পথিকের প্রতি বটবৃক্ষ
পথিকের প্রতি বটবৃক্ষ
-পিংকু চন্দ্র পাল
লেখক ও শিক্ষক
রোজ রোজ এক পথে,
বৃদ্ধ চলে থলে হাতে।
পথপার্শ্বে বটগাছ পাহাড় সম,
ভারাক্রান্ত সেথা বসি লয় বিশ্রাম।
বটগাছ ডাকি কয় বৃদ্ধ পথিকে,
এই পথ বেয়ে রোজ যাও কোন দিকে?পথিক হাসিয়া কয়, সেথা যাই চলে-
যেথায় রয়েছে মোর স্ত্রী কন্যা ছেলে।
কে বা জননী তব, পিতা ছিল না কী?
হাসিয়া বৃদ্ধ কয়, পুত্র বুঝি কভু হয় মাতা-পিতা বৈকি!
তাহলে তোমারও বুঝি ছিল পিতা-মাতা?
তবে আর বলছি কী, শুধাও যা-তা!
আজ তারা কোথা তবে কোন দেশে গেলে?
সর্ব জীব যেথা যায় আয়ু শেষ হলে।তবে কী তোমারও হবে একই পরিণতি?
এটা ছাড়া বলো ভাই আর কী-বা গতি।
পথের সঞ্চয় তোমার জমিয়েছো কিছু?
না-কি ছুটিলে শুধু মরীচিকার পিছু?
অপরের দোষ নিয়ে ব্যস্ত রহিয়া,
নিজের কর্তব্য বুঝি ছিলে ভুলিয়া!
জমি চাই, টাকা চাই, সুখ চাই মোর
বলিয়া কাটাইলে তব দিবস-রজনী-ভোর।জগতের হীতে ভাই কী করিলে তুমি?
কেবল সঞ্চয় যত অর্থ-বিত্ত, ভূমি।
বিচারের দিনে বিধাতা স্বয়ং জিজ্ঞাসিবেন তোমায়,
পৃথিবীতে গিয়েছিলে শুধুই কী স্বজনের দায়?
স্ত্রী পুত্র কন্যার তরে বয়ে এলে বোঝা,
কার সাহায্যে পার হবে এই পথ সোজা?
পথের সম্বল যা ছিল ধর্ম ও মানবতায়,
তুমি তো করোনি কিঞ্চিত মাত্র তা’য়।
ক্ষমা আজ পাবে কেন তুমি সহজেই,
আমার কাছে ফিরে পেতে সব, সৃষ্টি সেবা করলেই।
অনুতপ্ত অশ্রুসিক্ত বৃদ্ধ বসি ভাবে বটবৃক্ষের কথা,
অবহেলায় পড়ে রয় বাজারের থলে হেথা!!