তিনি ২৭শে মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে আবারও স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।
নবম ও দশম শ্রেণির বাংলা সাহিত্য বইয়ে স্থান দেওয়া হয়েছে ‘আমাদের নতুন গৌরবগাথা’ অধ্যায়ের। এ অধ্যায়ে উঠে এসেছে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের গণভবন ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার তথ্য।
তৃতীয় শ্রেণির বিশ্বপরিচয় বইয়ে অধ্যায় যুক্ত করা হয়েছে ‘আমাদের চার নেতা’ নামে। চার নেতার বিবরণীতে তথ্য দেওয়া হয়েছে শেরেবাংলা একে ফজলুল হক, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের।
পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বইয়ে যুক্ত করা হয়েছে ‘আমরা তোমাদের ভুলব না’ অধ্যায়টি। দেশের জন্য যুদ্ধ করে শহীদ হওয়া শহীদ মীর নিসার আলী তিতুমীর, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, শহীদ মতিয়ুর রহমান মল্লিক, সার্জেন্ট জহুরুল হক, ড. মুহম্মদ শামসুজ্জোহা, নূর হোসেনসহ বিভিন্ন শহীদের তথ্য তুলে ধরা হয়। এই অধ্যায়ের সংযোজন করা হয় জুলাই আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী শহীদ হওয়া আবু সাঈদ ও মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের নাম।
সপ্তম শ্রেণির ‘ইংলিশ ফর টুডে’ বইয়ের ‘অ্যা নিউ জেনারেশন’ অধ্যায়ে স্থান পেয়েছেন র্যাপার হান্নান হোসাইন শিমুল ও মোহাম্মদ সেজান। জুলাই বিপ্লবে এই দুই তরুণের ‘কথা ক’ ও ‘আওয়াজ উডা বাংলাদেশ’ গানদ্বয় আন্দোলনকারীদের প্রেরণা যুগিয়েছিল। বইয়ের ৩০ নম্বর পাতায় লেখা হয় ‘আপনি কি সেজানের ‘কথা ক’ গানটি শুনেছেন? আগের প্রজন্মের শিল্পীরা গানকে গানকে প্রতিবাদের ভাষা হিসাবে ব্যবহার করতে ভয় পেলেও সেজান ও হান্নানের মতো শিল্পীরা সে সাহস দেখিয়েছেন।’
সপ্তম শ্রেণির ‘সপ্তবর্ণা’ বই থেকে সেলিনা হোসেনের ‘রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন’ গদ্যটি বাদ পড়েছে। সেখানে জুলাই বিপ্লব নিয়ে লেখা হাসান রোবায়েতের ‘সিঁথি’ কবিতাটি স্থান পেয়েছে। ‘সিঁথি’র শেষ চার চরণে রোবায়েত লিখেছেন ‘খোদার আরশ কাঁইপা ওঠে, শুইনা বাপের হাহাকার, একটা মানুষ মারার লাগি, কয়টা গুলি লাগে ছার?’