পরিষদ সভায় অনুপস্থিত: রাজনগরে দুই ইউপি চেয়ারম্যানকে শোকজ

রাজনগরে দুই ইউপি চেয়ারম্যানকে শোকজ

মৌলভীবাজারের রাজনগরে দুই ইউপি চেয়ারম্যানকে কারণ ব্যাখ্যা করার নির্দেশ দিয়ে চিঠি দিয়েছেন রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফরোজা হাবিব শাপলা। উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র দাস ও মুন্সিবাজার ইউনিয়নের চেয়াম্যান রাহেল হোসেনকে এ চিঠি দেয়া হয়েছে। বিগত ৫ আগস্টের পর এক বছরে মুন্সিবাজারের চেয়ারম্যান শুধু জানুয়ারী মাসের সভায় উপস্থিত থাকলেও ফতেহপুরের চেয়ারম্যান কোন মাসেই আসেনি। এতে পরিষদের গত ২৪ জুলাইর মিটিংয়ের সিদ্ধান্তের আলোকে তাদের কাছে কারণ ব্যাখ্যার চিঠি দেয়া হয়েচে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিগত পতিত সরকারের সময়ে ইউপি নির্বাচনে মুন্সিবাজারের চেয়ারম্যান রাহেল হোসেন ছিলেন বেশ আলোচিত। বিগত জাতীয় নির্বাচনেও আওয়ামীলীগের এমপি মো. জিল্লুর রহমানের নির্বাচনী প্রাচরনায় চষে বেড়িয়েছেন চেয়ারম্যান ইউপি চেয়ারম্যান রাহেল হোসেন। নির্বাচন পরবর্তী সময়েও ছিলেন তার ছায়া হয়ে। আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান খানের একনিষ্ট সঙ্গী হয়ে চালিয়ে যান নির্বাচনী কার্যক্রম। কিন্তু ৫ আগস্টের পরপরই নিজেকে হাজির করেন বিএনপি নেতাদের সাথে। বাড়ে সখ্যতাও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয়তা, ৪ আগস্টে মৌলভীবাজারের বিভিন্ন স্পটের ছবি ও ৫ আগস্টের পর বিএনপি নেতাদের সাথে ফুল দেয়ার ঘনিষ্ট ছবি ভাইরাল হয়। এছাড়াও স্থানীয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতার কল্যাণে মামলা থেকে বাছলেও গত ২০শে মার্চ রাতে মুন্সিবাজার ইউনিয়ন পরিষদে ডিবি পুলিশের ওপর হামলায় চেয়ারম্যান রাহেল হোসেনকে আসামী করা হয়েছে। মামলায় ডিবি পুলিশ উল্লেখ করে- ‘চেয়ারম্যান রাহেল হোসেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে সরকার বিরোধী বৈঠক করছেন এমন খবর পেয়ে ডিবি পুলিশের একটি দল ইউনিয়ন পরিষদে গেলে তারা বিভিন্ন শ্লোগান দিয়ে পরিষদের গেটে তালা দিয়ে ডিবি পুলিশকে আটকে রাখে। গাড়িতে আগুন দেয়ার চেষ্ট করে।’ মামলা হওয়ার ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও ডিবি পুলিশ এখনো চার্জশীট দিতে পারেনি।

এদিকে মুন্সিবাজারের চেয়ারম্যান রাহেল হোসেন বিগত ১ বছরে শুধু জানুয়ারী মাস ছাড়া আর কোন পরিষদ সভায় আসেন নি। শুধু প্রতিনিধি পাঠিয়েই যাচ্ছেন। একই পথে হাটেন ফতেহপুর ইউনিয়ন থেকে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচন বিজয়ী হন ইউপি চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র দাস। রুহিঙ্গা নিবন্ধন নিয়ে একবার বরখাস্থ হলেও আদালতের মামলায় ‘চেয়ার’ ফিরে পান। পরে ২৪শের ৫ আগস্টের পর চলে যান আড়ালে। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সহযোগিতায় দায়িত্ব চালিয়ে গেলেও পরিষদের বিগত ১২টি সভার একটিতেও উপস্থিত হন নি। মেম্বারদের পাঠিয়েই যাচ্ছেন। গত ২৪ জুলাই উপজেলা পরিষদের সিদ্ধান্তানুযায়ী উপজেলা পরিষদ আইন ১৯৯৮ এর ১৩ (১)(ক) ধারার পরিপন্থি হওয়ায় চেয়ারম্যান রাহেল হোসেন ও নকুল চন্দ্র দাসকে চিঠি (স্মারক নং-৭৫৭ ও ৭৫১, তারিখ : ২৯/৭/২৫) প্রাপপ্তির ৫ কার্য দিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য চিঠিতে বলা হয়েছে।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফরোজা হাবিব শাপলা বলেন, উনারা পরিষদ মিটিংয়ে না আসায় উন্নয়ন কার্যক্রমে সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। আমরা এব্যাপারে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিচ্ছি।

আরও সংবাদ