সিলেটে আলোচিত রাজু হত্যার আজ সাত বছর

সিলেট ল কলেজের মেধাবী ছাত্র, সিলেট মহানগর ছাত্রদল নেতা ফয়জুল হক রাজুর আজ সপ্তম মৃত্যু বার্ষিকী। রাজু হত্যার সাত বছর হলেও সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষ হয়নি এখনও । ন্যায় বিচারের আশায় সাত বছর ধরে অপেক্ষায় আছে রাজুর পরিবার। মামলার প্রধান আসামী রকিবসহ এজাহার নামীয় ছয় জন পলাতক থাকায় ন্যায় বিচার নিয়ে শঙ্কিত মামলার বাদী রাজুর চাচা দবির আলী।

বিগত ২০১৮ সালের সিলেট সিটি নির্বাচনের ফলাফল ঘোষনার পর সিটির তৎকালীন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বাসার সামনে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় রাজুকে। ২০১৮ সালের ১১ আগষ্ট রাতে দলীয় কোন্দলের জেরে খুন হন ফয়জুল হক রাজু। পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মহানগর ছাত্রদলে সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কুখ্যাত ক্যাডার আব্দুর রকিবের নেতৃত্বে এ কিলিং মিশনে অংশ নেয় ২৫-৩০ জনের একটি দল। এ ঘটনায় ১৩ আগষ্ট তাঁর চাচা দবির আলী বাদী হয়ে ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০-১৫ জনকে আসামী করে মামলা করেন। পরবর্তী সময়ে পুলিশ এজাহারনামীয় ছয় আসামীকে গ্রেফতার করলে দুই জন স্বীকারোক্তিমূলক জবান বন্দিও দেয়। জামিনে বের হওয়ার পরে পলাতক থাকায় আবারও ওয়ারেন্ট ভোক্ত হন এজাহার নামীয় ৫ আসামী। ২০১৯ সালের ২৮ মে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অনুপ চৌধুরী। আসামীদের মধ্যে রকিবসহ ছয়জন প্রথম থেকেই পলাতক। বাকি আসামীরা ভিবিন্ন সময়ে গ্রেফতার হলেও বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। এখন চলছে মামলার সাক্ষ্য গ্রহন।

সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সহ-প্রচার সম্পাদক ফয়জুল হক রাজু মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার ১ নম্বর ফতেপুর ইউনিয়নের শাহাপুর গ্রামের ফজর আলীর ছেলে। তিনি সিলেট ল কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০১৮ সালের ১১ আগষ্ট রাতে মোটরসাইকেলে সহপাঠী জাকির হোসেন উজ্জ্বল ও সালাউদ্দিন লিটনকে নিয়ে উপশহর বাসায় ফিরছিলেন। পরে কুমার পাড়া রাইয়ান ফার্মেসির সামনে মোটরসাইকেলের গতি রোধ করে রাজুর উপর হামলা হয়।তাঁকে সেখানেই এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সাথে থাকা উজ্জ্বল সে সময় গুলিবিদ্ধ হন।

ছাত্রদলের স্থানিয় নেতা কর্মীরা জানান, রাজু হত্যার নেপথ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ কোন্দল।সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি গঠন নিয়ে চরম আকার ধারন করে। সে সময় দুই ভাগ হয়ে যায় সিলেট ছাত্রদল। দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া এবং সংঘর্ষ হয়। এ নিয়ে আসামীরা রাজুকে হত্যার হুমকি দেয়। পরে দ্বিতীয়বার মেয়র নির্বাচিত হওয়া আরিফুল হক চৌধুরীর বিজয় মিছিল শেষে ফেরার পথে খুন হন রাজু।

পুলিশ জানায়, ছাত্রদল নেতা রকিবের নেতৃত্বেই হত্যা করা হয় রাজুকে। তাঁর শরীরে চল্লিশটিরও বেশী আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। হত্যাকান্ডে অংশ নেয় ২৬ জন। অভিযোগপত্রে সিলেট সিটি কর্পোরেশনে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৫৫ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

মামলার বাদী দবির আলী  বলেন, আমার এবং আমার পরিবারের অনেক ইচ্ছা ছিলো ভাতিজা বড় আইনজীবী হবে। এর জন্য ল কলেজে ভর্তি করেছিলাম। কিন্তু প্রতিহিংসার রাজনীতির নির্মম শিকার হয় রাজু। ন্যায় বিচারের জন্য আমরা আদালতের দারস্থ হয়েছি।আশা করি বিচারকার্য বিলম্ব হলেও আদালতের মাধ্যমে ন্যায় বিচার পাবো।

এশিয়াবিডি২৪/গৌ/

আরও সংবাদ